হেফাজত নেতা মামুনুল হকের গোপন বিয়ের বিষয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে পুলিশ। পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের জিজ্ঞাসাবাদে মামুনুলের প্রথম বিয়ে শরিয়ত বা আইনসম্মতভাবে হয়েছে, আর পরবর্তী যে দুটি বিয়ের কথা তিনি স্বীকার করেছেন সেগুলো চুক্তিভিত্তিক, কোনো কাবিননামা নেই।
শনিবার (২৪ এপ্রিল) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) যুগ্ম কমিশনার মো. মাহবুব আলম তার কার্যালয়ে হেফাজতে ইসলামের নেতাদের গ্রেপ্তার ও জিজ্ঞাসাবাদ সম্পর্কে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় এ কথা জানান।
সম্প্রতি নাশকতার বিরুদ্ধে হওয়া ১২টি মামলা এবং ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরের ঘটনায় হওয়া ৫৩টিসহ মোট ৬৫টি মামলার তদন্ত করছে ডিবি।
যুগ্ম কমিশনার মো. মাহবুব আলম বলেন, হেফাজত নেতা মামুনুল হকের পরের বিয়ের চুক্তিগুলো হচ্ছে- স্ত্রী থাকবে কিন্তু কোনো মর্যাদা পাবে না। স্ত্রী মেলামেশা করতে পারবে কিন্তু সম্পর্কের কোনো অধিকার পাবে না। একি সঙ্গে কোনো দাবি-দাওয়া বা সন্তান ধারণ করতেও পারবে না। এ ধরনের চুক্তি প্রচলিত আইনের পরিপন্থী বলে জানান তিনি।
২০১৩ সালের আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে মাহবুব আলম বলেন, ‘শাপলা চত্বরে ২০১৩ সালের ৫ মে সরকার পতনের অনেক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে হেফাজতের চক্রান্ত হয়েছিলো। হেফাজতকে কাজে লাগিয়ে সরকার পতনের একটি অপচেষ্টা চালিয়েছিল। এ বছর আবার ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আগমনকে কেন্দ্র করে যে নাশকতা হলো, সেখানে একই ধরনের আরেকটি চক্রান্ত হয়েছে।
হেফাজত নেতাদের মূল উদ্দেশ্য কী- জানতে চাইলে মাহবুব আলম বলেন, তারা আসলে চান সরকার পতনের মাধ্যমে ক্ষমতায় গেলে বাংলাদেশকে পাকিস্তান বা আফগানিস্তান মডেল বানানোর।
তাছাড়া হেফাজতের মধ্যে বেশ কয়েকটি ভাগ আছে বলেও দাবি মাহবুবের। একটি পক্ষে উগ্রবাদের পক্ষে যাদের নাম, সেটা জানার চেষ্টা চলছে। এ নিয়ে গ্রেপ্তারও অব্যাহত আছে।
ডিবির এই কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘লন্ডন থেকে কিছু ওলামা মিথ্যা প্রোপাগাণ্ডা তৈরি করে বলছেন, হেফাজতের নেতাদের এখানে নাকি হিন্দু লোকজন জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। কোরআন নাকি ফেলে দেয়া হয়েছে টয়লেটে। মামুনুল হককে নাকি মারধর করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গত, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের বিরোধিতা করে ঢাকাসহ দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় তাণ্ডব চালায় হেফাজতে ইসলাম। সবচেয়ে বেশি সহিংসতা হয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায়। সরকারি স্থাপনায় টার্গেট করে হামলা চালানো হয়। অগ্নিসংযোগও করা হয়। নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত করে হেফাজতিরা। তাদের আক্রোশ থেকে রক্ষা পায়নি গণমাধ্যমও।