চলমান ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) নিয়ে প্রতিদিন সমালোচনা বাড়ছে। এমনকি বন্ধ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও দেখা দিয়েছে।
অতিমারী করোনার প্রকোপে ভারত যেখানে মহাশ্মশানে পরিনত সেখানো আইপিএল এক মশকরার নাম। এমন সংকটকালীন সময়েও আইপিএল চালু রাখায় আয়োজকদের নিয়ে সর্বস্তরে চলছে বিতর্ক। আর সেই চাপ সহ্য করতে না পেরে শুরু হয়েছে ক্রিকেটারদের নাম প্রত্যাহারের মিছিল। রবীচন্দ্রন অশ্বিন ছাড়াও তিন বিদেশি ক্রিকেটার অ্যাডাম জাম্পা, কেন রিচার্ডসন, অ্যান্ড্রু টাই আছেন এই তালিকায়। গুঞ্জন আছে সব অজি ক্রিকেটারদের নাম প্রত্যাহার করে নেয়ার ব্যাপারে। অথচ এখনও নির্লিপ্ত আয়োজকরা।
তবে এ অবস্থায় কোহলি-রোহিতরাও পালন করছেন নীরব ভূমিকা। আর এতেই চটেছেন অলিম্পিক স্বর্ণজয়ী শ্যুটার অভিনব বিন্দ্রা। বিসিসিআই কেন করোনা আক্রান্তদের আর্থিক সাহার্য্য করছে না সে ব্যাপারেও প্রশ্ন তুলেছেন। ক্রিকেটারদের বধির বলে এক হাত নিয়েছেন বিন্দ্রা।
এর মাঝেই রোববার (২৫ এপ্রিল) মধ্যরাতে সবাইকে চমকে দিয়েছেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন। সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিপক্ষে ম্যাচ শেষ করেই দিল্লির অলরাউন্ডার আইপিএল থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেন। করোনা আক্রান্ত পরিবারের পাশে থাকতেই এমন সিদ্বান্ত নিয়েছেন তিনি। এই অলরাউন্ডারকে সমর্থন দিয়েছে তার দল দিল্লিও। টুইটার অ্যাকাউন্টে নিজের নাম পরিবর্তন করে রাখেন, ‘স্টে হোম স্টে সেইফ-টেক ইউর ভ্যাকসিন’। অশ্বিনের পথে অন্যরাও হাঁটতে পারেন বলে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে।
প্রকাশ্যে কেউ কথা না বললেও ভেতরে ভেতরে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। বিদেশিরা ভীত-সন্ত্রস্ত। ইতোমধ্যে দেশে ফিরে গেছেন রাজস্থানের অস্ট্রেলিয়ান পেসার অ্যান্ড্রো টাই। এবার আইপিএল ছেড়ে যাচ্ছেন বেঙ্গালুরুর বোলার কেন রিচার্ডসন ও অ্যাডাম জাম্পা।
অস্ট্রেলিয়ার অন্যরাও চলে যেতে পারেন বলে হাড়ির খবর ফাঁস করেছেন কলকাতার ব্যাটিং কোচ ডেভিড হাসি। অস্ট্রেলিয় গনমাধ্যম বলছে, স্মিথ-ওয়ার্নার, ম্যাক্সওয়েলরা দেশে ফেরা নিয়ে সরকারের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছে।
অ্যান্ড্রো টাই চলে যাওয়ায় রাজস্থানে আছে শুধু ৪ বিদেশি। ইনজুরিতে জফরা আর্চার, বেন স্টোকস আর মানসিক অবসাদের কারণে লিয়াম লিভিংস্টোন আগেই ভারত ছেড়ে গেছেন। মোস্তাফিজকে তাই প্রতিটা ম্যাচে একাদশে রাখতে বাধ্য ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। আইপিএল চললেও তাই ধীরে ধীরে তৈরী হচ্ছে নানামুখী শঙ্কট।
সবচেয়ে ভয়াবহ খবর হচ্ছে, সংক্রমণের চূড়ায় থাকা দিল্লিতেই বুধবার থেকে শুরু হচ্ছে আইপিএল। অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে ৮ ম্যাচ। তবে ম্যাচগুলো সরিয়ে নেয়ার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে জানিয়েছে দিল্লি ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন।
পাকিস্তানের সাবেক পেসার শোয়েব আক্তার আইপিএল বন্ধ করে সে অর্থ দিয়ে ভারতকে অক্সিজেন কেনার পরামর্শ দিয়েছেন। পাকিস্তান সুপার লিগও (পিএসএল) আয়োজন না করার তাগিদ রাওয়ালপিন্ডি এক্সপ্রেসের।
শেষ পর্যন্ত সব সমালোচনা আর মানবিক আবেদন উপেক্ষা করে আইপিএল চালিয়ে যেতে পারবে তো বিসিসিআই? নাকি বন্ধ হয়ে যাবে আইপিএল? সে প্রশ্নের উত্তর হয়তো মিলবে যে কোন সময়।