করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুর হার বেড়ে যাওয়ায় প্রথমবারের মতো পূর্ণাঙ্গ লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তুরস্ক। আজ বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা থেকে আগামী ১৭ মে পর্যন্ত দেশটিতে লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে।
লকডাউনের ঘোষণায় ইতিমধ্যে ইস্তাম্বুল ছাড়তে কেউ ছুটছেন প্রধান বাস টার্মিনালে। কেউ আবার ‘মদে বিধিনিষেধের’ খবরে অ্যালকোহল মজুতের চেষ্টা করছেন। রাস্তায় মানুষের ভিড় বেড়েছে, ক্রেতা সামলাতে ব্যস্ত বিপণিবিতানগুলো। সঙ্গে রয়েছে সড়কে যানবাহনের চাপ। আজ বৃহস্পতিবার লকডাউন দেওয়ার প্রাক্কালে তুরস্কের চিত্রটা ছিল এমনই।
করোনাভাইরাসের আঘাতে গত বছরও ঠিক এই সময়ে তুরস্ক বৈশ্বিক মহামারির সময় দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে সফল হয়েছিল এবং বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা দেশটির উদ্যোগের প্রশংসাও করেছিল। তবে সেটি এখন সুদূর অতীত। এক বছর পর এই মুহূর্তে তুরস্ক এখন করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর একটি। ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে তুরস্কে করোনার সংক্রমণের হার সর্বাধিক।
এই মুহূর্তে প্রথমবারের মতো পূর্ণাঙ্গ লকডাউনে যাওয়া তুরস্কের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপগুলো এখন আলোচনায় ব্যস্ত লকডাউনের আসন্ন দিনগুলো কীভাবে যাবে, কেমন হবে জীবনযাপন।
লকডাউন চলাকালীন কী কী নতুন বিধিনিষেধ থাকছে?
১. আবশ্যকীয় কেনাকাটা এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জরুরি পরিস্থিতি ছাড়া কেউ বাড়ির বাইরে যেতে পারবে না।
২. এক শহর থেকে অন্য শহরে যেতে হলে সংশ্লিষ্ট
৩. স্কুল বন্ধ থাকবে। গণপরিবহণ চলবে, তবে আসন সংখ্যা নির্দিষ্ট করে দেওয়া থাকবে।
৪. অ্যালকোহল বিক্রি সীমিত থাকবে।
তবে কিছু কিছু ব্যবসার ক্ষেত্রে এসব নতুন বিধিনিষেধ প্রযোজ্য হবে না।
এদিকে, নতুন করে লকডাউন দেওয়ার সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। তারা বলছেন, এই লকডাউনের দরকার আছে। আবার লকডাউনের বিরোধিতাও করছেন কেউ কেউ। তাদের ভাষ্য, সংক্রমণ বৃদ্ধি প্রতিরোধে এই লকডাউন বেশিদিন টিকবে না।
লকডাউনের বিরোধিতাকারীদের যুক্তি- দ্রুততার সঙ্গে টিকাকরণ কার্যক্রম চালানো না গেলে এই লকডাউন খুব বেশি কাজে আসবে না। এ ছাড়া লকডাউন বা এ ধরনের যেকোনো পদক্ষেপ নিলে স্বল্প-আয়ের মানুষের জন্য আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা থাকা উচিত বলে তারা মনে করেন।
তুরস্কে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ৪৭ লাখ ৫১ হাজারের বেশি আর মারা গেছেন ৩৯ হাজারেরও বেশি।