চলতি ২০২১-২২ চা নিলাম বর্ষের প্রথম নিলাম চট্টগ্রাম কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত হবে আজ (৩ মে)। এবার চট্টগ্রাম চা নিলাম কেন্দ্রে ৪৭টি ও শ্রীমঙ্গলে ২২টি নিলাম হবে। পরবর্তীতে চায়ের উৎপাদন ও সরবরাহের সাথে সামঞ্জস্য রেখে প্রয়োজনানুযায়ী নিলাম সংখ্যা বাড়ানো বা কমানো হবে। চট্টগ্রামের পরে ৫ মে হবে শ্রীমঙ্গল চা নিলাম কেন্দ্রের নিলাম।
জানা যায়, বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. জহিরুল ইসলাম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গতবারের মতো এইবারও যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে নিম্নোক্ত নির্দেশনাসমূহ অনুসরণপূর্বক চা নিলাম কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য টিটিএবি ও টিপিটিএবিকে নির্দেশনা প্রদান করেন।
নির্দেশনা সমূহ হলো,
ক) নিলাম কেন্দ্র, ব্রোকার হাউজ এবং ওয়্যারহাউজে হাত ধৌত করার জন্য সাবান/সেনিটাইজার, মাস্ক ও হ্যান্ড গ্লাভসের ব্যবহার নিশ্চিত করাসহ সরকার কর্তৃক জারীকৃত সকল নির্দেশনা ও স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে। সবাইকে জীবাণুমুক্ত হয়ে নিলাম কেন্দ্রে প্রবেশ করতে হবে;
খ) অকশন হাউজটি নিলাম শুরুর পূর্বে ও পরে জীবাণুনাশক স্প্রে করার মাধ্যমে পরিশোধন করে নিতে হবে;
গ) নিলাম কেন্দ্রে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ন্যূনতম ৭ ফুট পর পর বসার ব্যবস্থা করতে হবে। এতে বিদ্যমান নিলাম কেন্দ্রে সকলের জন্য জায়গা সংকুলান না হলে কোনো বড় হলরুমে নিলাম কেন্দ্র শিফট করতে হবে।
ঘ) নিলাম চলাকালে নিলাম কেন্দ্রে শুধুমাত্র অপরিহার্য জনবলের উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে। এছাড়া তিনি দ্রুত অনলাইন চা নিলাম সিস্টেম পরিপূর্ণরূপে চালু করার বিষয়েও নির্দেশনা প্রদান করেন।
এরআগে গত ১৫ মার্চ চট্টগ্রাম চা নিলাম কেন্দ্রের ২০২০-২১ নিলামবর্ষের সর্বশেষ নিলামটির একাংশ অনলাইন চা নিলাম সিস্টেমের মাধ্যমে চা বোর্ডের সদস্য (অর্থ ও বাণিজ্য) ড. নাজনীন কাউসার চৌধুরীর উপস্থিতিতে পরীক্ষামূলকভাবে পরিচালিত হয়েছে। ২০২০-২১ চা নিলামবর্ষে চট্টগ্রাম চা নিলাম কেন্দ্রে ৪২টি এবং শ্রীমঙ্গলে ২০টি নিলাম অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সম্প্রতি বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. জহিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে জুম অ্যাপ্লিকেশনের মাধ্যমে টি সেলস কো-অর্ডিনেশন কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদা ও ট্রেন্ড বিবেচনায় এনে গুণগত মানসম্পন্ন ও বৈচিত্র্যপূর্ণ চা উৎপাদন করা এবং উন্নত, আকর্ষনীয় ও আন্তর্জাতিক মানের চায়ের প্যাকেজিং ব্যবহার করার উপর গুরুত্বারোপ করেন।
এ বিষয়ে বোর্ডের সদস্য (অর্থ ও বাণিজ্য) ড. নাজনীন কাউসার চৌধুরী (যুগ্মসচিব) বলেন, ‘চা রফতানিকে বেগবান করতে চা বোর্ড সম্প্রতি বিবিধ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। চা ক্রয়ের ১৮০ দিনের মধ্যে চা রফতানি করার যে বাধ্যবাধকতা ছিলো, তা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাথে পত্রালাপের মাধ্যমে শিথিল করা হয়েছে। চা রফতানিকারকগণকে নগদ ভর্তুকি ও প্রণোদনা প্রদানের জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক বাজারের চাহিদার সাথে সামঞ্জস্য রেখে বাংলাদেশী চায়ের গুণগত মান বজায় রাখার জন্য উৎপাদক ও রফতানিকারকদের প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে এবং বিষয়টি চা বোর্ড হতে নিয়মিত মনিটরিং করা হচ্ছে।’
এদিকে প্রথমবারের মতো আগামী ৪ জুন উদযাপন করা হবে জাতীয় চা দিবস। জাতীয় চা দিবসে কেন্দ্রীয়ভাবে চা দিবস উদযাপনের পাশাপাশি একযোগে চা উৎপাদনকারী তিনটি অঞ্চল, সিলেট, চট্টগ্রাম এবং উত্তরাঞ্চলেও চা দিবস উদযাপন করা হবে। চা চাষ ও চা ব্যবসাকে উৎসাহিত করার জন্য বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে চা উৎপাদক, রফতানিকারক ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুরস্কৃত করা হবে। এছাড়া চা দিবস আয়োজনের বিভিন্ন পরিকল্পনা বাস্তবায়নের ব্যাপারে সরকারের বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে চা বোর্ড কাজ করে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘৪ জুন তারিখটি চা শিল্পের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ১৯৫৭ সালের এ দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম বাঙালি চেয়ারম্যান হিসেবে চা বোর্ডের দায়িত্ব নেন। এ দিনটি স্মরণীয় করে রাখার জন্য ৪ জুন তারিখকে জাতীয় চা দিবস হিসেবে সরকার ঘোষণা করেছে।
উল্লেখ্য, গত ১৫ মার্চ ২০২০-২১ নিলাম বর্ষের সর্বশেষ নিলামের (৪২তম) আংশিক নিলাম কার্যক্রম অনলাইন চা নিলাম সিস্টেমে পরিচালিত হয়েছে। নগরের আগ্রাবাদের চট্টগ্রাম চা নিলাম কেন্দ্রে এই নিলাম অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিক্রি হয়েছে ১২ হাজার কেজি চা। নিলামে ন্যাশনাল ব্রোকারের মাধ্যমে মির্জাপুর বাগানের চা প্রথম বিক্রি হয়। ইস্পাহানী টি লিমিটেডে ৩১২ টাকা কেজিতে প্রথম লট কেনে। প্রায় ২৫ জন বিডার অনলাইন নিলামে অংশ নেন।