প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর অধীনে আগামী জুন মাসে দ্বিতীয় ধাপে আধা-পাকা বাড়ি পাচ্ছে প্রায় ৫৩ হাজার গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবার। সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে এক বৈঠকে আগামী জুন মাসের শুরু থেকে দ্বিতীয় ধাপে নির্মিত বাড়িগুলো বিতরণ শুরু করার পরিকল্পনা হয়।
এর আগে প্রথম ধাপে গত জানুয়ারি মাসে মুজিব বর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপহার হিসেবে বাড়ি পেয়েছে প্রায় ৭০ হাজার গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবার।
দ্বিতীয় ধাপে মোট ৫৩ হাজার ৪৩৪টি বাড়ি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারকে দেওয়া হবে। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে সাত হাজার ২৮০টি বাড়ি, ময়মনসিংহ বিভাগে দুই হাজার ৫১২টি, চট্টগ্রাম বিভাগে ১০ হাজার ৫৬২টি, রংপুর বিভাগে ১২ হাজার ৩৯১টি, রাজশাহী বিভাগে সাত হাজার ১৭২টি, খুলনা বিভাগে তিন হাজার ৯১১টি, বরিশাল বিভাগে সাত হাজার ৬২৭টি এবং সিলেট বিভাগে এক হাজার ৯৭৯টি বাড়ি দেওয়া হবে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের।
আগামী বছর সরকার গৃহহীন ও ভূমিহীনদের মধ্যে আরও এক লাখ ২৫ হাজার বাড়ি বিতরণ করবে। বর্তমানে দ্বিতীয় ধাপের বাড়িগুলো নির্মাণের পাশাপাশি আগামী বছর যে এক লাখ ২৫ হাজার বাড়ি দেবে সরকার, সেগুলো নির্মাণে এখন থেকে প্রস্তুতি নিতে বলা হয় মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের।
আশ্রয়ণ প্রকল্প-২-এর অধীনে বাড়ি নির্মাণ কার্যক্রমের অগ্রগতি নিয়ে অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস। বৈঠকে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনে কাজের অগ্রগতি তুলে ধরেন আশ্রয়ণ-২ প্রকল্প পরিচালক মো. মাহবুব হোসেন। বৈঠকে সব বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন।
বৈঠকে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের কোনো রকম ব্যত্যয় ছাড়া গুণগত মান ঠিক রাখার পাশাপাশি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
বাড়ির গুণগত মান নিশ্চিত করতে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, গুণগত মানের বিষয়ে কোনো আপস করা হবে না। যদি কোনো ব্যত্যয় পাওয়া যায় আমরা জিরো টলারেন্স দেখাব। কোনো ব্যত্যয় সহ্য করা হবে না। এই বিষয়টিকে হালকাভাবে নেবেন না। আমরা কাউকে এই উদ্যোগের সুনাম নষ্ট করতে দেব না।
মুখ্য সচিব বলেন, গৃহহীন ও ভূমিহীনদের মানুষের জন্য বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া, প্রধানমন্ত্রীর এ কর্মসূচি পৃথিবীতে বিরল মডেল। অসহায় মানুষের জন্য বাড়ি নির্মাণ করে দেওয়া এ কর্মসূচির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আবেগ মিশে আছে। তিনি প্রতিনিয়ত এর খোঁজ-খবর রাখেন।
সভায় আশ্রয়ণ প্রকল্পে উপকারভোগীদের একটি ডাটাবেজ তৈরি করতে বলেন আহমদ কায়কাউস। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বর্তমান নির্মাণ কাজের পাশাপাশি আগামী বছর সরকার যে এক লাখ ২৫ হাজার বাড়ি দেবে তার কাজ এগিয়ে রাখতে এবং প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিতে বলেন।
কাজে কোনো অসঙ্গতি হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও সংশ্লিষ্টদের সর্তক করেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া।