টাউন মসজিদ রাজবাড়ী। বর্তমানে বড় মসজিদ খানকা শরীফ নামে পরিচিত। জেলা শহরের প্রাণকেন্দ্র পৌরসভা কার্যালয়ের সামনে অবস্থিত। ১৮২০ থেকে ১৮৩০ সালের মধ্যে মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত হয়।
১৮৯২ সালে রসুল (সঃ) এর বংশধর হযরত সৈয়দ শাহ মুরশিদ আলী আল কাদেরী প্রথম রাজবাড়ীর টাউন মসজিদে অবস্থান নেন। তখন মসজিদটি দ্বোচালা ছনের ছিল। ওই সময় মহকুমার সাব রেজিস্ট্রার এনামুল কবিরসহ ৩ জন তার কাছে মুরিদান গ্রহণ করেন। তখন থেকে আস্তে আস্তে টাউন মসজিদ থেকে রাজবাড়ী বড় মসজিদ খানকা শরীফ নামকরণ হয় মসজিদটির। এখানে হুজুরা শরীফ, খানকা শরীফ, অতিথিদের থাকাসহ বিভিন্ন ব্যবস্থা রয়েছে।
বতর্মানে মসজিদটি সাজানো ও পরিপাটি। জেলার সবচেয়ে সুন্দর ও মর্যাদাপূর্ণ মসজিদ বলেও ধারণা কাদেরীয়া তরিকার মুরিদান এবং বিভিন্ন ধর্মের মানুষের। অসুখ-বিসুখসহ বিভিন্ন কারণে মানত করে অনেকেই আসেন এই মসজিদে, করেন দান-ছদগা।
এখানে একসঙ্গে প্রায় দুই থেকে আড়াই হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। নামাজ আদায় ও ইবাদতের জন্য নারী ও পুরুষের জন্য রয়েছে আলাদা স্থান। বর্তমানে আঞ্জুমান-ই-কাদেরীয়া (সংগঠন) মসজিদটি পরিচালনা করেন। যার সভাপতি কাজী ইরাদত আলী ও সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল আজিজ খোকন কাদেরী। বর্তমানে সারাদেশে এর ১৮টি শাখা রয়েছে।
হযরত সৈয়দ শাহ মুরশিদ আলী আল কাদেরীর পরবর্তী বংশধরের অনেকে গদীনশীন হয়ে রাজবাড়ীতে এসে এ তরিকার অনুসারীদের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। সবশেষ ২০১২ সালে বর্তমান বড় হুজুর রসুলে পাক (সঃ) এর ৩৫তম বংশধর রাজবাড়ীতে আসেন।
১৯০১ সালে হযরত সৈয়দ শাহ মুরশিদ আলী আল কাদেরী মৃত্যুবরণ করলে ১৯০২ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মেদিনীপুরে ১৭ ফেব্রুয়ারি (৪ ফাল্গুন) প্রথম বাৎসরিক ওরশ শরীফ অনুষ্ঠিত হয়। এরপর থেকে প্রতিবছর অর্থাৎ এখন পর্যন্ত ১১৯তম ওরশ শরীফ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আর প্রতিবছর ওরশ শরীফ উপলক্ষে ভারত বাংলাদেশ সরকারের যৌথ আয়োজনে রাজবাড়ী থেকে একমাত্র ওরশ স্পেশাল ট্রেন ভারতের মেদিনীপুরে যায়।