সোমবার (১০ মে) সকাল ১০টা। হাজারও ঘরমুখো মানুষের উপস্থিতিতে তিল ধারণের ঠাঁই নেই মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়ার ৩ নম্বর ফেরিঘাটে। এরমধ্যে একটি ডাম্প ফেরি যমুনা ২ নম্বর ঘাটের পন্টুন নোঙর করে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে বাংলাবাজারের উদ্দেশে যাওয়ার জন্য। দেখা মাত্রই হাজার হাজার যাত্রী ৩ নম্বর ফেরিঘাট থেকে ছুটে যায় ২ নম্বর ঘাটে। মুহূর্তে সে ঘাটে তৈরি হয় যাত্রীদের প্রচণ্ড ভিড়।
এ সময় পন্টুনের অ্যাপ্রোচ দিয়ে বাকি যাত্রীদের সঙ্গে ফেরিতে ওঠার চেষ্টা করছিলেন এক বৃদ্ধ যাত্রী। অ্যাপ্রোচ ধরে কিছুটা এগোলেও পেছনের যাত্রীদের ধাক্কায় একপর্যায় পড়ে যান তিনি। এ পরিস্থিতিতে তাকে পদদলিত করেই এগিয়ে যেতে দেখা যায় পেছনে থাকা যাত্রীদের।
অদূরে প্রত্যক্ষদর্শী এক ফটো সাংবাদিকসহ কয়েকজন যাত্রী জানান, পেছন থেকে ধাক্কা-ধাক্কির কারণে ওই বৃদ্ধ পড়ে যান। এ সময় কয়েকজন তাকে পদদলিত করে সামনে এগিয়ে যান। তবে শেষপর্যন্ত কালো শার্ট পরিহিত একজন যাত্রী তাকে তুলে সঙ্গে নিয়ে ফেরিতে ওঠান। তবে ওই বৃদ্ধ ব্যক্তি ঠিকমতো দাঁড়াতে পারছিলেন না।
সরজমিনে গিয়ে জানা যায়, শুধু এই একটি দুটি নয়, গত কয়েকদিনের ঘরমুখো যাত্রীদের হুড়োহুড়িতে শিমুলিয়াঘাটে এমন চিত্র আরও বেশ কয়েকটি দেখা গেছে। এতে আহত হচ্ছে কেউ কেউ। শনিবার (৮ মে) দুপুর ১২টার দিকে ফেরি শাহ-পরাণে ওঠার সময়ও গাদাগাদিতে পড়ে যান বেশ কয়েকজন যাত্রী।
ঘাট এলাকার দোকানদার ফয়জুল হোসেন জানান, বেশি যাত্রী যেই ফেরিতে উঠতে যায় ওমনি লাগে ভিড়। সবাই চায় আগে উঠতে। ইদানিং এমন পইড়া যাওয়ার অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছে।
এদিকে, সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক করে কর্তৃপক্ষ। সন্ধ্যা পর্যন্ত মোট ১২টি ফেরি শিমুলিয়া থেকে বাংলাবাজারের উদ্দেশে ছেড়ে গেছে বলে মাওয়া ট্রাফিক পুলিশ সূত্রে জানা যায়।
মাওয়া ট্রাফিক পুলিশের ইনচার্জ হিলাল উদ্দিন জানান, বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে ফেরি স্বাভাবিক ভাবে চালু করা হয়। এ সময় কোনো ছোট গাড়ি ছিল না। সব পণ্যবাহী যানবাহন পার করা হয়েছে।
বিআইডাব্লিউটিসির শিমুলিয়াঘাটে ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) সাফায়েত আহমেদ জানান, লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স পার করার জন্য ফেরি ঘাটে ভিড়তেই উপস্থিত যাত্রীরা ফেরিতে উঠে পড়েন। এ অবস্থায় যাত্রীদের নিয়েই সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৩টি ফেরি বাংলাবাজারের দিকে ছেড়ে যায়। এরপর শিমুলিয়া ঘাট এলাকায় যাত্রী চাপ কমে আসে।