বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাসের বিরূপ পরিস্থিতিতেও রেমিট্যান্সের প্রবাহ অব্যাহত রেখেছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
বাংলাদেশ ব্যাংক গতকাল মঙ্গলবার (১১ মে) জানিয়েছে, মে মাসের প্রথম ৯ দিনেই প্রবাসীরা ৯১ কোটি ৯০ লাখ ডলার দেশে পাঠিয়েছেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকা।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশে ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম বলেন, করোনার মধ্যেও প্রবাসীরা রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। চলতি মে মাসের প্রথম ৯ দিনেই তারা ৯১ কোটি ৯০ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘সব সময় ঈদের আগে প্রবাসী বাংলাদেশিরা দেশে বেশি পরিমাণ রেমিট্যান্স পাঠিয়ে থাকেন, যেন তাদের আত্মীয়-স্বজনরা দেশে স্বাচ্ছন্দ্যে ঈদ উদযাপন করতে পারেন। এবার তার ব্যতিক্রম হয়নি।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, গেল এপ্রিল মাসে প্রবাসী বাংলাদেশিরা ২০৬ কোটি ৭০ লাখ মার্কিন ডলার (২ দশমিক ০৬ বিলিয়ন) রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ ১৭ হাজার ৫৬৯ কোটি টাকা।
যা আগের বছরের একই মাসের চেয়ে প্রায় ৯০ শতাংশ বেশি। গেল বছর এপ্রিলে দেশে রেমিট্যান্স এসেছিল ১০৯ কোটি ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বলছে, চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই-এপ্রিল) দেশে আসা রেমিট্যান্সের পরিমাণ ২ হাজার ৬৭ কোটি (২০ বিলিয়ন) ডলারের মাইলফলক অতিক্রম করেছে। এর মধ্যে সিংহভাগ রেমিট্যান্স আসছে ১০টি দেশ থেকে।
গেল ১০ মাসে মোট আহরিত রেমিট্যান্সের প্রায় ৮৯ শতাংশই পাঠিয়েছেন এসব দেশের প্রবাসীরা। দেশগুলোর মধ্য রয়েছে- বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শ্রমবাজার সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, যুক্তরাজ্য, কুয়েত, ওমান, কাতার, ইতালি ও সিঙ্গাপুর।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯-২০ অর্থবছরে প্রবাসীরা ১ হাজার ৮২০ কোটি ডলার বা ১৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিল। অর্থবছর হিসাবে যা ছিল দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আহরণের রেকর্ড। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরেও দেশে ১ হাজার ৬৪২ কোটি ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল।
২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে সরকার প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে ২ শতাংশ হারে প্রণোদনা দিচ্ছে। অর্থাৎ কোনও প্রবাসী দেশে ১০০ টাকা পাঠালে তার সঙ্গে আরও ২ টাকা যোগ করে সুবিধাভোগীদের ১০২ টাকা দেয়া হচ্ছে।