২০০২ সালে সাতক্ষীরার কলারোয়ায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় নিম্ন আদালতে সাজাপ্রাপ্ত ৭ আসামিকে হাইকোর্টের দেয়া ৪ মাসের জামিন আদেশ স্থগিত করে চেম্বার আদালত যে আদেশ দিয়েছেন, তা বহাল রেখেছেন আপিল বিভাগ।
রবিবার (৩০ মে) প্রধান বিচারপতিসহ ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ জামিনের ওপর এ স্থগিতাদেশ দেন।
একইসঙ্গে আগামী ২০ জুন পর্যন্ত জামিন স্থগিত করে এ সময়ের মধ্যে লিভ টু আপিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
এর আগে গত ২৫ মে বিচারিক আদালতে সাজাপ্রাপ্ত এই ৭ আসামিকে ৪ মাসের জামিন দেন বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ। আদেশে এ সময়ের মধ্যে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আসামিদের করা আপিল নিষ্পত্তি করতে বলা হয়। এরপর হাইকোর্টের ওই আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ।
এরপর গত ২৭ মে চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদালত হাইকোর্টের দেয়া ওই ৭ জনের জামিন স্থগিত করে আদেশ দেন।
জামিন স্থগিত হওয়া ৭ আসামি হলেন- সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার, গোলাম রসুল, আব্দুস সামাদ, জহিরুল ইসলাম, রাকিব, শাহাবুদ্দিন ও মনিরুল ইসলাম।
এদিন আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর। অন্যদিকে আসামিপক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।
২০০২ সালের ৩০ আগস্ট ধর্ষণের শিকার এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখতে সাতক্ষীরার কলারোয়ায় যান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। সড়কপথে ঢাকায় ফেরার পথে কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার ঘটনা ঘটে। তখন শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। বোমা বিস্ফোরণ ও গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাও ঘটে। এতে শেখ হাসিনা প্রাণে বাঁচলেও বহলে থাকা অনেকেই গুরুতর আহত হন।
এ ঘটনায় থানায় মামলা না নেয়ায় ওই বছরের ২ সেপ্টেম্বর কলারোয়া মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেমউদ্দিন বাদী হয়ে যুবদল নেতা আশরাফ হোসেন, আব্দুল কাদের বাচ্চুসহ ২৭ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৭০/৭৫ জনকে আসামি করে আদালতে মামলা দায়ের করেন।
হাইকোর্টের নির্দেশে ২০১৪ সালের ১৫ অক্টোবর মামলাটি এজাহার হিসেবে গণ্য করা হয়। ২০১৫ সালে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক শফিকুর রহমান ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে আদালতে চার্জশিট দেন।