তারকাদের নিয়ে ট্রোলিং যেন শেষ হওয়ার না সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। পেশাগত বা ব্যক্তিগত জীবন সবেতেই কৌতূহলী নজর নেটাগরিকদের। আর সেখানে তাদের মনমতো কিছু না হলেই ধেয়ে আসে আক্রমণ। এমনকি অভিনেতা অভিনেত্রীরা কি পোশাক পরবেন সেটাও ঠিক করে দেন তারা।
সম্প্রতি তাদের নিশানায় এসেছেন অভিনেত্রী ঊষসী রায়। সামাজিক মাধ্যমে মাঝে মধ্যইে ফটোশুটের ছবি শেয়ার করে থাকেন কলকাতার এ টিভি অভিনেত্রী। তার একটি সাম্প্রতিক ছবি নিয়েই বেঁধেছে গণ্ডগোল। ডেনিম হটপ্যান্ট ও কমলা রঙের ক্রপ টপ পরে ক্যামেরাবন্দি হয়েছেন তিনি। এই ছবিতেই এসেছে একের পর এক কটাক্ষ।
এ প্রসঙ্গে ঊষসী বলেন, আমার আত্মীয়-বন্ধুরা একের পর এক মেসেজ করে চলেছেন। ‘কী ব্যাপার? কী হয়েছে রে’? কিন্তু সবাই কি ভুলে গেলেন, আক্রমণ করা হয়েছে এক নারীকে। তার পোশাকের পছন্দ-অপছন্দের উপর ভিত্তি করে। তার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নিয়ে। তার পরেও প্রশ্নটা শুনতে হচ্ছে আমায়! আমি আমার সমস্ত পরিজনদের উদ্দেশে বলতে চাই, কী হচ্ছে, সেটা আমায় জিজ্ঞেস না করে, তাদের আচরণের প্রতিবাদ করুন, যারা আমার সম্পর্কে অশ্লীল মন্তব্য করেছেন।
তিনি বলেন, আমার মনে হয়, পরিচিত হোন বা অপরিচিত, কোনো নারীকে অপমান করা হলে সবার উচিত এক জোটে প্রতিবাদ করা। আমি কেবল নিজের কথা বলছি না। সমস্ত নারীর হয়েই কথা বলছি।
অভিনেত্রী বলেন, রোববার (৩০ মে) আমি একটি ছবি দিয়েছিলাম। নিজের পছন্দের পোশাক পরা ছবি। সেখানে একের পর এক অশ্লীল মন্তব্য ভিড় জমায়। সচরাচর আমি চোখ এড়িয়ে যাই। কারণ, মানুষের মানসিকতা তো আর বদলাতে পারব না। তাই চুপ করে থাকাই শ্রেয়। পাত্তা না দেওয়াই একমাত্র উপায় বলে মনে করি আমি। কিন্তু সে বিষয়ে খবর প্রকাশ পাওয়ার পরেই আমি কলম ধরার সিদ্ধন্ত নিলাম।
ঊষসী বলেন, না, আমার হাতে কোনো অস্ত্র নেই, যা দিয়ে এই মানুষগুলোর মুখ বন্ধ করা যায়। তবে নিজের প্রোফাইলের মন্তব্য বাক্সকে নিষ্ক্রিয় করে রাখার বিষয়টি আমার মাথায় আসেনি, তা নয়। কিন্তু মাঝে মধ্যে মনে হয়, কয়েকটা মানুষের নেতিবাচকতার দায় আমার অন্য হাজার অনুরাগীর ঘাড়ে কেন ফেলব? ধরা যাক, ৪০০টা মন্তব্য করা হয়েছে আমার ছবির নিচে, তার মধ্যে ৫০টা মন্তব্যে চোখ রাখা যায় না। কিন্তু বাকি ৩৫০ জন মানুষ আমাকে ভালোবাসা জানিয়েছেন। যা আমার মন ভালো করায়। এমনকি তাদের মধ্যে কিছু মানুষ অশ্লীল আচরণের প্রতিবাদ জানান। সেই অনুরাগীদের জন্য আজ পর্যন্ত সেই সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি। দ্বিতীয় আর একটি পথ রয়েছে। বলিউডের কয়েকজন অভিনেত্রী ও অভিনেতা এক জোট হয়ে অনলাইন হেনস্থার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন আবেদন জমা দিয়ে। কিন্তু সে প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ। তবে এই ইন্ডাস্ট্রির কেউ যদি সে রকম পদক্ষেপ নিতে চান, আমি সবার আগে হাজির হব।