১৫৯ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দায়ের করা দুর্নীতির মামলায় ফারমার্স ব্যাংকের অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতীর ছেলে ব্যাংটির সাবেক পরিচালক রাশেদুল হক চিশতীর জামিন বাতিল করে দ্রুত বিচার নিষ্পত্তি করতে বিচারিক আদালতকে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
মঙ্গলবার (১ জুন) প্রধান বিচারপতিসহ ৫ বিচারপতির আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এদিন আদালতে রাশেদুল হক চিশতীর পক্ষে শুনানি করেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ এফ হাসান আরিফ। দুদকের পক্ষে ছিলেন খুরশীদ আলম খান। আর রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ।
শুনানি শেষে খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘রাশেদুল হক চিশতীর জামিন-সংক্রান্ত হাইকোর্টের আদেশ বাতিল করে দিয়েছেন আপিল বিভাগ। তার জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। একইসঙ্গে বিচারিক আদালতকে দ্রুত বিচার শেষ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। এ আদেশের ফলে তাকে জেলেই থাকতে হচ্ছে।’
গত ২৭ মে এ মামলার শুনানির সময় বাবুল চিশতীকেই মূল অপরাধী হিসেবে মন্তব্য করেছিলেন আপিল বিভাগ।
ওইদিন আদলত বলেছিল, মামলার নথি অনুযায়ী মাহবুবুল হক চিশতী ওরফে বাবুল চিশতীই মূল অপরাধী। অপরাধ কার্যক্রমে তিনি তার পুরো পরিবারের সদস্যদের ব্যবহার করেছেন। পুরো পরিবারই অপরাধকাজে জড়িত।
ফারমার্স ব্যাংকের অডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতী নিজেও এ মামলার আসামি। বাবা-ছেলে দুজনেই এখন কারাগারে আছেন।
রাশেদুল হক চিশতীকে গত ২৬ জানুয়ারি জামিন দেন হাইকোট। তবে এ আদেশ স্থগিত চেয়ে আপিল করে দুদক। এরপর গত ১ ফেব্রুয়ারি রাশেদ চিশতীকে হাইকোর্টের দেয়ার জামিন স্থগিত করেন চেম্বার বিচারপতি।
গেল বছরের ১৯ মে রাশেদ চিশতীতে তিনটি মামলায় বিচারিক আদালত জামিন দিয়েছিল। পরে জামিন স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করে দুর্নীতি দমন কমিশন।
২০১৮ সালের ১০ এপ্রিল ফারমার্স ব্যাংকের ১৫৯ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় করা মামলায় ব্যাংকটির নিরীক্ষা কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতীসহ (বাবুল চিশতী), মাহবুবুল হক চিশতীর স্ত্রী রুজী চিশতী, ছেলে রাশেদুল হক চিশতী, ফারমার্স ব্যাংকের চাকরিচ্যুত এসভিপি জিয়া উদ্দিন আহমেদ ও চাকরিচ্যুত ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট মুহাম্মদ মাসুদুর রহমান খানের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। পরের পর ২০১৯ সালের ১৭ অক্টোবর তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র অনুমোদন দেয় কমিশন।
মামলায় আসামির বিরুদ্ধে ১৫৯ কোটি ৯৫ লাখ ৪৯ হাজার ৬৪২ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। এ মামলায় গ্রেফতারের পর বাবুল চিশতী ও রাশেদ চিশতী কারাগারে আছেন।