রাজধানী এয়ারকেয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার বিধিনিষেধ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
সোমবার (৩১ মে) সকালে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের স্মরণে এক আলোকচিত্র প্রদর্শনী অনুষ্ঠানে তিনি এ দাবি জানান।
নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘খালেদা জিয়া অসুস্থ। বাংলাদেশের যেকোনও মানুষের মতো এবং অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের মতোই তাঁকেও চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনে দেশের বাইরে যাওয়ার সুযোগ দেয়া উচিত। এব্যাপারে যে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে, সেটা যেন অবিলম্বে প্রত্যাহার করা হয়।’
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী সামাজিক সাংস্কৃতিক সংস্থা জাসাসের উদ্যোগে জিয়াউর রহমানের ৪০তম শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আলোকচিত্র প্রদর্শনীর এ অনুষ্ঠান হয়।
এসময় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্সসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ১১ এপ্রিল খালেদা জিয়ার করোনা শনাক্ত হয়। এরপর থেকে গুলশানের বাসা ফিরোজা’য় তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এফ এম সিদ্দিকীর নেতৃত্বে চিকিৎসা শুরু হয়। করোনায় আক্রান্তের ১৪ দিন অতিক্রান্ত হওয়ার পর দ্বিতীয়বার খালেদা জিয়ার করোনা টেস্ট করা হয়। কিন্তু আবারও ফলাফল পজিটিভ আসে।
গত ২৭ এপ্রিল রাতে তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরদিন খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য ১০ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়।
শ্বাসকষ্ট বেড়ে যাওয়ায় গত ৩ মে খালেদা জিয়াকে হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে এভারকেয়ার হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন আছেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
এরইমধ্যে গত ৮ মে বেগম জিয়ার করোনার তৃতীয় নমুনা পরীক্ষার রিপোর্ট ‘নেগেটিভ’ আসে।
৭৫ বছর বয়সী বিএনপি চেয়ারপারসন দুর্নীতির দুই মামলায় দণ্ডিত। প্রায় আড়াই বছর কারাভোগের পর দেশে করোনা পরিস্থিতি ও বয়স বিবেচনায় গত বছরের ২৫ মার্চ সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে সরকার। এরপর থেকেই তিনি গুলশানের বাসা ফিরোজা’য় ছিলেন। সাজা স্থগিতাদেশ এরইমধ্যে দুই দফায় বাড়ানো হয়েছে।
২০১৭ সালের ১৮ অক্টোবর বিদেশে তিন মাসের চিকিৎসা শেষে ফিরেছিলেন খালেদা জিয়া। এরপর তাঁর আর বিদেশে যাওয়া হয়নি। এবার করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য বেগম জিয়াকে বিদেশে নেয়ার আবেদন জানালেও শেষ পর্যন্ত তাতে সাড়া দেয়নি সরকার।