চীনে সন্তান জন্মের হার উদ্বেকজনকভাবে কমেছে। তাই দেশটির সরকার প্রত্যেক দম্পতিকে তিন সন্তান নেয়ার অনুমতি দিয়েছে। এমনটাই জানিয়েছে দেশটির সরকারি সংবাদমাধ্যম সিনহুয়া।
সোমবার (৩১ মে) চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংয়ের সভাপতিত্বে কমিউনিস্ট পার্টির পলিটব্যুরোর বৈঠকের টর এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।
দেশটির ধুঁকতে থাকা জন্মহারকে পুনরুদ্ধার করতেই এই সিদ্ধান্ত। একই সঙ্গে চীনের জনসংখ্যায় ক্রমশ বাড়তে থাকা গড় বয়সকে রুখতে এই পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।
দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদসংস্থা জিনহুয়া জানিয়েছে, দম্পতিদের তিন সন্তানের অনুমতি ও তার সঙ্গে জড়িত বিভিন্ন সহায়তা নীতি কার্যকর হওয়ার ফলে দেশের জনসংখ্যার কাঠামো উন্নত হবে।
কবে থেকে এই নতুন নিয়ম কার্যকর হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। তবে, সোমবারের বৈঠকে আগামী পাঁচ বছরের জন্য বেশ কিছু নীতি সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
দেশটির ক্রমবর্ধমান জনসংখ্য়া নিয়ন্ত্রণ করতে দীর্ঘদিন কঠোর অবস্থানে ছিল চীন সরকার। দীর্ঘদিন সেদেশে দম্পতি-প্রতি এক সন্তানের নিয়ম ছিল। ২০১৬ সালে তা বাড়িয়ে ২ করা হয়। কিন্তু, তাতেও, নিম্নমুখী জন্মের হারে তেমন উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন না আসায় এখন বাধ্য হয়ে তিন সন্তানের অনুমতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিল বেইজিং প্রশাসন।
চীনে এক দশকের মধ্যে একবার হওয়া আদমশুমারির সম্প্রতি প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল এ দেশটিতে জন্মহার অনেক কমে গেছে। এ প্রবণতা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে জনসংখ্যা হ্রাস পেতে পারে। এমন আশঙ্কায় দম্পতিদের তিনটি সন্তান জন্মদানের অনুমতি দিলো সরকার।
মে মাসের শুরুর দিকে চীনের আদমশুমারির প্রকাশিত ফলাফলে দেখা যায়, গেল বছর দেশটিতে প্রায় ১ কোটি ২০ লাখ শিশুর জন্ম হয়েছে, আর ২০১৬ সালে এক বছরে ১ কোটি ৮০ লাখ শিশুর জন্ম হয়েছিল।
ষাটের দশকের পর থেকে চীনে শিশু জন্মের এবারের হার সবচেয়ে কম। এরপরই দেশটিতে পরিবার পরিকল্পনা নীতি শিথিল হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়।
জনসংখ্যা বৃদ্ধির লাগাম টেনে ধরার লক্ষ্যে চীনে ১৯৭৯ সালে ‘এক সন্তান নীতি’ চালু করা হয়। তারপর থেকে এ নীতি লঙ্ঘন করা পরিবারগুলোকে জরিমানা, চাকরি হারানো কিংবা কখনও কখনও জোরপূর্বক গর্ভপাতের শিকারও হতে হয়।