ফুটফুটে নিষ্পাপ ছেলে শিশুটি হাসপাতালের বিছানায় শুয়ে মিটিমিটি হাসছে। বৃহস্পতিবার (৩ জুন) সকাল ৮ টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তার জন্ম হয়। শিশুটির মা লাইজু (৩২) বুদ্ধি প্রতিবন্ধি। বুদ্ধি প্রতিবন্ধি লাইজুর বাবা, মা ভাই কেহই নেই। উপজেলার আঙ্গারিয়া এলাকায় ভূমিহীন এক নদীর চরে লাইজুর বসবাস।
হঠাৎ গত বুধবার (২ জুন) উপজেলায় কর্মরত কয়েকজন সংবাদকর্মী জানতে পান স্বামী ছাড়া বুদ্ধি প্রতিবন্ধির সন্তান সম্ভাবনা। এমন খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গেলে রোজিনা নামের আ.লীগের এক নেত্রী বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য চেষ্টা চালায়। পরবর্তীতে উপজেলা প্রসাশনের হস্তক্ষেপে ও নারী ইউপি সদস্যের সহযোগিতায় প্রতিবন্ধি লাইজুকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়।
বৃহস্পতিবার (৩ জুন) সকাল ৮ টার দিকে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে ফুটফুটে এক ছেলে সন্তান জন্ম হয়। এ নির্মম জীবন বাস্তবতায় এক ফুটফুটে মানবশিশুর পৃথিবীতে আসার গল্প।
স্থানীয়রা জানায়, প্রতিবন্ধি লাইজুর প্রায় ১০ বছর আগে উপজেলার ভাতকাঠি এলাকায় একটি বিবাহ হয়েছিলো। সেখানে তার স্বামী আরএকটি বিবাহ করলে সেখান থেকে লাইজু তার স্বামীকে ডিভোর্স দিয়ে চলে আসেন। সেখানে একটি ৬ বছরের ছেলে সন্তান রয়েছে। লাইজু সেই থেকেই বেশি ভারসাম্যহীন হয়ে পরে। লাইজুর বাবা, মা ও তাদের জায়গা জমি না থাকায় ভূমিহীনে বসবাস করতো। আর সেখানেই তার সাথে এমন নিষ্ঠুরতা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
তবে স্থানীয়রা মানসিক ভারসাম্যহীন নারীর কাছে শিশুটির নিরাপত্তা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা টিএইচও ডা. আবুল খায়ের মাহমুদ রাসেল জানান, বুদ্ধি প্রতিবন্ধি লাইজুকে হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয় এবং বৃহস্পতিবার সকাল ৮ টার দিকে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে একটি ছেলে সন্তানের জন্ম হয় ওই বুদ্ধি প্রতিবন্ধি নারীর।
এ ব্যাপারে ইউএনও মো. মোক্তার হোসেন জানান, ওই বুদ্ধি প্রতিবন্ধি নারীকে উদ্ধার করে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে, তাকে আইনগত সহায়তা করা হবে এবং সে একটু সুস্থ্য হলে তার সাথে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা সার্বিক খোঁজ খবর রাখছি।