ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, আমাদের বিবেচনায় সরকার দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণে যতটা না তৎপর তার তুলনায় শতগুণে বেশি তথ্য প্রকাশ নিয়ন্ত্রণে। যেটি আমি মনে করি আত্মঘাতি একটি ব্যবস্থা। এটা থেকে সরকারকে সরে আসতে হবে।
‘করোনাভাইরাস সংকট মোকাবিলা: কোভিড-১৯ টিকা ব্যবস্থাপনায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ইফতেখারুজ্জামান।
আজ মঙ্গলবার সকালে এই ভার্চ্যুয়াল সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক, আমরা গত দেড় বছর স্বাস্থ্য খাতে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতির যে চিত্র দেখছি, সেগুলো যে অব্যাহত ছিল এখানে (গবেষণা জরিপে) দেখেছি।
বিভিন্ন ক্রয় নীতি লঙ্ঘিত হয়েছে, জনবল নিয়োগে কোটি কোটি টাকা লেনদেনের তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
তিনি বলেন, অন্যদিকে দেখেছি, তথ্য প্রকাশের প্রতিবন্ধকতা সরকার কোভিড শুরু হওয়া থেকেই শুরু করেছে। সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত ছিল। সত্যিকার অর্থে তথ্য নিয়ন্ত্রণের যে প্রবণতা তা আরও ঘণীভূত হয়েছে। তার কিছু দৃষ্টান্ত আমরা দেখেছি, ব্যাপকভাবে আলোচিত ঘটনা যেটি রোজিনা ইসলামসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, সরকার টিকার জন্য একটি মাত্র উৎসের ওপর নির্ভরশীল ছিল। এই সিদ্ধান্ত যে ঠিক হয়নি, সেটি এখন প্রমাণিত। টিকা সংগ্রহের জন্য
তৃতীয় পক্ষকে নিযুক্ত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে তৃতীয় পক্ষকে লাভবান করা হয়েছে। আর তার বোঝা বইতে হচ্ছে জনগণকে।
টিআইবির আজকের অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রতিষ্ঠানটির রিসার্চ ফেলো মো. জুলকারনাইন। তিনি বলেন, টিকা কিনতে গিয়ে সরকারি ক্রয়বিধির ব্যত্যয় ঘটানো হয়েছে। এখানে তৃতীয় পক্ষকে অন্তর্ভুক্ত করে ২৩১ কোটি টাকা মুনাফা দেওয়া হয়েছে। এই টাকা দিয়ে ৬৮ লাখ ডোজ টিকা কেনা যেত।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৩১ মে পর্যন্ত সময়ের গুণগত ও পরিমাণগত তথ্য করে এই গবেষণা করা হয় বলে জানায় টিআইবি।
আট বিভাগের ৪৩টি জেলা থেকে ৫৯টি টিকাদান কেন্দ্র নির্বাচন করে দৈবচয়নের ভিত্তিতে তথ্য সংগ্রহ করে এই গবেষণা করা হয়েছে।
জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও অন্যান্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা, জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, টিকাদান সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও জনগোষ্ঠীর সাক্ষাৎকার নেওয়ার পাশাপাশি সরকারি ও বেসরকারি সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকেও তথ্য নেওয়া হয়েছে গবেষণায়।