বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মৃত্যুর পর গার্ড অব অনার দেওয়ার ক্ষেত্রে নারী কর্মকর্তাদের বাদ রাখতে বলেছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়–সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটি। কমিটি বিকল্প ব্যক্তি নির্ধারণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করেছে।
আজ রোববার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে এ সুপারিশ করা হয়।
সরকারের নীতিমালা অনুযায়ী, কোনো বীর মুক্তিযোদ্ধা মারা যাওয়ার পর তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মান জানায় সংশ্লিষ্ট জেলা/উপজেলা প্রশাসন। ডিসি বা ইউএনও সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে সেখানে থাকেন। কফিনে সরকারের প্রতিনিধিত্বকারী কর্মকর্তা ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
অনেক স্থানে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে নারী কর্মকর্তারা রয়েছেন, আর সেখানেই আপত্তি তুলেছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
বৈঠক সূত্র জানায়, বৈঠকে একজন সদস্য বলেন, সাধারণত নারীরা জানাজায় অংশ নেন না। এটি নিয়ে সমাজে অনেকে প্রশ্ন তোলেন। তাই বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গার্ড অব অনার দেওয়ার ক্ষেত্রে যেখানে নারী ইউএনও আছেন, সেখানে বিকল্প একজন পুরুষ কর্মকর্তা নির্ধারণ করা প্রয়োজন। সহকারী কমিশনার (ভূমি), উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বা এ ধরনের কোনো কর্মকর্তাকে বিকল্প রাখা যেতে পারে। এরপর কমিটি ওই সুপারিশ করে।
সংসদ সচিবালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞা সংগ্রহ করা ও চিহ্নিত রাজাকারদের পরবর্তী প্রজন্মকে সরকারি চাকরি দেওয়ার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক নীতিমালা অনুসরণের সুপারিশ করা হয়। বৈঠকে কিছু জায়গায় বিভিন্ন দিবসে স্বাধীনতাবিরোধীদের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন–সম্পর্কিত ঘটনা সমাধানের লক্ষ্যে সমস্যার বিবরণীর একটি সারসংক্ষেপ কেবিনেটে পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়।
কমিটির সভাপতি শাজাহান খানের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, রাজি উদ্দিন আহমেদ, রফিকুল ইসলাম, কাজী ফিরোজ রশীদ, ওয়ারেসাত হোসেন ও মোছলেম উদ্দিন আহমদ অংশ নেন।
কমিটির সভাপতি শাজাহান খান বলেন, ‘বৈঠকে কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম বীর উত্তম বলেছেন, রাতে গার্ড অব অনার হয় না। এ কারণে তারা দিনের বেলায় গার্ড অব অনার দেওয়ার সুপারিশ করেছেন। আর গার্ড অব অনার দেওয়ার ক্ষেত্রে সাধারণত ইউএনওরা সম্মানটা জানিয়ে থাকেন। জানাজার সঙ্গে ধর্মীয় অনুভূতির একটা বিষয় আছে।
নারীদের জানাজায় অংশ নেওয়া নিষেধ, এ রকম একটি বিষয় আছে। সে জায়গা থেকে চিন্তা করে এ সুপারিশ করা হয়েছে। তবে তারা কোনো বিকল্প প্রস্তাব দেননি। বিধিবিধান দেখে মন্ত্রণালয়কে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে।