সময়মতো বিদ্যুৎ উৎপাদনে না আসায় দেশের বিভিন্ন স্থানের কয়লাভিত্তিক ১০টি বিদ্যুৎ প্রকল্প বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
রোববার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
নেপাল ও ভুটান থেকে জলবিদ্যুৎ আমদানি করার লক্ষ্যে আগামী মাসে চূড়ান্ত চুক্তি সই হবে বলেও জানান তিনি।
বাতিল করা প্রকল্পগুলো হলো- পটুয়াখালী ৬৬০x২ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক পাওয়ার প্লান্ট, উত্তরবঙ্গ ১২০০ মেগাওয়াট থার্মাল পাওয়ার প্লান্ট, মাওয়া ৫২২ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক পাওয়ার প্লান্ট, ঢাকা ২৮২ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক কেন্দ্র, চট্টগ্রাম ২৮২ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক পাওয়ার প্লান্ট।
খুলনা ৫৬৫ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, মহেশখালী ১৩২০ মেগাওয়াট কয়লাভিত্তিক পাওয়ার প্লান্ট, মহেশখালী ১৩২০ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর ৭০০ মেগাওয়াট আল্ট্রাসুপার কোল পাওয়ার প্লান্ট এবং সিপিজিসিবিএল ১২০০ মেগাওয়াট পাওয়ার প্লান্ট।
সংবাদ সম্মেলনে নসরুল হামিদ বলেন, ‘সময়মতো আসতে না পারায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই পাওয়ার প্লান্টগুলো বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত দিয়েছেন।’
পাওয়ার প্লান্টগুলো বাদ দেয়ার ফলে বিদ্যুতের ঘাটতি হবে না বলে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘ভবিষ্যতে কোনো অঞ্চলে কী পরিমাণ বিদ্যুৎ লাগবে, তার ওপর ভিত্তি করে ভবিষ্যত পরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে। আমাদের হাতে যে পরিমাণ পাওয়ার প্লান্ট আছে এবং আগামীতে যে পরিমাণ আমরা পাব, এতে দেখা যাচ্ছে আমাদের প্রায় ১৩ হাজার মেগাওয়াট পাওয়ার প্লান্ট আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে অতিরিক্ত থাকবে।’
‘এই পাওয়ার প্লান্টগুলো (বাদ দেয়া ১০টি পাওয়ার প্লান্ট) নিয়ে গেলে যে পরিমাণ ঘাটতি হবে, সেটা পূরণ করার জন্য আমাদের হাতে আরও ১৩ হাজার মেগাওয়াট পাওয়ার প্লান্ট আছে, সেটা পূরণ করে ফেলব। সুতরাং আমাদের এখানে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা না’ যোগ করেন বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী।
বিদ্যুতের বিষয়ে ২০১০ সালে নেয়া মাস্টারপ্লান পর্যায়ক্রমে প্রতি ৫ বছর পর পর রিভিউ করা হয় জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘দেড় বছর ধরে কোভিড পরিস্থিতির কারণে বিশ্বব্যাপী জ্বালানি ও বিদ্যুতের ক্ষেত্রে বিরাট পরিবর্তন আসছে। নতুন টেকনোলজি, নতুন সম্ভাবনা এবং জ্বালানির দাম ওঠা-নামায় নতুনভাবে চিন্তা করার বিষয় চলে আসছে। সব থেকে বড় বিষয় বাংলাদেশের যে ডেভেলপমেন্ট হতে যাচ্ছে এবং যে ধারা আমরা বজায় রাখতে চায়, এ বিষয়ে আমাদের চিন্তা করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সর্বপ্রথম যে চালিকা শক্তিটা ইকোনমিক ডেভেলপমেন্টের মধ্যে কাজ করে, তা হলো বিদ্যুৎ ও জ্বালানি। একে যদি আমরা সাশ্রয়ী ও নিরবিচ্ছন্ন রাখতে চায়, তাহলে আমাদেরকে বিশ্বের জ্বালানি, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও টেকনোলজির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে চলতে হবে।’