পরে খবর পেয়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ এগিয়ে আসেন এবং শ্মশানের পাশেই দাফন করেন প্রফুল্ল কর্মকারকে।ঘটনাটি ঘটেছে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলায়।
এলাকাবাসী জানায়,গতকাল শনিবার রাতে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের হরিতলা এলাকার প্রফুল্ল কর্মকার (৭০)।
রাতেই আ্যম্বুলেন্স করে মিরপুর পৌর শ্মশানে তার লাশ নিয়ে যায় স্ত্রী কল্পনা ও কয়েক স্বজন। সে সময় ওই শ্মশানে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির মরদেহ হওয়ার কারণেই শ্মশান প্রাঙ্গণে তারা কেউ আসেননি এবং মরদেহ সৎকারেও অনীহা প্রকাশ করেন ।
এ অবস্থায় অ্যাম্বুলেন্স চালক মরদেহ নামিয়ে রেখে ফেরত যান। স্বজনরাও চলে যান বাড়িতে। মরদেহ নিয়ে একাকী বিপদে পড়েন স্ত্রী কল্পনা। কোন উপায় না পেয়ে কল্পনা স্বামীর মরদেহ নিয়ে পাশের বিদ্যালয়ের বারান্দায় অবস্থান নেন। স্বামীর পাশে বসে পার করেন সারারাত। সকালে এক পর্যায়ে বিষয়টি অবহিত করেন স্থানীয় প্রশাসনকে। পরে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ জন এসে ওই শ্মশানের পাশেই প্রফুল্ল কর্মকারকে দাফন করেন।
এ ব্যাপারে মৃত প্রফুল্ল কর্মকারের স্ত্রী কল্পনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি অসুস্থ থাকায় তা সম্ভব হয়নি।
স্থানীয় কাউন্সিলর জাহিদুল ইসলাম বলেন,প্রফুল্ল কর্মকারের পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা করোনা আক্রান্ত। সে কারণে তার পরিবারের সদস্যরা মরদেহ সৎকার করতে পারেননি। তবে হিন্দু সম্প্রদায়ের কেউও মরদেহটির সৎকার করার জন্য এগিয়ে আসেননি। পরে সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিষয়টি জানালে তিনি স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকজন এর সহায়তায় তাকে সমাহিত করার ব্যবস্থা করেন।
তিনি আরও জানান,প্রফুল্ল কর্মকার গত এক সপ্তাহ ধরে মিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তার শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে রাতে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। সঙ্গে ছিলেন স্ত্রী কল্পনা। মৃত্যুর পর মরদেহটি স্ত্রী কল্পনা বাড়ি নিতে চাইলেও বাড়িতে নেওয়ার অনুমতি মিলেনি।
মিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লিংকন বিশ্বাস জানান,বিষয়টি জানার পরপরই পৌর মেয়র ও স্থানীয় কাউন্সিলরকে অবহিত করেন। তারা স্থানীয় লোকজনকে দিয়ে সমাহিত করার কাজটি সম্পন্ন করেছেন।