তিনি বলেছেন, ‘সংসদে সংসদ নেতা হিসেবে শেখ হাসিনার বক্তব্য অনভিপ্রেত এবং রাজনৈতিক শালীনতা বিবর্জিত। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এটা রুচিহীন ও কল্পকাহিনি ছাড়া আর কিছুই নয়।’
আজ রোববার উত্তরার বাসা থেকে জুম নেটওয়ার্কে যুক্ত হয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব।
প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়াকে নিয়ে সংসদের বাজেট অধিবেশনের সমাপনীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় মির্জা ফখরুল এই মন্তব্য করেন।
সংবাদ সম্মেলন শনিবার দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তসগুলো তুলে ধরা হয়।
ফখরুল দাবি করেন, ‘সংসদ নেতা তার মনগড়া কল্পকাহিনির মধ্য দিয়ে একজন মহান মুক্তিযোদ্ধা, গণতন্ত্রের আপসহীন নেত্রী এবং জনগণের আস্থাভাজন প্রিয় নেতাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে চেয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘এই ধরনের বক্তব্য সংসদ নেতার কাছ থেকে জাতি আশা করে না। এটা সমগ্র জাতিকে হতাশ ও ক্ষুব্ধ করেছে। এই ধরনের বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা মনে করি, সংসদ নেতার এই ধরনের মন্তব্য খারাপ নজির স্থাপন করেছে।’
সরকারের ব্যর্থতাই দায়ী
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কোভিড-১৯ সংক্রমণ মোকাবিলায় ব্যর্থতার জন্য এই সরকারের অযোগ্যতা, দুর্নীতি এবং উদাসীনতা দায়ী। প্রায় ১৫ মাস সময় নিয়েও সমস্যাগুলো সমাধান করতে না পারার ব্যর্থতা নিয়ে সরকারের অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত।’
দুর্গতদের পাশে দাঁড়ান
মির্জা ফখরুল বলেন, ক্রমাগত বর্ষণের ফলে এবং ভারতের উজানে সকল বাঁধ খুলে দেওয়ার কারণে প্রায় ১০টি জেলায় আকস্মিকভাবে বন্যা পরিস্থিতি উদ্ভব হওয়ায়, আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। অপরিকল্পিত ও দুর্বল নির্মাণ কাজের কারণে সড়ক ও বাঁধগুলো ভেঙে যাওয়ায় জনদুর্ভোগ বৃদ্ধি পেয়েছে। ব্যাপক ফসলহানী হওয়ায় কৃষকের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
তিনি যোগ করেন, বন্যাদুর্গত এলাকায় অবিলম্বে সরকারি ত্রাণ বিতরণ এবং বীজতলা ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় নতুন বীজ সরবরাহের দাবি জানাচ্ছি। দলের নেতাকর্মীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে উপদ্রুত এলাকায় দুর্গতদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বানও জানাচ্ছি।
এগুলো তাদের দিবাস্বপ্নের মতো
‘বিএনপি থেকে অনেকে তলে তলে আওয়ামী লীগে যোগাযোগ করছে’, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের এরকম বক্তব্যের প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব বলেন, এগুলো তাদের দিবাস্বপ্নের মতো। বিএনপিকে তার জন্মের পর থেকে বিশেষ করে তার প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের শাহাদাতের পর থেকে বার বার চেষ্টা করা হয়েছে এই দলটিকে নিশ্চিহ্ন করবার, ভেঙে ফেলবার, জনগণকে এই দল থেকে বিচ্ছিন্ন করবার।
তিনি আরও বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে প্রায় তিন বছর কারাগারে আটক রেখে এবং আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে নির্বাসিত রেখে, আমাদের ৩৫ লাখ নেতাকর্মীকে মিথ্যা মামলা ও গায়েবী মামলা দিয়ে বার বার ভেঙে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তারা বিএনপিকে ভেঙে ফেলতে পারেনি।
ফখরুল বলেন, বিএনপি একটা বহমান বিশাল স্রোতস্বীনি নদী। এখানে কখনও কখনও খড়কুটো এসে পড়ে, আবার খড়কুটো এসে চলে যায়। তাতে করে বিএনপির কোনও ক্ষতি হয়নি, ক্ষতি হয় না।’
প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য অবিলম্বে বিশেষ ব্যবস্থায় টিকা দেওয়া নিশ্চিত করার দাবি জানান ফখরুল।