সম্প্রতি রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। এদের মধ্যে বয়স্কসহ শিশুও রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য তথ্য ইউনিটের (এমআইএস) সহকারী পরিচালক ও হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন অ্যান্ড কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ডা. কামরুল কিবরিয়া জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীসহ সারাদেশে ৩৯ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন।
এ নিয়ে সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১২০ জনে দাঁড়াল।
তিনি আরও জানান, চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ৫ জুলাই পর্যন্ত মোট ৫০৪ জন রোগী ভর্তি হন। তাদের মধ্যে ৩৮৪ জন চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।শনাক্ত হয়েছে চলতি বছরের শুরু থেকে ৬ জুলাই পর্যন্ত সারাদেশে ৫৩৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী।
বুধবার অনলাইনে স্বাস্থ্য অধিদফতরের নিয়মিত বুলেটিনে এ কথা জানানো হয়। বুলেটিনে বক্তব্য দেন অধিদফতরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা: নাজমুল ইসলাম। তিনি বলেন, বৃষ্টিতে পানি জমে থাকছে। এ কারণে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা কিছুটা বাড়ছে।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের প্রতি বেশি নজর দেয়া হচ্ছে। কিন্তু ডেঙ্গুকে উপেক্ষা করার কোনো সুযোগ নেই। তিনি সবাইকে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন।
বর্ষাকালে থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে এডিস মশার বংশবিস্তার ঘটে। এজন্য এডিস মশার প্রজনন স্থলে পানি জমিয়ে না রেখে নিয়মিত ফেলে দেয়ার পরামর্শ দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র এই পরিচালক।
হালকা জ্বর হলে অনেকেই বিষয়টিকে আমলে নেন না। তবে হালকা জ্বর হলে বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিতে বলেছেন বিশেষজ্ঞরা।
কারো মধ্যে ডেঙ্গুর লক্ষণ দেখা দিলে যা করবেন-
* ডেঙ্গু হলে আতঙ্কিত না হয়ে যথেষ্ট বিশ্রাম নিন।
* জ্বর কমাতে প্যারাসিটামল খান।
* প্রচুর পরিমাণে পানি, ডাবের পানি, খাবার স্যালাইন, ফলের রস ইত্যাদি গ্রহণ করুন।
* নিজে নিজে কোনো অ্যান্টিবায়োটিক বা ব্যথানাশক খাবেন না। মনে রাখবেন, জ্বর সেরে ওঠার সময়টুকুতে বেশি সাবধান থাকতে হবে। কারণ, এ সময়ই জটিলতাগুলো দেখা দিতে থাকে। তাই জ্বর কমার সঙ্গে সঙ্গে কাজে যোগ দেবেন না।
* বাড়িতে নিয়মিত রক্তচাপ মাপতে থাকুন। মাথা ঘোরা, চোখে অন্ধকার দেখা, দুর্বল লাগা রক্তচাপ কমে যাওয়ার লক্ষণ। মনে রাখবেন, পালস প্রেশার ২০–এর নিচে মানে ডেঙ্গু শক সিনড্রোমের দিকে মোড় নিচ্ছে। প্লাটিলেট এক লাখের নিচে নামলে বা হিমাটোক্রিট পরিবর্তন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন, ৫০ হাজারের নিচে নামলে হাসপাতালে ভর্তি হোন।
কিন্তু হাসপাতালে ভর্তি হলে প্লাটিলেট দিতে হবে, এমন কোনো কথা নেই। এ ধরনের ডেঙ্গুতে প্লাজমা লিকেজ হয় (প্লাজমা শিরার বাইরে বেরিয়ে আসে)। তাই সতর্কতার সঙ্গে স্যালাইন ব্যবহার করতে হয়।
* এ ছাড়া অনেক বমি, শরীরের যেকোনো জায়গায় রক্তপাত, রক্তচাপ কমে গিয়ে দুর্বল অনুভব করা, প্রচণ্ড পেটব্যথা, অতিরিক্ত অস্থিরতা ও অস্বাভাবিক আচরণ, হাত–পা শীতল হয়ে আসা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিলে রোগীকে হাসপাতালে নিন।