নীলফামারীর সৈয়দপুরে ২০০৬ সালে প্রথম স্ত্রী হত্যার অভিযোগে স্বপন কুমার বিশ্বাসকে দেয়া মৃত্যুদণ্ডাদেশ কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
পাশাপাশি তাকে কনডেম সেল থেকে সাধারণ সেলে স্থানান্তরেরও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সোমবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতির ভার্চুয়াল বেঞ্চ এ রায় দেন।
আদালতে বিনা ফিতে আসামির পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন।
অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমান উদ্দিন ও অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরসেদ।
গত ৮ জুলাই এ মামলার শুনানিতে আসামির পক্ষে খন্দকার মাহবুব হোসেন আদালতকে বলেন, স্ত্রী স্বপ্না ঘোষকে পূর্ব পরিকল্পনা করে হত্যা করা হয়নি। পারিবারিক ঝগড়ার এক পর্যায়ে উত্তেজিত অবস্থায় এ ঘটনা ঘটেছে। এ কারণে আসামি স্বপন কুমার বিশ্বাসকে মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন দণ্ড কোনটাই দেয়া সমীচীন হবে না। এ মামলায় প্যানাল কোডের ৩০৪/২ ধারা অনুযায়ী আসামির সব্বোর্চ সাজা ১০ বছরের বেশি হতে পারে না।
ওইদিন মামলাটি বিনা ফিতে পরিচালনার কথা জানিয়ে খন্দকার মাহবুব হোসেন আদালতকে জানান, কারাগার থেকে স্বপন কুমার বিশ্বাস নামে ওই ফাঁসির আসামি অনেক কাকুতি-মিনতি জানিয়ে তাকে চিঠি লিখেছিলেন। চিঠিতে স্বপন জানিয়েছে, তিনি দরিদ্র মানুষ। আইনজীবী রেখে মামলা পরিচালনা করার সামর্থ্য তার নেই।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৬ সালের ১৬ অক্টোবর নীলফামারীর সৈয়দপুর থানার নয়াটোল গ্রামে প্রথম স্ত্রী স্বপ্না ঘোষকে (৩৫) হত্যা করেন তার স্বামী স্বপন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ায়। দ্বিতীয় বিয়ে করার পর এ নিয়ে ঝগড়ার এক পর্যায়ে তিনি স্ত্রীকে মাথায় আঘাত করে খুন করেন। পরে লাশ ফাঁসির দড়িতে ঝুলিয়ে রাখা হয়। একই বছরের ২৮ অক্টোবর সৈয়দপুর থানার এসআই শফিউল হক স্বপনের নামে মামলা করেন। ওইদিনই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। সাক্ষ্যপ্রমাণ শেষে ২০০৮ সালের ১৮ নভেম্বর নীলফামারীর দায়রা জজ আদালত স্বপনকে মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন।
এরপর ২০১৪ সালের ৯ এপ্রিল বিচারিক আদালতের দেয়া ওই রায় বহাল রাখেন হাইকোর্ট। পরে হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে স্বপন আপিল করেন। একই সময়ে তার মামলাটি বিনা ফিতে পরিচালনা করতে আইনজীবীকে চিঠি দেন তিনি। এরই ধারাবাহিকতায় শুনানি শেষে সোমবার রায় দিলেন আপিল বিভাগ।