সৌদি আরবে অবস্থানরত বিশ্বের ১৫০টি দেশের ৬০ হাজার (অভিবাসী) ধর্মপ্রাণ মুসলমানের ‘লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত পবিত্র আরাফাত ময়দান। সেখানে আজ পালিত হচ্ছে পবিত্র হজ।
বিশ্বের ১৫০টি দেশের ৬০ হাজার (অভিবাসী) ধর্মপ্রাণ মুসলমান এবার হজে অংশ নিয়েছেন।
করোনা মহামারির মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো সীমিত পরিসরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে পবিত্র হজ। গত বছরও হজ পালনের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা ছিল। এবারও লোকজনকে পরিপূর্ণ স্বাস্থ্যবিধি মেনে মাস্ক পরে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখেই হজ পালন করতে হচ্ছে।
আজ ফজরের সালাতের পরেই মিনা থেকে দলে দলে হাজিগণ উপস্থিত হবেন আরাফার ময়দানে। সফেদ-শুভ্র দুই খণ্ড কাপড়ের এহরাম পরিহিত হাজিরা সেখানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত থাকবেন। আরাফাত ময়দানের মসজিদে নামিরায় জোহরের নামাজের আগে খুতবা পাঠ করবেন মসজিদুল হারামের খতিব শায়খ ড. বান্দার বিন আবদুল আজিজ বালিলা।
এই আরাফাত ময়দানে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) বিদায় হজে মুসলিম জাতির উদ্দেশে নির্দেশনামূলক ভাষণ দিয়েছিলেন। এছাড়া মুসলমানদের আদি পিতা হযরত আদম (আ.) এবং মা হাওয়ার স্মৃতি বিজড়িত মিলনস্থলও এই আরাফাত ময়দান।
হযরত মুহাম্মদ (সা.) বলেছিলেন, আরাফাত ময়দানে অবস্থান মানে হজ। যে মুসলমান মুজদালিফায় রাত্রিযাপন করে ফজরের নামাজের পূর্বে আরাফাতের ময়দানে পৌঁছাবে তার হজ পূর্ণ হয়ে যাবে।
খুতবা পাঠ শেষে জোহর ও আসরের ওয়াক্তের মাঝামাঝি সময়ে হাজিরা জামাতের সঙ্গে কছর নামাজ আদায় করবেন। সূর্যাস্ত পর্যন্ত তারা আরাফাতের ময়দানে অবস্থান করে আল্লাহ তাআলার জিকির-আসকার ও ইবাদতে মশগুল থাকবেন।
এরপর মুজদালিফার উদ্দেশে আরাফার ময়দান ত্যাগ করবেন এবং মুজদালিফায় গিয়ে মাগরিব ও এশার নামাজ এশার ওয়াক্তে একত্রে পড়বেন এবং সমস্ত রাত অবস্থান করবেন। মিনায় জামরাতে নিক্ষেপ করার জন্য ৭০টি কংকর এখান থেকে সংগ্রহ করবেন। মুজদালিফায় ফজরের নামাজ পড়ে মিনার উদ্দেশে রওনা হবেন। ১০ জিলহজ মিনায় পৌঁছার পর হাজিদের পর্যায়ক্রমে চারটি কাজ সম্পন্ন করতে হয়।
আগামীকাল মঙ্গলবার ঈদুল আজহার দিন মিনায় হাজির হয়ে তিনটি জামারায় শয়তানকে প্রতীকী পাথর নিক্ষেপকালে ভিড় এড়াতে নির্ধারিত দূরত্বে জায়গা চিহ্নিত করা হয়েছে, যেখানে দাঁড়িয়ে হাজিরা পাথর নিক্ষেপ করবেন।
আরব নিউজ ও আল আরাবিয়ার খবরে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে এ বছরও সৌদি আরবের বাইরে থেকে কোনো হজযাত্রীকে অংশ নিতে দেওয়া হচ্ছে না। সৌদি আরবে বাস করা দেশটির নাগরিক ও বিদেশি বাসিন্দাদের মধ্য থেকে ৬০ হাজার ব্যক্তি হজ করার অনুমতি পেয়েছেন। শুধু ১৫ থেকে ৬৫ বছর বয়সি সৌদি নাগরিক এবং দেশটিতে বাস করা ১৫০ দেশের নাগরিক হজ করার সুযোগ পেয়েছেন। সবাই দুই ডোজ ভ্যাকসিন নিয়েছেন। গতবারও বিধিনিষেধের মধ্যে ১ হাজার মুসলিমকে হজ পালনের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।