ঢাকার সাভারে আশুলিয়ায় টাকা চুরির ঘটনা দেখে ফেলায় এক শিশুকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে সহকর্মী পরিবহন শ্রমিকের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় আশুলিয়া ক্লাসিক পরিবহনের বাসের এক শ্রমিককে আটক করলেও অপরজন পলাতক।
সোমবার সকালে আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকা থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এর আগে রোববার দিবাগত মধ্যরাতে আশুলিয়ার বাইপাইল এলাকায় এ হত্যার ঘটনা ঘটে।
নিহত শিশু মো. ফেরদৌস (১১) শেরপুর জেলার সদর থানার মুন্সিপাড়া গ্রামের বাসচালক রইচ উদ্দিনের ছেলে। আশুলিয়ার পল্লীবিদ্যুৎ বালুর মাঠ এলাকায় পরিবারের সাথে ভাড়া বাসায় থেকে আশুলিয়া ক্ল্যাসিক পরিবহনে কাজ করতো।
আটক মো. হৃদয় আশুলিয়া ক্ল্যাসিক পরিবহনের কন্ডাক্টর ও পলাতক মো. পারভেজ একই পরিবহনের চালকের সহকারী।
নিহত শিশুর বড় বোন রুবিনা বেগম বলেন, ‘আমার বাবা আশুলিয়া ক্ল্যাসিক পরিবহনের চালক। ছোট ভাই ফেরদৌস একটু চঞ্চল প্রকৃতির হওয়ায় তিন দিন আগে ওরে আশুলিয়া ক্ল্যাসিক পরিবহনে কাজে পাঠায়। সকালে আমার ভাইয়ের লাশ বাইপাইল রাস্তা থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। বাসের হেলপার ও কন্ডাক্টর আমার ভাইকে হত্যার পর লাশ সড়কে ফেলে রাখে। আবার তারাই পুলিশকে খবর দিয়ে আনে।’
আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সামিউল ইসলাম জানান, মধ্যরাতে আব্দুল্লাহপুর থেকে বাস নিয়ে বাইপাইল পৌঁছায়। পরে গাড়ির মধ্যে কন্ডাক্টর হৃদয় ও হেলপার পারভেজ ঘুমিয়ে পড়ে। এসময় শিশু ফেরদৌস গাড়িতেই ছিলো। ঘুম ভাঙলে তার পকেট থেকে ৫০০ টাকা খোয়া গেছে বলে জানতে পারে হৃদয়। এসময় শিশু ফেরদৌস তার পকেট থেকে পারভেজ টাকা চুরি করেছে বলে জানায়।
একপর্যায়ে পারভেজ ও হৃদয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। এসময় পারভেজকে লাঠি দিয়ে আঘাত করে হৃদয়। পরে ক্ষিপ্ত হয়ে পারভেজ শিশু ফেরদৌসকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে তারা দুইজন মিলে ফেরদৌসের লাশ সড়কে ফেলে রেখে পুলিশকে দুর্ঘটনার খবর দেয়।
তিনি আরও বলেন, সাভার হাইওয়ে পুলিশ প্রথমে ঘটনাস্থলে পৌঁছলেও মরদেহে দুর্ঘটনার কোনো চিহ্ন না পাওয়ায় বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করে। পরে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে।
এসআই সামিউল বলেন, আশুলিয়া ক্ল্যাসিক পরিবহনের কন্ডাক্টর হৃদয়কে আটক করা হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে ৫০০ টাকা চুরির ঘটনা দেখে ফেলায় ওই শিশুকে হত্যা করা হয়েছে বলে জানা গেছে। তদন্ত করে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে।
এ ঘটনায় থানায় একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি এবং পলাতক চালকের সহকারী পারভেজকে আটকের চেষ্টা চলছে বলেও জানান তিনি।