বাজারে দেখা মিলতে শুরু করেছে শীতকালীন শাক-সবজির। বাজারে নানা শাক-সবজির সমাহার দেখা যায় এই সময়টাতেই। কিন্তু জানেন কি কোন কোন শীতকালীন শাক-সবজি আপনার শরীরকে সুস্থ ও সবল রাখতে সাহায্য করবে? পুষ্টিবিদরা পরামর্শ দিচ্ছেন সুস্থ থাকতে বাজারের থলেতে রাখতে হবে এই পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ কিছু শীতকালীন শাক-সবজি।
গাজর: গাজরে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে ভিটামিন A সমৃদ্ধ বিটা ক্যারোটিন, যা চোখের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে। পাশাপাশি এই সবজিতে রয়েছে ভিটামিন B-6, ভিটামিন-K, পটাশিয়াম, ফসফরাস। এছাড়াও গাজর ডায়াবেটিক রোগীরাও খেতে পারেন কারণ এতে খুব কম ক্যালোরি থাকে।
বিট: বিটে ফ্যাটের পরিমাণ খুব কম থাকে। যাদের কোলেস্টেরলের সমস্যা রয়েছে তারা এই সবজি খেতে পারেন। পাশাপাশি আয়রন থাকার জন্য যাদের রক্তাল্পতা রয়েছে তারা বিট খেতে পারেন। এছাড়াও বিটে রয়েছে ভিটামিন-C, যা শীতে ত্বক শুষ্ক হওয়া থেকে বাঁচায় ও চুল পড়া রোধেও সাহায্য করে।
পালংশাক: পালংশাকে প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম থাকে। যা পেশী তৈরিতে ও নার্ভের ক্ষেত্রে খুব উপকারী। তবে যাদের কিডনির সমস্যা, ইউরিক অ্যাসিডের সমস্যা বা রক্তে পটাশিয়ামের মাত্রা বেশি রয়েছে তাদের পালংশাক এড়িয়ে চলাই উচিত। এছাড়া পটাশিয়াম হৃদযন্ত্রের জন্যও খুব উপকারী।
মুলা: এই সবজি অনেকের অপছন্দ হলেও এই সবজির গুণ প্রচুর। মূলত মুলোয় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। এছাড়াও ভিটামিন E, A, C থাকে। পাশাপাশি মুলোতে জিঙ্ক, ফসফরাস, ক্যালসিয়াম থাকে। প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকায় যাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা রয়েছে তাদের জন্য মুলো ওষুধের মতো কাজ করে। পাশাপাশি লিভারের সমস্যা দূর করতেও মুলো খেতে পারেন। যাদের হাইপ্রেশার রয়েছে তারাও এই সবজি খেতে পারেন। তবে মুলোতে গ্যাসের সমস্যা হয়। তাই যাদের অধিক গ্যাসের সমস্যা রয়েছে তারা এই সবজি অপেক্ষাকৃত কম খান।
সর্ষে শাক: এই শাকের পুষ্টিগুণ অনেক। অনেকরেই জানা নেই, তবে সর্ষে শাকে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হৃদযন্ত্র ভাল রাখতে, ক্যান্সারের কোষ ধ্বংস করতে সাহায্য করে। এছাড়াও নন-হিম আয়রন রয়েছে এই শাকে, যার ফলে যাদের রক্তাল্পতা রয়েছে তারা এই শাক খেতে পারেন। চটজলদি উপকার পাবেন।
বেগুন: নামে বেগুন হলেও বেগুনের গুনাগুণ প্রচুর। শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখতে বেগুনের জুরি মেলা ভার। স্মৃতিশক্তি বাড়াতে এবং হার্ট ভাল রাখতে সাহায্য করে বেগুন। যাদের অ্যালজাইমার, ডিমেনশিয়া রয়েছে তাদের জন্য বেগুন উপকারী। তবে পুষ্টিবিদের পরামর্শ কম তেলেই বেগুন রান্না করে খাওয়া উচিৎ। বেগুনে ন্যাসোনিন থাকায় রক্ত সঞ্চালন খুব ভাল হয়। পটাশিয়ামর মাত্রা খুব বেশি থাকে। ফলে ব্লাড প্রেসার নিয়ন্ত্রণে থাকে। যাদের সম্প্রতি অ্যাঞ্জিওপ্লাস্টি, স্টেন্ট বসানো হয়েছে তাদের জন্য বেগুন দারুণ উপকারী। তবে কারও অ্যালার্জি থাকলে বেগুন থেকে দূরে থাকাই শ্রেয়।