ঢাকা থেকে বরগুনাগামী যাত্রীবাহী লঞ্চ ‘এমভি অভিযান-১০’ এ আগুনের ঘটনার তদন্ত কমিটির রিপোর্ট ৩০ দিনের মধ্যে দাখিলের নির্দেশে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইউনুছ আলী আকন্দ ও ব্যারিস্টার অনিক আর হক।
এর আগে সোমবার (২৭ ডিসেম্বর) সকালে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে ‘এমভি অভিযান-১০’ লঞ্চের মালিক হামজালাল শেখকে গ্রেফতার করে র্যাকপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যা ব)।
র্যা ব জানায়, লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হওয়ার পর এক আত্মীয়র বাসায় আত্মগোপনে ছিলেন হামজালাল।
গত রোববার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে বরগুনা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে লঞ্চ মালিক হামজালাল শাহের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এতে আরও ২০-২৫ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। বরগুনা বারের সদস্য আইনজীবী ও ইউপি চেয়ারম্যান মো. নাজমুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলা করেন।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, বৃহস্পতিবার ঘটনার দিন লঞ্চটিতে আগুন লাগার পরে ভাসতে ভাসতে ঝালকাঠি জেলার কলাবাগান এলাকার কিনারায় পৌঁছায়। ফায়ার সার্ভিস ও ঝালকাঠি প্রশাসনের লোকজন আসিয়া কতিপয় যাত্রীদের দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করিয়া ঝালকাঠি জেনারেল হাসপাতালে এবং বরিশাল শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করায়। প্রায় অর্ধশতাধিক মৃতদেহ উদ্ধারের পর শনাক্তকৃত কিছু লাশ স্বজনদের কাছে বুঝিয়ে দেন। বাকি লাশ বরগুনা জেলা প্রশাসক বরাবরে হস্তান্তর করেন।
এদিকে, লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় একের পর এক ভেসে উঠছে মরদেহ। আজ মঙ্গলবার সকালেও এক যুবকের মৃতদেহ ভেসে ওঠে সুগন্ধা নদীতে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা ৪২ দাঁড়িয়েছে।
ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার শফিকুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৮টায় সুগন্ধা নদীতে ভেসে ওঠে আরও একজনের মরদেহ। স্থানীয়রা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিলে ডুবুরি দল মরদেহটি উদ্ধার করে। তারা জানায়, উদ্ধারকৃত যুবকের মুখমণ্ডল আগুনে পোড়া। গায়ে সোয়েটার রয়েছে। তবে এখনো তার পরিচয় শনাক্ত হয়নি।
বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) দিনগত রাতে যাত্রীবাহী লঞ্চ ‘এমভি অভিযান-১০’ এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। লঞ্চটি রাত ৩টার দিকে ঝালকাঠি টার্মিনালের কাছাকাছি পৌঁছালে ইঞ্জিনরুমে লাগা আগুন মুহূর্তেই পুরো লঞ্চে ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে ঝালকাঠির ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন।
