যেকোনো রোগ যদি প্রাথমিক লক্ষণগুলো থেকে সনাক্ত করা যায়, তাহলে বড়োসড়ো বিপদ এড়ানো এবং যথাযথ সময় চিকিৎসা শুরু করাও সম্ভব হয়। কিন্তু বেশিরভাগ সময়ই আমরা অনেক রোগ প্রথম থেকে বুঝতে পারি না। আর তার জন্যই চিকিৎসায় দেরি হয়ে যায়। তাই কোন রোগের কী লক্ষণ, তা জেনে রাখা অত্যন্ত জরুরি। হাঁপানির ক্ষেত্রেও তেমনই।
বেশিরভাগ মানুষই বুঝতে পারেন না যে তার হাঁপানির সমস্যা হচ্ছে, সাধারণ শ্বাসকষ্ট ভেবে এড়িয়ে যান। আপনারও যদি হাঁপানির লক্ষণ সম্পর্কে তেমন কোনও ধারণা না থাকে, তাহলে জেনে নিন অ্যাজমা বা হাঁপানির প্রাথমিক লক্ষণগুলি কী কী হতে পারে।
শ্বাসকষ্ট শ্বাসকষ্ট হল হাঁপানির প্রাথমিক লক্ষণগুলোর মধ্যে একটি। শ্বাসকষ্ট হঠাৎ করেই শুরু হতে পারে। যখন শ্বাসনালী স্ফীত এবং সংকীর্ণ হয়ে যায়, তখন শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। যার ফলে, ফুসফুসে পর্যাপ্ত পরিমাণে অক্সিজেন চলাচল হয় না এবং ফলস্বরূপ শ্বাসকষ্ট শুরু হয়।
হুইজিং হাঁপানির টান উঠলে, প্রদাহের কারণে শ্বাসনালী সংকুচিত হয়ে যায়। যার ফলে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার সময় শরীর প্রয়োজনীয় পরিমাণে অক্সিজেন গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়। তাই শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার সময় সাঁসাঁ করে আওয়াজ বেরোয়।
কাশি হাঁপানির অন্যতম লক্ষণ হল, কাশি হওয়া। ধুলো-বালি, কুয়াশা, ধোঁয়ার মতো বিরক্তিকর উপাদানগুলি হাঁপানির ঝুঁকি বাড়ায়। যখন এই মাইক্রো-পার্টিকেল শ্বাসনালীতে প্রবেশ করে, তখনই জ্বালা এবং প্রদাহ হয়। তাছাড়া এগুলি স্নায়ুকে উদ্দীপিত করে, যা মস্তিষ্ককে সংকেত দেয় কাশির মাধ্যমে ফুসফুস থেকে বাতাস বের করে দিতে।
বুকে চাপা ভাব অনুভূত হওয়া হাঁপানির টান উঠলে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে বেশ কষ্ট হয়, ফলে শারীরিক অস্বস্তি বোধ হয়। এতে বুকের মধ্যে টান বাড়ে, বুকে চাপা ভাব অনুভব হয়। বুক ফুলে উঠতে পারে অথবা সমস্ত বাতাস বের হয়ে যেতে পারে।
কাশি যা সহজে দূর হতে চায় না যারা তীব্র শ্বাসকষ্টে ভুগছেন তাদের মধ্যে অ্যাজমা সম্পর্কিত কাশি এত সহজে দূর হয় না। শীতকালে এই হাঁপানি রোগীদের কাশির সমস্যা আরও বাড়তে পারে। হাঁপানির কারণে হওয়া গুরুতর কাশির সমস্যাকে কফ-ভ্যারিয়েন্ট অ্যাজমা বলা হয়।
দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া হাঁপানির কারণে হওয়া শ্বাসকষ্ট, আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে বাধ্য করতে পারে। শ্বাসকষ্টের সময় ফুসফুস থেকে সম্পূর্ণরূপে বাতাস বেরিয়ে যায়, ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি নিজেই দ্রুত শ্বাস নিতে বাধ্য হন। এক্ষেত্রে দ্রুত শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার সময়, সাঁসাঁ শব্দও শোনা যায়। এই উপরোক্ত লক্ষণগুলি ছাড়াও, কথা বলতে কষ্ট হওয়া, উদ্বিগ্ন কিংবা অস্থির হয়ে ওঠা, অত্যাধিক ঘাম হওয়া, ঠোঁট নীল হয়ে যাওয়ার মতো বিভিন্ন উপসর্গও লক্ষ্য করা যায়।