২০১৯ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অ-পরিকল্পিত খাল খননের কারণে রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার তেনাপচা বাইপাস সংযোগ সড়কের ব্রিজ ভেঙ্গে হেলে পড়েছে গত বর্ষা মৌসুমে।
এতে এ উপজেলার তিনটি ইউনিয়নের লক্ষাধিক মানুষ দৌলতদিয়া ও রাজবাড়ী হয়ে ঢাকা সহ বিভিন্নস্থানে যেতে গুরুত্বপূর্ণ সংক্ষিপ্ত যাতায়াত পথ বাঁধাগস্থ হচ্ছে চরমে।
স্থানীয় ও দুর-দুরান্তের সবজিসহ পন্য পরিবহন ও যাত্রী সাধারণ পড়েছেন মারাত্বক দুর্ভোগে। ব্রিজটির উপরিভাগ কোন রকমে ঝুলে আছে। গাইড ওয়াল ও মাঝের পিলারে। তার পরও ঝুকিপূর্ণ ব্রিজটি দিয়ে হালকা যানবাহন ও সাধারন মানুষ বাধ্য হয়ে জীবনের ঝুকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে।
যে কোন সময় দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা করছেন যাত্রী, চালক ও স্থানীয়রা।
গত ২০০৩ গোয়ালন্দ উপজেলার দেবগ্রাম ইউনিয়নের পিয়ার আলী মোড় তেনাপচা ক্যানেলের উপর ১৮ লক্ষ টাকা ব্যায়ে নির্মিত হয় ৩৫ ফিট দৈর্ঘ ও ১৬ ফুট প্রস্থের ভেঙ্গে পড়া এই ব্রিজটি। কিন্তু ২০১৯ সালে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্বাবধানে অপরিকল্পিত ক্যানেল (খাল) কারণে বর্ষা মৌসুমে পানির স্রোতে ব্রিজটির তলদেশ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় গত বর্ষা মৌসুমের শেষ দিকে ব্রিজটির পিলার, গার্ডার ও গাইডওয়াল ভেঙ্গে হেলে পড়ে। এতে ব্রিজটির মাঝের অংশ ভেঙ্গে গিয়ে এক পাশ কাত হয়ে হেলে আছে। ব্রিজের গাইড ওয়াল ও মাঝের পিলার থেকে টপভাগ (উপরিভাগ) সম্পূর্ণ ভাবে ভেঙ্গে কোন রকমে রডের সাথে ঝুলে আছে।
মাটি খননের কারণে বর্ষা মৌসুমে ব্রিজ সহ আশে পাশের বাড়ি ঘরের চারপাশ ভেঙ্গে গেছে, প্রতিদিন স্থানীয় ৬টি ইউয়িনের কয়েক হাজার মানুষ ও শত শত যানবাহন রাজবাড়ী থেকে দৌলতদিয়া হয়ে ঢাকা যেতে ব্রিজটি ভেঙ্গে পড়ায় এই পথটি এখন পুরোপুরি চলাচল অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে।
স্থানীয়দের কৃষি পন্য, সবজি ও মালামাল পরিবহন নিয়ে কৃষকরা পরেছের মারাত্বক দুর্ভোগে। জেলা ও উপজেলায় চিকিৎসা সেবা নিতে অসুস্থ রোগীরা পড়েছেন সমস্যায়।
গত ৫মাস হলেও এখন এই স্থানে চলাচলের কোন ধরনের বিকল্প বা নতুন করে ব্রিজ নির্মানের কোন উদ্যোগ নেয়নি কতৃপক্ষ। ঝুকি পূর্ণ হিসেবে এখনও টাঙ্গানো হয়নি কোন নোটিশ।
এলাকাবাসি, চালক ও যাত্রীরা বলেন, ব্রিজটি হেলে পড়ায় দীর্ঘ পথ ও সময় নষ্ট করে এসব পন্য পৌছাতে হচ্ছে গন্তব্যে। ছোট যানবাহন গুলো যাত্রী নামিয়ে পার হতে হচ্ছে। দ্রুত ব্রিজটি নির্মান করার অনুরোধ জানান ভুক্তভোগী মানুষ গুলো।
গোয়ালন্দ উপজেলা প্রকৌশলী বজলুর রহমান খান বলেন, ব্রিজটি পরিদর্শনের পর নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে। দ্রুত ব্রিজটি নির্মানে তারা চেষ্টা করছেন।
গোয়ালন্দ উপজেলা চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তফা মুন্সি বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সহ তিনি ব্রিজটি পরিদর্শন করেছেন। জনগনের ভোগান্তি দূর করতে দ্রুত ব্রিজটি নির্মানে কাজ করছেন।
গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আজিজুল হক খান মামুন বলেন, ব্রিজটির দুরাবস্থা তিনি দেখেছেন। দ্রুত ব্রিজটি নির্মানের উপজেলা প্রকৌশলী নতুন করে নির্মান খরচ নিরুপন করে সংশ্লিষ্ট কতৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছেন। তবে জনগনের ভোগান্তি রোধে বেইলী ব্রিজ নির্মান করা যায় কিনা প্রধান প্রকৌশলীর সাথে আলোচনা করবেন।