সান্তিয়াগো বের্নাবেউয়ে রোববার রাতে লা লিগার ম্যাচে গ্রানাদাকে ১-০ গোলে হারিয়েছে রিয়াল। লিগ টেবিলে সেভিয়ার চেয়ে ৬ পয়েন্টে এগিয়ে গেল তারা।
আসরে প্রথম দেখায় গত নভেম্বরে গ্রানাদার মাঠে ৪-১ গোলে জিতেছিল রিয়াল। এবার পেল ঘাম ঝরানো জয়।
লিগে আগের পাঁচ ম্যাচের মাত্র দুটিতে জয়ী রিয়াল এদিন শুরুতেই বিপদে পড়তে পারত। তবে ডি-বক্সের মুখ থেকে আন্তোনিও পুয়ের্তাসের শট কোনোমতে পা দিয়ে ঠেকান গোলরক্ষক থিবো কোর্তোয়া।
প্রথম ২০ মিনিটে রিয়াল ৭৫ শতাংশ বল দখলে রাখলেও আক্রমণে তেমন কিছু করতে পারছিল না তারা। এই সময়ে গোলের উদ্দেশ্যে কোনো শটই নিতে পারেনি দলটি।
একটু একটু করে গুছিয়ে ওঠা রিয়াল মাঝমাঠ থেকে পাসিং ফুটবলে আক্রমণে উঠছিল। কিন্তু গ্রানাদার রক্ষণ ছিল জমাট। ৩০তম মিনিটে প্রতিপক্ষের ভুলে গোল পেতে পারত তারা। টনি ক্রুসের দারুণ ক্রস ডি-বক্সে পেয়ে শট নেন দানি কারভাহাল, ঠেকাতে পা বাড়ান ডিফেন্ডার নেভা। তার পায়ে লেগেই বল ক্রসবারে বাধা পায়।
৪৩তম মিনিটে দারুণ একটি সুযোগ পায় রিয়াল। তবে আসেনসিওর বুলেট গতির শট ঝাঁপিয়ে ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক লুইস মাক্সিমিয়ানো। কয়েক সেকেন্ড পেয়ে ডি-বক্সে বল পেয়ে জোরাল ভলি মারেন ইসকো, তবে বল চলে যায় গোলরক্ষক বরাবর। প্রথমার্ধে দলটির এই দুটি শটই লক্ষ্যে ছিল।
বিরতির পরও চাপ ধরে রাখে রিয়াল। কিন্তু করিম বেনজেমা ও ভিনিসিউস জুনিয়রের অনুপস্থিতিতে প্রতিপক্ষের ডি-বক্সে একজন কার্যকর স্কোরারের শূন্যতা বারবার ফুটে ওঠে প্রকটভাবে। ৬১তম মিনিটে আসেনসিওর আরেকটি শট ঠেকিয়ে দেন মাক্সিমিয়ানো।
বিলবাওয়ের বিপক্ষে দল আক্রমণে চরম ব্যর্থ হলেও এদেন আজার-লুকা ইয়োভিচদের বদলি না নামানোয় সমালোচনার মুখে পড়েন আনচেলত্তি। এদিন আর কোনো দ্বিধা করেননি তিনি। ৬৫তম মিনিটে রদ্রিগোকে তুলে বেলজিয়ান ফরোয়ার্ডকে ও ইসকোর জায়গায় ইয়োভিচকে নামান কোচ।
অবশেষে ৭৪তম মিনিটে ডেডলক ভাঙতে পারে তারা। এই দফায় প্রথম আক্রমণ ভেস্তে যাওয়ার পর এদের মিলিতাও ডি-বক্সের বাইরে প্রতিপক্ষের একজনের থেকে বল কেড়ে আরেকটু পেছনে আসেনসিওকে বাড়ান। জায়গা বানিয়ে প্রায় ২০ গজ দূর থেকে জোরাল শটে দলকে এগিয়ে নেন স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড।
১০ মিনিট পর আরেকটি দারুণ সুযোগ তৈরি করেন আসেনসিও। তবে এবার তার শটটি ঝাঁপিয়ে ঠেকাতে ভুল করেননি ম্যাচজুড়ে ব্যস্ত সময় কাটানো মাক্সিমিয়ানো।
প্রথমার্ধে কেবল চারটি শট নেওয়া রিয়াল এই অর্ধে নেয় আরও ২০টি শট! সব মিলিয়ে মোট ১১টি লক্ষ্যে রাখতে পারে তারা। ঘর সামলাতে ব্যস্ত গ্রানাদা পুরো ম্যাচে নিতে পারে সাতটি শট, যার তিনটি লক্ষ্যে। এই তিনটিই বিরতির আগে। এতেই দ্বিতীয়ার্ধে চিত্র ফুটে ওঠে।
লিগে টানা ১১ ম্যাচ অপরাজিত থেকে উড়তে থাকা রিয়াল নতুন বছরের শুরুতেই গেতাফের মাঠে হেরে বসে। ওই সময় থেকে তাদের পথচলাটা যেন অম্ল-মধুরে ঠাসা।
ওই হারের পর ভালেন্সিয়াকে উড়িয়ে তারা পা রাখে সৌদি আরবে। সেখানে টানা দুই জয়ে স্প্যানিশ সুপার কাপ জিতে লিগে ফিরেই এলচের মাঠে হোঁচট খায়। আন্তর্জাতিক বিরতি শেষে ফিরে গত বুধবার কোপা দেল রের শেষ আটে বিলবাওয়ের বিপক্ষে বাজে পারফরম্যান্সে হেরে ছিটকে যায় তারা। এবার এখানে মিলল কষ্টের জয়।
২৩ ম্যাচে ১৬ জয় ও পাঁচ ড্রয়ে ৫৩ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে রিয়াল। সেভিয়ার পয়েন্ট ৪৭। তিন নম্বরে রিয়াল বেতিসের পয়েন্ট ৪০।
দিনের অন্য ম্যাচে আতলেতিকো মাদ্রিদকে ৪-২ গোলে উড়িয়ে দেওয়া বার্সেলোনা ২২ ম্যাচে ৩৮ পয়েন্ট নিয়ে আছে চতুর্থ স্থানে। তাদের সমান ম্যাচে ৩৬ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচ নম্বরে গতবারের চ্যাম্পিয়নরা।