সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা: মো: আব্দুল আজিজ বলেছেন, আজ থেকে তাড়াশ একটি কলঙ্ক থেকে মুক্ত হলো। সিরাজগঞ্জের তাড়াশ পৌর বাজারের ফলক উন্মোচনের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে রাজাকার মোড় নাম পাল্টিয়ে মুক্তিযোদ্ধা মোড় নামে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
শনিবার দুপুরে ১১ টায় ওই মোড়ে মুক্তিযোদ্ধা-জনতায় মিলন মেলায়পরিণত হয়। তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মেজবাউল করিমের সভাপতিত্বে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোড়ের ফলক উন্মোচন করেন সিরাজগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা: মো:আব্দুল আজিজ।
উদ্বোধন শেষে সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা: মো: আব্দুল আজিজ বলেন, আজ থেকে তাড়াশ একটি কলঙ্ক থেকে মুক্ত হলো। স্বাধীনতার ৫১ বছর পর হলেও একজন চিহিৃত যুদ্ধাপরাধীর নামের পরিবর্তে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোড় নাম করায় আনন্দ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মো: আরশেদুল ইসলাম, মো: আব্দুর রহমান, আব্দুল কুদ্দুস, মো: আব্দুর রাজ্জাক, মো: আব্দুস সোবাহান, সাইদুর রহমান সাজু, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জিত কর্মকার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোছা: লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস, অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: ফজলে আশিক, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো: আনোয়ার হোসেন খাঁন, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রভাষক মর্জিনা ইসলাম, যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফরহাদ আলী বিদ্যূৎ, ছাত্রলীগের সভাপতি ইকবাল হাসান রুবেল সহ অন্যান্যরা।
তাড়াশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা গাজী আরশেদুল ইসলাম বলেন, ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ কালোরাত্রি পর যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয় তাড়াশ থানার মুক্তিকামী ছাত্র জনতা। ২৮ এপ্রিল পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর আক্রমনে তাড়াশের পতন হয়। এ সময় তাড়াশ থানার সোনাপাতিল গ্রামের আজগর আলী আকন্দের ছেলে আলেপ আকন্দ রাজাকার কমান্ডারের নাম লেখায়। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী কে সহায়তা করে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন। হত্যা, লুট ও বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেয়ার অভিযোগে তাকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে তালিকা ভূক্ত করা হয়। ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যূদয় হলে আলেপ রাজাকার পালিয়ে যায়। ১৯৭৫ সালে জাতির জনকের নির্মম হত্যাকান্ডের পর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বিরোধী শক্তি রাষ্ট্র ক্ষমতায় আসলে, আলেপ আকন্দ তাড়াশে ফিরে এসে ওই জায়গা কিনে বসবাস করতে থাকে। সেই থেকে আলেপ রাজাকারের নামে মোড়টির নাম হয়ে যায় আলেপ মোড়।
তাড়াশ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো: মেজবাউল করিম বলেন, বিষয়টি নিয়ে আইন শৃঙ্খলা কমিটিতে একাধিক বার তোলেন মুক্তিযোদ্ধা সহ শহীদ পরিবারের সদস্যরা। যার ফলে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে সকল মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে মোড়টির নাম করণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা মোড় ’ নামে। স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তী ও মুজিব জন্ম শতবার্ষিকীতে একজন চিহ্ণিত রাজাকারের নামে একটি মোড়ের নাম থাকতে পারে না, সে কারণেই এ কলঙ্ক মোচন করতে তাড়াশ পৌরসভার অর্থায়ণে এ উদ্যোগ নেয়া হয়।