‘মুখ ফসকে’ বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়াকে উন্নয়নের কারিগর বলা যশোরের মনিরামপুর উপজেলার চালুয়াহাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল হাইকে দলীয় পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
আব্দুল হাইয়ের বক্তব্যের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। বিষয়টি নজরে আসার পর গত (২৯ মার্চ) মনিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ কাজী মাহমুদুল হাসান তাকে দল থেকে অব্যাহতি দেন।
তবে উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় প্যাডের অব্যাহতি পত্রে সভাপতির স্বাক্ষর থাকলেও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষর নেই বলে জানা গেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে মনিরামপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক ফারুক হোসেনের সভাপতিত্বে দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় চালুয়াহাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক আবদুল হাই তার বক্তব্যের এক পর্যায়ে মুখ ফসকে বলেন- ‘দেশের উন্নয়নের কারিগর হলেন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া’।
এ সময় পাশ থেকে কেউ একজন তার ভুল ধরে দিলে আব্দুল হাই দুঃখ প্রকাশ করেন এবং বক্তব্য শুধরে নিয়ে বলেন- ‘দেশের উন্নয়নের কারিগর দেশরত্ন শেখ হাসিনা।’
এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ও মনিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান নাজমা খানম, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা মিকাইল হোসেন, সাবেক পৌর কাউন্সিলর গৌর কুমার ঘোষ, সাবেক জেলা ছাত্রলীগ নেতা সন্দীপ ঘোষ, উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক তপন বিশ্বাস পবন প্রমুখ।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক ফারুক হোসেন বলেন, বক্তব্যের সময় আবদুল হাই মুখ ফসকে যা বলেছেন সেটা অবশ্যই অন্যায়। তবে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ব্যক্তিগতভাবে কাউকে বহিষ্কার করতে পারেন না।
আব্দুল হাইকে সাময়িক বহিষ্কারের বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যক্ষ কাজী মাহমুদুল হাসান বলেন, দলের সভায় রেজুলেশন করে কেন্দ্রীয় কমিটির কাছে সুপারিশ পাঠানো হলে দলের সভাপতি শেখ হাসিনাই পারবেন স্থায়ী বহিষ্কার করতে।
এ বিষয়ে আবদুল হাই সাংবাদিকদের বলেন, আমি তৃণমূল আওয়ামী লীগের কর্মী। দলের জেলা ও উপজেলার শীর্ষ নেতারা আমাকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের পদ দিয়েছে। ২৫ মার্চ গণহত্যা দিবসে সভায় মুখ ফসকে যা বলেছি, তাক্ষণিকভাবে ‘সরি’ বলে শুধরে নিয়েছি। তারপরও কেউ যদি ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে আমাকে পদ থেকে অব্যাহতি দেয়, তবে সেখানে আমার কিছু বলার নেই। পদ-পদবী না থাকলেও আমি শেখ হাসিনার একজন সৈনিক ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শ মেনে চলব।
উল্লেখ্য, আবদুল হাই এর আগে বিএনপির সক্রিয় কর্মী ছিলেন বলে এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে। ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর স্থানীয় সংসদ সদস্য প্রয়াত খান টিপু সুলতানের হাতে ফুলে দিয়ে তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন বলে জানা গেছে।