প্রতিবেশী ভারতে আবারও বাড়ছে সংক্রমণ বাড়ছে। ফলে বাংলাদেশেও সেই বাতাস আসতে পারে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
রোববার রাজধানীর মহাখালীতে জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানে (নিপসম) জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
এবারের প্রতিপাদ্য ‘সঠিক পুষ্টিতে সুস্থ জীবন’। গতকাল শনিবার থেকে শুরু হওয়া এই কার্যক্রম চলবে ২৯ এপ্রিল পর্যন্ত।
অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে আছে। মৃত্যুও শূন্যের কোঠায়। এটি আমাদের ধরে রাখতে হবে। তাই সবাইকেই সচেতন থাকতে হবে। সংক্রমণ যেন আবার না বাড়ে।
তিনি বলেন, ভারতে নতুন করে আবারও সংক্রমণ বাড়ছে, ওই দেশে যারা যাতায়াত করছে, তাদের দিকে নজর দিতে হবে।
দেশের প্রায় ১৩ কোটি মানুষ এখন টিকার আওতায় উল্লেখ করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের অনেক উন্নত দেশও এত টিকা দিতে পারেনি। এখনও যারা টিকা নেয়নি, তারা ইচ্ছাকৃত নিচ্ছেন না।
গত ১০ বছরের স্বাস্থ্য বিভাগের অভূত উন্নতি হয়েছে জানিয়ে জাহিদ মালেক বলেন, দেশ এগিয়ে যেতে হলে মানুষকে সুস্থ থাকতে হবে। এ জন্য পুষ্টি অপরিহার্য। আমাদের দেশে পুষ্টি সেবার অনেক উন্নতি হয়েছে। প্রাইমারি হেলথ কেয়ারে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্য সেবা পৌঁছে দিয়েছে সরকার। সেখানে চিকিৎসার পাশাপাশি পুষ্টি নিয়ে সচেতন করা হয়। অতিরিক্ত তেল ও লবণ খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে, শাকসবজি ও ফলমূল খেতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা কী খাচ্ছি সেটা দেখতে হবে। সংক্রমণ ব্যাধি যক্ষ্মা, পোলিও, ম্যালেরিয়া, এইডস নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। অন্যদিকে অসংক্রামক রোগ যেগুলো মানুষের খাদ্যাভ্যাস ও জীবনাচারের সঙ্গে সম্পৃক্ত সেগুলো বাড়ছে। আমাদের পরিমিত খেতে হবে। পুরো দেশে যখন করোনা ছড়িয়ে পড়ে, তখন ভিটামিন সি, ডি ও জিংক খেতে বলি। এতে প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।
ক্যালরিতে ভারত-পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে আছে উল্লেখ করে জাহিদ মালেক বলেন, এখনও ১০-১৫ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে, কিন্তু কেউ না খেয়ে থাকে না। খাদ্যের অভাব যাতে না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। দেশে খর্বাকৃতির মানুষের হার যেখানে আগে ৫০ শতাংশ ছিল, এখন তা নেমে এসেছে ৩০-এ। স্কুল ফিডিং জোরদারের চেষ্টা করছে সরকার। ছেলেমেয়েদের পুষ্টি সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। ফার্স্টফুড খাবার থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করতে হবে।
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মীরজাদী সেব্রিনা ফ্লোরা, অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবীর, স্বাচিপ মহাসচিব অধ্যাপক ডা. আবদুল আজিজ, সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আরসলান, বিএমএ মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী, জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসির উদ্দিন মাহমুদ এবং জাতীয় পুষ্টি পরিষদের ভারপ্রাপ্ত মহাপরিচালক ডা. জুবাইদা নাসরিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।