সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনেই আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে দৃঢ় অবস্থান নিয়েছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দল। এই নির্বাচন ব্যাহত করার যে কোনো ষড়যন্ত্র প্রতিহত করার প্রত্যয়ও ব্যক্ত করা হয়েছে জোটের পক্ষ থেকে।
বুধবার (১৯ জুলাই) রাতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে ১৪ দলের সভায় এ অবস্থান ও প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়। ১৪ দলের নেতা এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে ১৪ দলের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে এ সব তথ্য জানা গেছে।
এ সভায় আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিএনপির আন্দোলন এবং নির্বাচন নিয়ে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন তৎপরতা নিয়ে আলোচনা হয়। আগামী নির্বাচনসহ দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে বলে সভায় জানানো হয়েছে। এ ছাড়া দ্রব্য মূল্যের উর্দ্ধগতি, জনজীবনে বিভিন্ন সংকট নিয়েও জোটের নেতারা কথা বলেছেন বলে জান যায়।
সূত্র জানায়, সভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন সংবিধান অনুযায়ী যথা সময়ে আগামী জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচন বানচালের জন্য ইতোমধ্যে বিভিন্ন ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। এ সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন করতে ১৪ দলকে ঐক্যবদ্ধভাবে সক্রিয় ভূমিকা রাখতে হবে। নির্বাচনে ১৪ দলগতভাবে আমরা অংশগ্রহণ করবো। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে হলে সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখতে হবে।
এ সভায় ১৪ দলের নেতারাও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এক মত পোষণ করেছেন ও সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে তাদের অবস্থান তুলে ধরেছেন। এ সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে আগামী সেপ্টেম্বর থেকে ১৪ দল ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনি প্রচার ও ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে মাঠে নামার। আগস্ট মাস শোকের মাস, শোকের কর্মসূচির ওপরই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে।
১৪ দলের নেতারা বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন অবশ্যই সংবিধান অনুযায়ী অনুষ্ঠিত হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারই এই সময় দায়িত্বে থাকবে। বিএনপি-জামায়াত যাতে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্রে সফল হতে না পারে। সকল ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করতে হবে।
১৪ দলের এ সভায় থেকে একটি প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়েছে। গৃহীত প্রস্তাবে বলা হয়, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসীম সাহসিকতা প্রজ্ঞা, সততা ও দক্ষতা নিয়ে যখন বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তখন বাংলাদেশকে তার সৃষ্টির মূল আদর্শ থেকে জাতিকে বিচ্যুত করার এক সুগভীর ষড়যন্ত্র চলছে। চক্রান্তকারীরা অপশক্তির সহায়তায় বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে বিদেশি শক্তির অপ্রয়োজনীয় হস্তক্ষেপকে উৎসাহিত করছে।
কেন্দ্রীয় ১৪ দলের সভায় দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রস্তাবে আরও উল্লেখ করা হয়, কেন্দ্রীয় ১৪ দল মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ। জনগণের স্বার্থ পরিপন্থি কোনো প্রকার অসাংবিধানিক ষড়যন্ত্রের সঙ্গে ১৪ দলীয় জোট কখনো আপস করবে না। কেন্দ্রীয় ১৪ দল রাজপথে থেকে সকল প্রকার অপশক্তিকে মোকাবেলা করবে। একই সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে বাংলাদেশকে বিনির্মাণের লক্ষে জোটগতভাবে আগামী জাতীয় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।
এদিকে সূত্র আরও জানায়, সভায় ১৩ দলের নেতা ও ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনুসহ অনেকেই নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কথা তুরে ধরেছেন। এর জন্য বাজার সিন্ডিকেটকে দায়ী করেছেন। এই বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে দ্রব্যমূল্যে নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য তারা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অনুরোধ জানিয়েছেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, দ্রব্যমূল্যে নিয়ন্ত্রণ ও জনগণের স্বস্তিতে রাখতে সরকার সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপ অব্যাহত থাকবে বলে তিনি জানিয়েছেন।