সিলেট সদর উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধে শহীদ আজমান আলীর পরিবারের এক সদস্যকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) রাত ৩টার দিকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
নিহত তাজুল ইসলাম (৪০) উপজেলার হাটখোলা ইউনিয়নের দখড়ি গ্রামের উস্তার আলীর ছেলে।
এর আগে রোববার (৩১ মার্চ) সন্ধ্যা ৬টার দিকে তাজুলসহ পরিবারের চার সদস্যকে কুপিয়ে জখম করে সাজিদ গংরা।
নিহত তাজুল মহান মুক্তিযুদ্ধে শহীদ আজমান আলীর আপন ভাতিজা। এ ঘটনায় জালালাবাদ থানায় মামলা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, উত্তর সিলেট তথা বৃহত্তর শিবের বাজার এলাকার ‘আলতা বাহিনী’ ও ‘সাজিদ বাহিনী’ নানা অপকর্মের কারণে এক সময় বেশ আলোচিত ছিল। আলতা বাহিনীর প্রধান আলতা ও তার ছেলের মৃত্যুর পর ‘সাজিদ বাহিনী’ এলাকায় পুনরায় সংঘটিত হচ্ছে।
নিহতের চাচা আজবর আলী জানান, সাজিদ বাহিনী মুক্তিযুদ্ধে শহীদ আজমান আলীর পরিবারের বেশ কিছু জমি জবরদখল করে রাখে। সম্প্রতি আরও কিছু জমিজমা দখলে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এর জের ধরে গত রোববার ইফতারের ঠিক আগমহূর্তে আজবর আলীর ওপর সাজিদ আলীর নেতৃত্বে মাখন, দুদু, আমিরসহ কয়েকজন হামলা চালায়। এ সময় আজবর আলীকে বাঁচাতে তার ছেলে জামাল ও তার ভাতিজা তাজুল ইসলাম এগিয়ে এলে তাদেরও গুরুতর আহত করা হয়। এর মধ্যে তাজুলের অবস্থা সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা।
তাকে প্রথমে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হলেও শারীরিক অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে যাওয়া যায়নি। অবশেষে বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে সিলেট ওসমানী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাজুলের মৃত্যু হয়।
তাজুল ইসলামের স্ত্রী, ২ মেয়ে ও ২ ছেলে রয়েছেন। এ ঘটনায় জালালাবাদ থানায় আজবর আলী বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন।
নিহতের ছোট ভাই নজরুল ইসলাম জানান, তিনি দুবাই ছিলেন। সাজিদ বাহিনীর হামলায় বড় ভাই গুরুতর আহত হওয়ার খবর পেয়ে দেশে আসেন। মূলত জমিজমা দখল করে রেখেছে এ বাহিনী। আরও জমিজমা দখলের চেষ্টা করছে তারা। এর অংশ হিসেবে তারা তার ভাই তাজুলকে হত্যা করে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এ ব্যাপারে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জালালাবাদ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রেজোয়ান আহমেদ জানান, তিনি ওসমানী হাসপাতালে রয়েছেন। নিহত তাজুলের ময়নাতদন্তের ব্যবস্থা করছেন।
জালালাবাদ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান জানান, ৪ থেকে ৫ দিন আগে মারামারির ঘটনায় মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে একজন মারা গেছেন। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, নিহত তাজুল শহীদ পরিবারের সন্তান কিনা জানা নেই। আসামি ধরতে তিনি সর্বাত্মক চেষ্টা করবেন।