ঈদ মানেই খুশি। আর ঈদ এলেই সবচেয়ে বেশি খুশি হয় শিশুরাই।
ঈদকে ঘিরে বাবা-মার কত পরিকল্পনা থাকে শিশুদের নিয়ে। নতুন জামা-কাপড়, ঈদ সেলামি পেয়ে এবং পরিবারের সঙ্গে ঘুরতে যাওয়াসহ বিভিন্ন বিনোদন উপভোগ করে শিশুরা। তবে সব শিশুর ভাগ্য এক রকম হয় না। আমাদের আশপাশে অনেক শিশুই রয়েছে ঈদে নতুন পোশাক পড়তে পারে না। তাদের ঈদের দিনের সময় কাটে কাজ করে।
বৃহস্পতিবার (১১ এপ্রিল) সারাদেশে পালিত হচ্ছে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদুল ফিতর। আর ঈদে বিনোদন কেন্দ্রগুলো দর্শনার্থীদের ভিড় থাকে লক্ষণীয়।
এদিন দুপুরে চাঁদপুর শহরের পর্যটন কেন্দ্র তিন নদীর মোহনা বড়স্টেশন মোলহেডে সকাল থেকে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে হাজারও মানুষ ঘুরতে এসেছে। সেখানে পরিবার পরিজন নিয়ে ঘুরছে শিশুরা। তবে সেই আনন্দ উল্লাস নেই সুবিধাবঞ্চিত পথ শিশুদের। কেউ হাত পেতে টাকা চাইছে, আবার কেউ হকারি করে ব্যস্ত সময় পার করছে। তাদেন চোখে মুখে নেই ঈদের হাসি। ঈদ আসে, ঈদ যায়, কিন্তু সেই ঈদ কখনই তাদের জন্য উৎসব হয়ে উঠে না।
চাঁদপুর শহরের যমুনা রোড এলাকার আইজুল গাজী (১৩)। বড়স্টেশন মোলহেডে বসে খেলনা বিক্রির হকারি করছে সে। তার বাবা দুলাল গাজী পেশায় রিকশাচালক। পরিবারের অস্বচ্ছলতার কারণে পড়াশোনা করতে পারেনি সে।
আইজুল জানায়, তিন ভাইয়ের মধ্যে আইজুল মেঝো। যমুনা রোডে ছোট ঘরেই বসবাস তার। সারাদিন রিকশা চালিয়ে তার জন্য একটি শার্ট কিনে দিয়েছে তার বাবা। সেই শার্ট গায়ে দিয়ে হকারি করছে। আগে বড়স্টেশন মোলহেডে মানুষের কাছ টাকা চাইতো কিন্তু ঈদের দিন বলে আরেক জনের ব্যবসায় হকারি করছে। ঈদের সেলামি দেওয়ার মতো তার কেউ নেই।
আরেক শিশু লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার সেলিম বেপারী (১২)। ঈদের দিন তাকে দেখা গেলো চটপটি দোকানের চামচ বাটি পরিষ্কার করতে। সেলিমের পরিবার থেকেও যেন নেই। ঈদের দিন পরিবারের সঙ্গে না কাটিয়ে চটপটির দোকানে কাজ করছে।
অন্যদিকে বড়স্টেশন এলাকার সিয়াম (১২)। সে পরিবারকে সহায়তা করতে নিজ উদ্যোগে বাচ্চাদের খেলার দোকান দিয়েছে। যেই সময়ে নিজের খেলাধুলা করার সময়, সেই সময় নিজেই বিক্রি করছে বিভিন্ন ধরনের খেলনা।
সিয়াম বলেন, ঈদের দিন অনেক মানুষ ঘুরতে আসে। এই সময় বিক্রি ভালো হয়। আমার সব বিক্রি হলে আমি খুশি। আমারও ঘুরতে মন চায়, কিন্তু টাকা দিবে কে। এগুলো বিক্রি হলে তখন খাবো-ঘুরবো।