মেট্রোরেল ঢাকার জনজীবনে স্বস্তি ফেরালেও মাঝেমধ্যেই উঠে আসছে ব্যবস্থাপনার ত্রুটি। মেট্রোরেল বিকল হয়ে যাত্রী চলাচলে বিলম্ব, টিকেট বিক্রির ভেন্ডিং মেশিনও মাঝেমধ্যেই হচ্ছে বিকল।
এবার মেট্রোস্ট্রেশনগুলোর সামনের ফুটপাত দখল করে অবৈধ দোকানের কারণে সিঁড়ি দিয়ে যাত্রী চলাচলে হচ্ছে ভোগান্তি।
সোমবার (২২ এপ্রিল) মেট্রোরেলের শাহবাগ, সচিবালয়, মতিঝিল, কাওরানবাজার, মিরপুর ১১ স্টেশনে ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।
দেখা যায়, শাহবাগ স্টেশনের রাস্তার দুই পাশের সিঁড়ির মুখের ফুটপাতে সব মিলিয়ে ২০টির বেশি ভ্রাম্যমাণ দোকান দেখা গেছে। ফলে যাত্রীদের মেট্রোরেলে উঠতে ও নামতে ভোগান্তি পোহাতে দেখা গেছে।
পাশেই শাহবাগ মোড়ের পুলিশ বক্সে একাধিক পুলিশ দায়িত্ব পালন করলেও অবৈধ দোকানের দিকে কারও নজর নেই।
একই চিত্র দেখা গেছে বাংলাদেশ সচিবালয়, মতিঝিল, কাওরানবাজার ও মিরপুর ১১ মেট্রোস্টেশনেও। এসব স্টেশনের ওঠা-নামার সিঁড়িগুলোতে দেখা গেছে প্রতিটি সিঁড়ির মুখেই পাঁচ থেকে সাতটি দোকান রয়েছে।
ভোগান্তির বিষয়ে মেট্রোরেলের নিয়মিত যাতায়াতকারী শেখ তৌফিক বলেন, শাহবাগের মেট্রোরেলের সিঁড়িগুলোতে অসংখ্য ভ্রাম্যমাণ দোকান থাকায় মেট্রোরেলে উঠতে নামতে অসুবিধা হয়। কর্তৃপক্ষের উচিত এ বিষয়ে নজর দেওয়া।
মিরপুরের বাসিন্দা আশিক কুণ্ডু বলেন, মিরপুর ১০ নম্বর স্টেশন থেকে নেমে হাঁটার পথে ফুটপাতের একদিকে জঞ্জাল, অন্যদিকে দোকানপাট বেশি থাকায় যাত্রীদের চলাফেরায় অনেক সমস্যা হয়। এদিকে নজর দেওয়া প্রয়োজন।
এ বিষয়ে মেট্রোস্টেশন এলাকার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এমআরটি পুলিশ কর্তৃপক্ষ বলছে, জনবল সংকটের কারণে তারা মেট্রোরেলের বাইরের এলাকায় নিরাপত্তায় নজর দিতে পারছে না।
সংস্থাটি জানিয়েছে, ২০টি মেট্রোস্টেশনের নিরাপত্তায় দায়িত্ব পালন করছেন মাত্র ৫০৮ জন সদস্য। এ কারণে প্রতিটি স্টেশনে ১০ জনের বেশি এমআরটি পুলিশ সদস্য দায়িত্ব দেওয়ার সুযোগ নেই।
এ বিষয়ে এমআরটি পুলিশের পরিদর্শক সোহেল চৌধুরী বলেন, আমাদের পুলিশের জনবল কম। আমরা মূলত অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা দেখছি। মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষ যদি কোনো অভিযান পরিচালনা করে, তাহলে আমরা তাদের সঙ্গে অভিযানে থাকব।
এমআরটি পুলিশের মুখপাত্রের দায়িত্বে থাকা এএসপি মাহমুদ খান বাংলানিউজকে বলেন, জনবল সংকটের কারণে অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার বাইরে গ্রাউন্ড কাজ করতে পারছি না। তারপরও ডিএমটিসিএল ম্যাজিস্ট্রেট, ডিএমপির সঙ্গে মিলিয়ে অভিযান চালালে আমরা সহযোগিতা করছি।
সম্প্রতি অবৈধ দোকানের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করেছেন এ কর্মকর্তা৷ একই সঙ্গে অবৈধ দোকান বেড়ে যাওয়ায় অভিযান জোরদার করা হবে বলেও জানান তিনি।
এমআরটি পুলিশের এসপি শফিকুল ইসলাম বলছেন, ডিএমটিসিএল, ডিএমপি ও এমআরটি পুলিশ সবারই দায়িত্ব রয়েছে অবৈধ দোকান উচ্ছেদের।
মোবাইল ফোনে এ ব্যাপারে জানতে কল দেওয়া হয় ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের মহাব্যবস্থাপক (অপারেশন) মোহাম্মদ ইফতিখার হোসেনকে। কিন্তু তিনি প্রশ্ন শুনেই কোনো উত্তর না দিয়ে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।