ঈদের দ্বিতীয় দিনও চামড়া আসছে পোস্তায়, লোকসানে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা ঈদের দ্বিতীয় দিনও চামড়া আসছে পোস্তায়, লোকসানে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা – Sabuj Bangla Tv
  1. shahinit.mail@gmail.com : admin :
  2. khandakarshahin@gmail.com : সবুজ বাংলা টিভি : সবুজ বাংলা টিভি
  3. wpapitest@config.com : wpapitest :
রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ০১:৫৫ পূর্বাহ্ন
নোটিশ-
বাংলাদেশের প্রথম অনলাইন টিভি চ্যানেল সবুজবাংলা টিভি এর জেলা/উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে...

ঈদের দ্বিতীয় দিনও চামড়া আসছে পোস্তায়, লোকসানে মৌসুমি ব্যবসায়ীরা

সবুজ বাংলা টিভি
  • প্রকাশ কাল | সোমবার, ৯ জুন, ২০২৫
  • ৩০ পাঠক

ঈদের দ্বিতীয় দিনেও ঢাকাও এর আশপাশের কোরবানি হওয়া পশুর চামড়া আসছে পুরান ঢাকার লালবাগের পোস্তায়। আড়তদাররা মৌসুমি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে দুপুরের পর থেকেই চামড়া কেনা শুরু করেছেন।
সরকার নির্ধারিত দামের চেয়েও কমে বিক্রি হচ্ছে গরু ও ছাগলের চামড়া। দাম কম থাকায় লোকসানে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। তবে এখন পোস্তায় ফড়িয়াদের আনাগোনা কমেছে, বেড়েছে মাদরাসা কেন্দ্রিক মৌসুমি ব্যবসায়ীদের আনাগোনা।

রোববার (০৮ জুন) পোস্তা এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রাজধানীসহ আশপাশের এলাকা থেকে আজও দুপুরের পর পোস্তায় কাঁচা চামড়া আসতে শুরু করে। আর আড়তদারদের হাঁকডাকে সরব হয়ে উঠেছে লালবাগের শায়েস্তা খান, রাজ নারায়ণ ধর রোডসহ আশপাশের বিভিন্ন রোড। মৌসুমি ব্যবসায়ীদের পাশাপাশি মাদরাসা ও এতিমখানার প্রতিনিধিরা ট্রাক, ভ্যান ও রিকশায় করে কাঁচাচামড়া নিয়ে আসেন। আড়তদারেরা সেই চামড়া দরদাম করে কেনেন। তবে এ বছর ঈদের দ্বিতীয় দিন অনেক পশু কোরবানি হয়েছে তাই চামড়াও অনেক আসছে বলে জানান ব্যবসায়ীরা। এখানে চামড়া সংগ্রহের পর প্রথমে লবণজাত করা হবে। পরে তারা সাভারের ট্যানারিগুলোতে পাঠিয়ে দেবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (বিএইচএসএমএ) মহাসচিব টিপু সুলতান বাংলানিউজকে বলেন, ঈদের দ্বিতীয় দিনও ঢাকা শহর ও এর আশেপাশের এলাকায় কিছু পশু কোরবানি হয়। সে চামড়াটাও আজকে দুপুর থেকে আসতে শুরু করেছে। মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া যত তাড়াতাড়ি আমাদের কাছে আনবেন তত ভালো। আমরা আগেও বলেছি চামড়া কেনার সময় যেন ভেবেচিন্তে কেনে। চামড়ার মান বুঝে আমরা দাম দেব।

তিনি বলেন, ঈদের দিন দিনের বেলায় যেসব চামড়া এসেছে সেগুলো ভালো চামড়া। এসব চামড়ার দাম এক হাজার থেকে ১২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। কিন্তু রাত ৯টার পর যে চামড়াগুলো আসে সেগুলোর টেম্পার চলে যায়। তখন আড়তদাররা নিতে চায় না, তখন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা হাতে পায়ে ধরে চামড়া দিয়ে যান। তখন আড়তদাররা এভারেজে একটা দাম দিয়ে দেন। না হলে তো সেই চামড়াগুলো পচে যাবে। এজন্য বলে চামড়ার দাম কমেছে। আসলে ভালোটার দাম ভালো, মন্দটার দাম একটু কমই থাকে।

রাজধানীর উত্তরার থেকে মৌসুমি ব্যবসায়ী মো. আব্দুল রশিদ বাংলানিউজকে বলেন, কোরবানি দাতাদের থেকে ৭৫০ টাকায় চামড়া সংগ্রহ করে রীতিমতো বিপদে পড়েছি। পোস্তায় সেই চামড়া বিক্রি করেছি ৮৫০ টাকায়। একেবারে ছোট চামড়ার দাম ৪৫০ থেকে ৫০০ টাকা। আর সবচেয়ে বড় চামড়ার দাম এক হাজার টাকা পর্যন্ত দাম দিচ্ছে। কিন্তু আমরা এখন আর চামড়া কিনতে পারি না মাদরাসার জন্য। মাদরাসার ছেলেরা দুই দিন আগেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে চামড়া চেয়ে আসে। মানুষও মাদরাসায় চামড়া দান করে দেয়।

মৌসুমি ব্যবসায়ী জমীর উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, পিকআপে করে ১৫০ পিস চামড়া এনেছি। গড়ে প্রতিটি চামড়ার দাম ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা দরে কেনা। একেকটি চামড়া বিক্রির জন্য দাম চান এক হাজার ২০০ টাকা করে। তবে আড়তদার বা ট্যানারির মালিকের প্রতিনিধিদের কেউই ৭৫০ টাকার ওপরে দাম দিতে চাননি। শেষ পর্যন্ত ৭৫০ টাকা দরেই সব চামড়া বিক্রি করেছি। লোকসান করেই চামড়া বিক্রি করতে হলো। সারা দিনের ভ্যান ভাড়া আর একজন সহকারীর মজুরি দিয়ে কিছুই থাকবে না। এমন হবে আগে জানলে এতো দাম দিয়ে চামড়া কিনতাম না।

এ বিষয়ে পোস্তার ইউসুফ ট্রেডার্সের মালিক মো. ইউসুফ বাংলানিউজকে বলেন, আজকে যে সব গরু কোরবানি হয়েছে সেগুলোর চামড়া আসতে শুরু করেছে। এবার ৬০০ থেকে ৯০০ টাকায় চামড়া কিনছি। এ বছর যে হারে চামড়া আসছে তা দেখে মনে হচ্ছে ঈদের দ্বিতীয় দিন অনেক পশু কোরবানি হয়েছে। সঠিক সময়ে চামড়া নিয়ে এলে আমরা চামড়া ফেরত দেই না।

পোস্তার শাকিল এন্টারপ্রাইজ এর মালিক মো. শাকিল আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, এ বছর চামড়ার দাম কম, শ্রমিক সংকট, লবণ কম, অতিরিক্ত গরম, বৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া অনেক বড় ব্যবসায়ী চামড়া কিনছেন না। সরকার যে দাম নির্ধারণ করে সেটা যুক্তিযুক্ত হয়নি। ওয়েটব্লু চামড়া রপ্তানি বন্ধ করায়, শুধু হাতে গোনা কয়েকটি ট্যানারি রপ্তানি করতে পারে। ট্যানারিরা আমাদের টাকা দিচ্ছে না। কাঁচা চামড়া রপ্তানি করতে পারলে দাম ভালো পেতাম। সরকার ঘোষণা দিয়ে শেষ। রপ্তানি করতে হলে সক্ষমতা থাকতে হয়। সেটাতো আমাদের নেই। ফলে হাতে গোনা কয়েকটি ট্যানারি মালিক সে সুবিধাটা নেবে।

ফারুক অ্যান্ড সেলিম কোং মালিক মো. সেলিম মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, প্রতি পিস গরুর চামড়া ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকায় কিনছেন। একেকটি চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে লবণ ও শ্রমিকের মজুরি বাবদ খরচ পড়ে যাবে ৩৫০-৪০০ টাকা। বাজার মন্দা, সে জন্য গতবারের চেয়ে কিছুটা কমে কিনছেন। এছাড়া পোস্তায় এখন চামড়া কম আসে। বড় ব্যবসায়ীরা চামড়া কিনছে না।

জানা গেছে, সাধারণত বড় আকারের গরুর চামড়া ৩১ থেকে ৪০ বর্গফুট, মাঝারি আকারের গরুর চামড়া ২১ থেকে ৩০ এবং ছোট আকারের গরুর চামড়া ১৬ থেকে ২০ বর্গফুটের হয়। নির্ধারিত দাম অনুযায়ী, ঢাকায় মাঝারি আকারের গরুর ২৫ বর্গফুটের একটি লবণযুক্ত চামড়ার দাম হওয়ার কথা এক হাজার ৫০০ থেকে এক হাজার ৬২৫ টাকা। পুরান ঢাকার লালবাগের পোস্তার আড়তগুলো কাঁচা চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের অন্যতম বড় জায়গা। সেখানে রোববার ছোট, বড় ও মাঝারি আকারের গরুর কাঁচা চামড়া সর্বোচ্চ ৫০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

গত ২৬ মে কোরবানি পশুর চামড়ার এ দর নির্ধারণ করে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এতে ঢাকায় গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয় ৬০-৬৫ টাকা, যা গত বছর ছিল ৫৫-৬০ টাকা। ঢাকার বাইরের গরুর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত চামড়ার দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৫৫-৬০ টাকা, যা গত বছর ছিল ৫০-৫৫ টাকা। এছাড়া ঢাকায় কাঁচা চামড়ার সর্বনিম্ন দাম এক হাজার ৩৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়। আর ঢাকার বাইরে সর্বনিম্ন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে এক হাজার ১৫০ টাকা। এছাড়া খাসির লবণযুক্ত চামড়া প্রতি বর্গফুট ২২-২৭ টাকা এবং বকরির চামড়া ২০-২২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর কোরবানির পশুর চামড়া আর পানির দামে কেনার সুযোগ থাকছে না। চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার ব্যাপারে জোর দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ লক্ষ্যে চামড়ার দামও গতবছরের তুলনায় পাঁচ টাকা প্রতি বর্গফুটে বাড়ানো হয়েছে। কাঁচা চামড়া সংরক্ষণে সারাদেশের মসজিদ ও মাদরাসাগুলোতে বিনামূল্যে ৩০ হাজার টন লবণ প্রদান করা হয়েছে। কোরবানির পশুর চামড়ার দাম নিয়ে অসাধু ব্যবসায়ীদের অপতৎপরতা বন্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বর্তমান সরকার। বিশ্ববাজারের সঙ্গে মিল রেখেই অভ্যন্তরীণ বাজারের কাঁচা চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে। বেঁধে দেওয়া দামে কেনাবেচা হলে কোনো ধরনের লোকসানের আশঙ্কা থাকবে না। আর প্রতিবছর মৌসুমি ব্যবসায়ীদের লোকসানের মুখে ফেলে দেয় চামড়ার বাজারের সিন্ডিকেট। এজন্য সিন্ডিকেট ভেঙে দিতে কাঁচা চামড়া তিন মাসের জন্য সরাসরি রপ্তানির সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া নির্ধারিত দামের বাইরে যারা চামড়া কেনাবেচা করবে কিংবা যারা জাতীয় এ সম্পদ বিনষ্টে কাজ করবে তাদের শাস্তির আওতায় আনা হবে। এ লক্ষ্যে দেশের সব জেলা প্রশাসক এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের আগে-ভাগে নির্দেশনা দেওয়া হবে। একই সঙ্গে কাঁচা চামড়া তাড়াহুড়ো বিক্রি না করে কিছুদিন যাতে সংরক্ষণ করা যায় সেজন্য লবণের সরবরাহ বাড়ানো হবে। বেসরকারি খাতের পাশাপাশি সরকারি উদ্যোগে প্রায় আরও এক লাখ টন লবণ সারাদেশে দেওয়া হবে।

এ বিষয়ে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, আমরা যেহেতু বিনামূল্যে লবণ দিচ্ছি, প্রশিক্ষণ দিয়েছি এবং চামড়ায় লবণ লাগাতে যে শ্রম ব্যয় হয়, সেসব বিবেচনায় নিয়েই এবার চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করেছি। ফলে এবার যে মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে, সেটা যৌক্তিক। পাশাপাশি চীনের ও ভিয়েতনামে কাঁচা চামড়া রপ্তানির ব্যাপারেও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এবছর ঈদুল আজহায় কোরবানিযোগ্য গবাদিপশুর সংখ্যা এক কোটি ২৪ লাখ ৪৭ হাজার ৩৩৭টি। এর মধ্যে কোরবানিযোগ্য ৫৬ লাখ ২ হাজার ৯০৫টি গরু-মহিষ, ৬৮ লাখ ৩৮ হাজার ৯২০টি ছাগল-ভেড়া ও ৫ হাজার ৫১২টি অন্যান্য প্রজাতির প্রাণীর প্রাপ্যতা রয়েছে। এ বছরও ২০ লাখ ৬৮ হাজারের বেশি গবাদিপশু উদ্বৃত্ত থাকতে পারে।

রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) এক প্রতিবেদন বলা হয়েছে, বছরে বাংলাদেশে প্রায় ২২ কোটি বর্গফুট চামড়া পাওয়া যায়। এ চামড়ার ৬০ শতাংশের বেশি সরবরাহ হয় কোরবানির মৌসুমে। এর মধ্যে ৬৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ গরুর চামড়া, ৩১ দশমিক ৮২ শতাংশ ছাগলের, ২ দশমিক ২৫ শতাংশ মহিষের এবং এক দশমিক ২ শতাংশ ভেড়ার চামড়া।

আমাদের সংবাদটি শেয়ার করুন..

এ পাতার আরও খবর

Sabuj Bangla Tv © All rights reserved- 2011| Developed By

Theme Customized BY WooHostBD