লকডাউনের খবরে সিলেট শহর ছেড়ে গ্রামে ফিরছে সাধারণ মানুষ। একইসঙ্গে নিত্যপণ্যর দোকান ও কাচাঁবাজারে ভিড় বেড়েছে ক্রেতাদের। হঠাৎ করে দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ বাড়তে থাকায় আগামীকাল সোমবার (৫ এপ্রিল) থেকে দেশব্যাপী এক সপ্তাহের জন্য লকডাউন ঘেষণা করেছে সরকার। লকডাউন ঘোষণার পরপরই নগরের বাস টার্মিনাল ও রেলওয়ে স্টেশনে ঘরমুখো মানুষের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। অনেকে আবার গতকাল শনিবার বাড়ি ফিরে গেছেন।
রবিবার (৪ এপ্রিল) কদমতলী বাস টার্মিনাল ও রেলওয়ে স্টেশনে ঘুরে দেখা যায়, ঘরমুখো মানুষের চোখে মুখে চিন্তার ছাপ। এসময় প্রতিবেদকের সাথে কথা হয় সুনামগঞ্জের হাসান আলীর সাথে। হাসান আলী জানান, ‘সিলেট নগরীর জিন্দাবাজারের একটি বইয়ের দোকানে কাজ করেন তিনি। মেস ভাড়া করে থাকেন নগরের ছড়ারপারে। লকডাউন ঘোষণার পর দোকান বন্ধ মেসও বন্ধ। তাই বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। কী করব;কী করে খাব এই চিন্তায় আছি।’
হাতে ও কাঁধে ব্যাগ নিয়ে বাস টার্মিনালে গাড়ির অপেক্ষা করছেন মধ্যবয়সী আলেয়া বেগম। কথা হলে অনেকটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে জানান, ‘সরকার লকডাউন ঘেষণা করেছে। ভ্রাম্যমান চায়ের দোকান দিয়ে বাসা ভাড়া পরিবার চালাই। এখনতো দোকান বন্ধ। আয়-রোজগারও নেই। সন্তানদের নিয়ে খাব না বাসা ভাড়া দেব। তাই বাধ্য হয়েই গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি।’
সকাল থেকেই বাস টার্মিনাল ও রেল স্টেশনে ঘরমুখো মানুষের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। বিশেষ করে নিম্নআয়ের মানুষজন শহর ছাড়ছেন। তবে বাস টার্মিনালে ঘরমুখো মানুষের ভিড় থাকলেও স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই। অনেকের মুখের মাস্ক পর্যন্ত নেই।
এদিকে লকডাউন ঘোষণার পরপরই সিলেটে নিত্যপণ্যের দোকান থেকে শুরু করে কাচাঁবাজার; সবখানেই ক্রেতাদের ভিড় লেগেছে। বাজারে আসা লোকজন মানছে না স্বাস্থ্যবিধি। রোববার নগরের শপিং সেন্টারগুলোতেও ভিড় ছিল ক্রেতাদের। লকডাউনের আগেই সিলেটের বাজারে অতিপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা বেড়েছে। তবে ব্যবসায়ীরা জানান, আসছে রমজানে নিত্যপণ্যের দাম খুব বেশি বাড়ার সম্ভাবনা নাই।
আম্বরখানা বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা জাবেদ আলী বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে এমনিতেই আমাদের আয়-রোজগার কমে গেছে। তার মাঝে কাল থেকে লকডাউন। বাজারে এসে নিত্যপণ্য বাড়তি দামে কিনতে হচ্ছে, এভাবে দাম বাড়তে থাকলে কি করে টিকে থাকব।
মুদি দোকানদার জামাল বলেন, দুই দিনে নতুন করে কয়েকটি পণ্যের দাম বেড়েছে। লকডাউনের আগেই পাইকাররা সরবরাহের ঘাটতির অজুহাত দিয়ে পণ্যের দাম বাড়িয়েছে।
সিলেটের বাজার কর্মকর্তা মুর্শেদ কাদের বলেন, রমজানে নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল রাখতে বাজার মনিটরিং করতে ৪-৫টি টিম গঠন করা হবে। রমজানের আগেই রোডম্যাপ ঘোষণা করা হবে। সেই মোতাবেক বাজার মনিটরিং করা হবে।