রাজধানীর প্রেসক্লাবের সামনে ছাত্রদলের সমাবেশে পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় শাহবাগ থানায় পুলিশের করা মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সভাপতি রফিকুল আলম মজনুর আরও ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) শাহবাগ থানার মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপপরিদর্শক গোলাম হোসেন খান আসামির ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করলে শুনানি শেষে ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবব্রত বিশ্বাসের আদালত এ আদেশ দেন।
রফিকুল ইসলামের আইনজীবী মহিউদ্দিন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল ও লেখক মুশতাক আহমেদের কারাগারে মৃত্যুর ঘটনার প্রতিবাদে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে ছাত্রদল। সমাবেশ ঘিরে সকাল থেকেই প্রেসক্লাবের সামনে বিএনপি ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা জড়ো হতে থাকেন। বেলা সোয়া ১১টার দিকে জমায়েত শুরুর আগেই পুলিশ লাঠিচার্জ করে ও কাঁদুনে গ্যাস ছুঁড়ে নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এক পর্যায়ে নেতাকর্মীরাও পুলিশের ওপর পাল্টা হামলা চালায়। দুপক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে পুলিশ ও নেতাকর্মীসহ শতাধিক লোক আহত হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ছাত্রদলের বেশ কয়েকজনকে আটক করে। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে ছাত্রদলের আরও ৭ নেতাকর্মীকে আটক করা হয়।
প্রেসক্লাবের সামনে ওই সংঘর্ষের ঘটনায় ওই রাতেই ছাত্রদল, যুবদল ও বিএনপির ৪৭ জন নেতাকর্মীকে আসামি করে শাহবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছে পুলিশ।
মামলার এজাহারে বলা হয়, লেখক মুশতাক আহমেদের কারাগারে মৃত্যু ও জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের প্রতিবাদে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি বিনা অনুমতিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিক্ষোভ করার চেষ্টা করে ছাত্রদল। এসময় পুলিশ বিক্ষোভকারীদের থামানো ও রাস্তা থেকে সরে যাওয়ার অনুরোধ করে। প্রেসক্লাবের ভেতরে ঢুকে অবস্থান নেন ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। তারা পুলিশের ওপর ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে।
সেখানে আরও বলা হয়, পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। এরপর পুলিশ ও ছাত্রদল নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রেসক্লাবের সামনের রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়।
মামলায় এজাহারনামীয় ৪৭ জন নেতাকর্মী ও অজ্ঞাতনামা ২০০/২৫০ জনকে আসামি করা হয়। ১৩ জনকে গ্রেফতার দেখায় পুলিশ। মামলায় (পুলিশ অ্যাসল্ট) হত্যাচেষ্টা, হামলা ও ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ করা হয়।
এ মামলায় গত ৪ মার্চ দুপুরে পৌনে ১২টার দিকে প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ শেষে ফেরার পথে মৎস ভবন এলাকায় গ্রেফতার হন রফিকুল আলম মজনু। পরদিন আরও ৭ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা হলেন- খালেক টিপু, রাসেল, দিল গনি, শহিদুল ইসলাম, মোশাররফ, আবুল কাশেম ও ওয়াহিদ।
৮ মার্চ শুনানি শেষে রফিকুলসহ এই ৮ আসামিকে দুদিন করে রিমান্ডে পাঠান ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর হাকিম মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান নূরের আদালত।
একই মামলায় গত ০১ মার্চ ঢাকা মহানগর হাকিম আদালত ছাত্রদলের ১৩ নেতাকর্মীকে ৫ দিন করে রিমান্ডে পাঠান।
তারা হলেন- মঞ্জুরুল আলম, আতাউর রহমান, মাসুদ রানা, শফিকুল ইসলাম, শাহিরাজ, আহসান হাবিব ভূঁইয়া রাজু, কবির হোসেন, মনোয়ার ইসলাম, আরিফুল হক, আনিচুর রহমান, খন্দকার অনিক, আবু হায়াত মো. জুলফিকার, আতিক মোর্শেদ ও রমজান।