দেশে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। টানা কয়েকদিন শতাধিক মৃত্যু হয়েছে। এ নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র ডা. মোহাম্মদ রোবেদ আমিন বলেছেন, দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। করোনা নতুন ধরন ও মিউটেশনের কারণ এই ভাইরাস ছড়াচ্ছে। ফলে সংক্রমণ ও মৃত্যু বেড়েছে।
বুধবার (২১ এপ্রিল) কোভিড-১৯ পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের আয়োজিত ভার্চুয়াল স্বাস্থ্য বুলেটিনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
রোবেদ আমিন বলেন, করোনায় ষাটোর্ধ্বরাই বেশি মারা যাচ্ছে এবং তাদের মধ্যে ডায়াবেটিস ও হাইপারটেনশনের রোগীরাই বেশি। তবে করোনার যে ধরন এসেছে, তাতে তরুণরাও ব্যাপক হারে আক্রান্ত হচ্ছে। সুতরাং জটিল রোগে আক্রান্ত বা আক্রান্ত নয়, এটা দেখার কোনও সুযোগ নেই।
এদিকে দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৯৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ সময়ে নতুন করে আরও চার হাজার ২৮০ জনের শরীরে ভাইরাসটি শনাক্ত হয়েছে। নতুন মৃত্যু নিয়ে দেশে মোট দশ হাজার ৬৮৩ জনের মৃত্যু হলো। এছাড়া ২৪ ঘণ্টায় নতুন আক্রান্তসহ দেশে মোট শনাক্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ালো ৭ লাখ ৩২ হাজার ৬০ জনে। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে আরও ৭ হাজার ৭২ জন করোনামুক্ত হয়েছেন। এ পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ৬ লাখ ৩৫ হাজার ১৮৩ জন।
এছাড়া গত এদিনে ২৮ হাজার ৫৬১ জনের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরীক্ষা করা হয়েছ ১৮ হাজার ৪০৮টি নমুনা। পরীক্ষার তুলনায় শনাক্তের হার ১৫ দশমিক ০৭ শতাংশ।
নতুন করে মারা যাওয়া ৯৫ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগেরই ৫৮ জন রয়েছেন। এছাড়া চট্টগ্রামে ১৭, রাজশাহীতে ৮, খুলনায় ৩, বরিশালে ২, সিলেটে ৩, রংপুরে ৩ এবং ময়মনসিংহে একজন করে রয়েছেন। মারা যাওয়াদের মধ্যে ৫৯ জন পুরুষ আর ৩৬ জন নারী।
বয়স ভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মারা যাওয়াদের মধ্যে ৫৭ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি। এছাড়া ৫১ থেকে ৬০ বছরের ২২, ৪১ থেকে ৫০ বছরের ১৩, এবং ৩১ থেকে ৪০ বছরের ৩ জন রয়েছেন।
গত বছরের ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়। প্রথম মৃত্যুর খবর আসে ১৮ মার্চ। এর মধ্যে ওই বছরের ৫ নভেম্বর মৃত্যুর সংখ্যা ৬ হাজার ছাড়িয়েছে। একদিনে সর্বোচ্চ ৬৪ জনের মৃত্যুর খবর আসে ৩০ জুন।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনে করোনা ভাইরাসের উপদ্রব শুরু হয়। বর্তমানে বিশ্বের ২১৩ দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়েছে এই ভাইরাস। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গত বছরের ১১ মার্চ কোভিড-১৯ কে বৈশ্বিক মহামারি ঘোষণা করে।