প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাসের সঙ্গে টানা ১২ দিন লড়াই করে অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মানেন বাংলা চলচ্চিত্রের ‘মিষ্টি মেয়ে’ খ্যাত কিংবদন্তি অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী (৭০)। গত ১৭ এপ্রিল রাত ১২টা ২০ মিনিটে রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে কবরী ৫ ছেলে রেখে গেছেন।
কবরী প্রথম বিয়ে করেছিলেন চিত্ত চৌধুরীকে। সেই সংসারে অঞ্জন চৌধুরী ও রিজওয়ান চৌধুরী নামে দুই ছেলে রয়েছে। চিত্ত চৌধুরীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর ১৯৭৮ সালে সফিউদ্দীন সরোয়ারকে বিয়ে করেন কবরী। দ্বিতীয় সংসারে শাকের ওসমান চিশতী, জয়নাল ওসমান চিশতী ও শান ওসমান চিশতী নামে আরও তিন ছেলে রয়েছে।
কবরীর ব্যক্তিগত সহকারী নূর উদ্দিন জানিয়েছেন, বড় ছেলে অঞ্জন চৌধুরী অনেক বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ী। সেদেশে গিয়ে লেখাপড়া শেষে করে সেখানেই চাকরি করেন। এখন যুক্তরাষ্ট্রের স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।
দ্বিতীয় ছেলে রিজওয়ান চৌধুরীও যুক্তরাষ্ট্র থেকে পড়ালেখা করেছেন। একসময় সেখানে চাকরিও করতেন। পরে সেখান থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে চলে যান। বর্তমানে দুবাইয়ে চাকরি করছেন।
তৃতীয় ছেলে শাকের ওসমান চিশতী ইংল্যান্ডের বিখ্যাত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিল্ম নিয়ে পড়ালেখা করেছেন। পড়ালেখা শেষে ইংল্যান্ডেই বসবাস শুরু করেন। সেখানেই চাকরি করছেন। গত কিছুদিন ধরে অসুস্থ মায়ের পাশে ছায়ার মতো ছিলেন শাকের। সবটুকু সেবা আর ভালোবাসা দিয়েও মাকে বাঁচাতে না পারার আক্ষেপ আরও বহু বছর হয়তো তাকে পোড়াবে।
চতুর্থ ছেলে জয়নাল ওসমান চিশতী কানাডা প্রবাসী। সেদেশেই ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়াশোনা করতে গিয়েছিলেন। পরবর্তীতে সেখানেই স্থায়ী হন।
কবরীর সবচেয়ে ছোট ছেলে শান ওসমান চিশতী। বর্তমানে তার বয়স ৩০ বছর। তিনি মানসিকভাবে প্রতিবন্ধী।
১৯৫০ সালের ১৯ জুলাই চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে কবরীর জন্ম। তার পারিবারিক নাম ছিল মিনা পাল। বাবা শ্রীকৃষ্ণদাস পাল ও মা লাবণ্য প্রভাব পাল। ১৯৬৩ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে নৃত্যশিল্পী হিসেবে কবরীর মঞ্চে অভিনয় শুরু। এরপর টেলিভিশন হয়ে সিনেমায়।
প্রথম স্বামী চিত্ত চৌধুরীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর ১৯৭৮ সালে সফিউদ্দীন সরোয়ারকে বিয়ে করেন কবরী। ২০০৮ সালে কবরীর দ্বিতীয় ঘরও ভেঙে যায়।