মিয়ানমারে নিয়মিত সামরিক শাসনবিরোধী বিক্ষোভ হচ্ছে। বিক্ষোভকারীদের দমাতে নৃশংস দমনপীড়ন চালাচ্ছে দেশটির জান্তা সরকার। এবার অভ্যুত্থান বিরোধীদের মুখোমুখি হলেই তাদের হত্যা করতে নির্দেশ দিয়েছে তারা।
দেশটির রাজধানী ন্যাপিদোয় শীর্ষ সামরিক কমান্ড জারি করা এক নির্দেশের গোপন বার্তার কিছু অংশ প্রকাশ করেছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ইরাবতি। সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, ১১ এপ্রিল নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো সেনা কমান্ডের গোপন বার্তাটির কিছু অংশ গোপন সূত্রের মাধ্যমে তাদের হাতে এসেছে।
এতে বলা হয়েছে, মুখোমুখি হলে তাদেরকে অবশ্যই আপনারা নির্মূল করবেন। কারণ দাঙ্গাকারীরা (সেনা অভ্যুত্থান বিরোধীদের দাঙ্গাকারী হিসেবে আখ্যা দেয় সামরিক জান্তা) শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ থেকে সশস্ত্র সংঘাতের দিকে চলে যাবে। সব পদের কর্মকর্তাদের এই আদেশ কঠোরভাবে প্রতিপালনের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।
ইরাবতি জানিয়েছে, প্রথম নির্দেশনার দুদিন পর আরেকটি নির্দেশনা পাঠানো হয়েছিল নিরাপত্তা বাহিনীর কাছে। যাতে বলা হয়েছে, সব জরুরি নিরাপত্তা বাহিনীকে অবশ্য সম্পূর্ণভাবে ও কৌশলগতভাবে সশস্ত্র থাকতে হবে। দাঙ্গাকারীরা আপনাদের নিয়ন্ত্রিত এলাকার দিকে অগ্রসর হতে পারে।
প্রসঙ্গত, মিয়ানমারে গত ১ ফেব্রুয়ারি রক্তপাতহীন অভ্যুত্থান হয়। অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে দেশটির সেনাবাহিনী। গ্রেফতার করা হয় অং সান সু চিসহ তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির শীর্ষ নেতাদের। সেনাবাহিনী মিয়ানমারে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করে। মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকে চলমান টানা বিক্ষোভে মিয়ানমারে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর গুলিতে এখন পর্যন্ত ৭০০ এরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।
এর আগে, মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের জাতিগত নিধনের সময় রাখাইন রাজ্যে অভিযানের সময় কাউকে দেখামাত্রই গুলির নির্দেশ ছিল সেনাসদস্যদের প্রতি। সে সময় শিশু থেকে বৃদ্ধ-কেউ যেন বাদ না যায়, সে কথাও বলা হয়েছিল তাদের। এমনকি কোনো শব্দ পেলে সেদিকেও গুলির নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।