মিয়ানমারের সামরিক অভ্যুত্থানবিরোধী গণতন্ত্রপন্থিরা দেশজুড়ে নতুন অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দিয়েছেন। সোমবার (২৬ এপ্রিল) গণতন্ত্রপন্থিরা দেশটির জনগণকে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ না করতে, কৃষি ঋণ ফেরত না দিতে, সন্তানদের স্কুল থেকে দূরে রাখতে ও অভ্যুত্থান পরবর্তী সংকট শেষে করতে একটি আঞ্চলিক সম্মেলনে শীর্ষ জেনারেলের দেওয়া প্রতিশ্রুতির প্রতি ঘৃণা জানানোর আহ্বান জানিয়েছেন তারা।
১ ফেব্রুয়ারির সামরিক অভ্যুত্থানের পর শুরু হওয়া বিক্ষোভ দমাতে প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহার শুরু করে মিয়ানমারের জেনারেলরা। এতে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে এ পর্যন্ত অন্তত ৭৫০ জন নিহত হয়েছেন বলে হিসাব মিয়ানমারের একটি মানবাধিকার গোষ্ঠীর।
জান্তা সরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা উল্লেখযোগ্যভাবে নিয়ন্ত্রণ করায় ও বহু সাংবাদিককে আটক করায় মৃত্যুর ওই সংখ্যা তারা নিশ্চিত করতে পারেনি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
ইন্দোনেশিয়ায় অ্যাসোসিয়েশন অব সাউথইস্ট এশিয়ান ন্যাশনসের (আসিয়ান) সম্মেলনে সহিংসতা বন্ধে দেশটির সিনিয়র জেনারেল মিন অং লাইং একটি সমঝোতায় পৌঁছানোর পরদিন রবিবার মিয়ানমারের বড় শহরগুলোতে বিক্ষিপ্ত প্রতিবাদ দেখা গেছে বলে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে।
আসিয়ানের সম্মেলনে মিয়ানমারের এই জান্তা প্রধান ক্ষমতাচ্যুত বেসামরিক সরকারের প্রধান অং সান সু চিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি দেওয়ার আহ্বানে সাড়া দেননি আর আসিয়ানের সমঝোতায় সংকট শেষ করতে কোনো সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়নি।
গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকারীরা তাদের আন্দোলন জোরদার করার জন্য সোমবার থেকে বিদ্যুৎ বিল জমা ও কৃষি ঋণ ফেরত না দেওয়ার এবং শিশুদের স্কুলে না পাঠানোর আহ্বান জানিয়েছে।
রবিবার দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় শহর মোনিওয়াতে এক প্রতিবাদ সমাবেশে দেওয়া বক্তৃতায় আন্দোলনকারী খানত ওয়াই ফিও বলেছেন, “সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে সফল অসহযোগ গড়ে তুলতে শহরে, ওয়ার্ডে, অঞ্চল ও রাজ্যগুলোর আমাদের সবাইকে অবশ্যই একযোগে কাজ করতে হবে। আমরা তাদের কার্যপ্রণালীতে অংশ নেবো না, আমরা তাদের সহযোগিতা করবো না।”
এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য ফোন করা হলেও জান্তার মুখপাত্র জবাব দেননি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
মিয়ানমারে ইতোমধ্যেই একটি আইন অমান্য আন্দোলনের ধর্মঘটের কারণে অর্থনীতি পঙ্গু হয়ে পড়েছে এবং অনাহারীর উত্থানের সম্ভাবনা বেড়ে গেছে বলে সতর্ক করেছে আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলো।