জুমাতুল বিদা উপলক্ষে মুসল্লিদের জমায়েতকে কেন্দ্র করে ফিলিস্তিনের জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি পুলিশ। পরে এর জেরে পুলিশের সঙ্গে ফিলিস্তিনিদের সংঘর্ষ হয়েছে। এতে অন্তত ১৭৮ জন ফিলিস্তিনি ও ছয় ইসরায়েলি পুলিশ আহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি পুলিশের ছোঁড়া রাবার বুলেটে বিদ্ধ অন্তত ৮৮ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির জরুরি সেবা বিভাগ ও ইসরায়েলি পুলিশের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে।
শুক্রবার রাতের এ ঘটনায় মুসল্লিদের বেশিরভাগ মসজিদের অভ্যন্তরেই আহত হন। সংঘর্ষে ইসরায়েলি বাহিনী রাবার বুলেট ও স্ট্যান গ্রেনেড ছোড়ে। আর ফিলিস্তিনিরা পাথর ও বোতল ছোড়ে। স্থানীয় হাসপাতালের ওপর চাপ কমাতে গুরুতর নয় এমন আহতদের চিকিৎসায় অস্থায়ী হাসপাতাল বসায় রেড ক্রিসেন্ট কর্তৃপক্ষ।
জেরুসালেমের পুরনো শহরাঞ্চল আল জাররাহ থেকে কয়েকটি ফিলিস্তিনি পরিবারকে ইহুদিবাদি দখলদারেরা উচ্ছেদ করবে—এমন খবরে উত্তেজনা ছড়ায়। পরে ইসরায়েলি পুলিশ আল-আকসা মসজিদে মুসল্লিদের ওপর চড়াও হয়।
এ ঘটনার পর আগামী কয়েকদিনে জেরুসালেমে ইসরায়েলি বাহিনীর সঙ্গে ফিলিস্তিনের মুসলিমদে সংঘাত-সহিংসতার ঘটনা আরও বাড়তে পারে বলে আলজাজিরার খবরে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিবিসির খবরে বলা হয়, ইসরায়েলি পুলিশ বলছে, সন্ধ্যার পর নামাজে আসা হাজার হাজার লোকজন দাঙ্গা সৃষ্টি করলে সেখানে ‘শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে’ বাহিনী মোতায়েন করেছে তারা।
রয়টার্স জানায়, হ্যান্ড মাইক দিয়ে মুসল্লিদের ওপর স্ট্যান গ্রেনেড নিক্ষেপ বন্ধে ও মুসলিম তরুণদের শান্ত হওয়ার আহ্বান জানান আল-আকসা মসজিদের পরিচালক শেখ ওমর আল-কিসওয়ানি।
জাতিসংঘ এক বিবৃতিতে মুসল্লি ও বিক্ষোভকারী ফিলিস্তিনিদের নিয়ন্ত্রণে ইসরায়েলকে বাহিনী ব্যবহারে সতর্ক আচরণ করার আহ্বান জানানো হয়েছে। এ ছাড়া এ ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
এদিকে, এ ঘটনায় ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি এক টেলিভিশন বক্তৃতায় মুসলিমদের সশস্ত্র ‘প্রতিরোধ’ অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান। এ সময় তিনি মুসলিম দেশগুলোকেও ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান।
অন্যদিকে, ইসরায়েলি পুলিশের দমনপীড়নের প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে তুর্কি সরকার।
মুসলিমদের প্রথম কিবলা বাইতুল মুকাদ্দাস তথা আল-আকসা মসজিদ মুসলিমদের কাছে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। পবিত্র মাহে রমজানের শেষ জুমার নামাজ অর্থাৎ জুমাতুল বিদায় অংশ নিতে সেখানে বিপুল সংখ্যক মুসল্লি আসেন।
প্রতি বছরই ইসরায়েলি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মুসল্লিদের ওপর চড়াও হয়। তা ছাড়া আল-আকসা প্রাঙ্গণে অবস্থিত ইহুদি ধর্মাবলম্বীদেরও পবিত্র স্থান টেম্পল মাউন্ট।