ঢাকা ০২:৪৮ এএম, শনিবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৫, ৩০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশিরা সুনাম বয়ে আনছেন: প্রধানমন্ত্রী

সবুজবাংলা টিভি ডটকম-
  • প্রকাশকাল ০২:৪৬:৩৮ এএম, রবিবার, ৩০ মে ২০২১ ২৩০ পাঠক
সবুজবাংলা টিভি এর অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত বাংলাদেশিরা দেশের জন্য সুনাম বয়ে নিয়ে আসছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবন থেকে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা দিবস-২০২১ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আজ শনিবার সকালে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে এ কথা বলেন তিনি।

বিশ্বে বাংলাদেশের এক লাখ ৭৬ হাজার ৬৬৯ জন শান্তিরক্ষী কাজ করছেন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কয়েকটি দেশে কর্মরত শান্তিরক্ষী সদস্যদের সঙ্গে এ সময় কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। দেশের শান্তিরক্ষী সদস্যদের কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি।

শান্তিরক্ষী মিশনে কর্মরত বাংলাদেশিদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেখানে আপনারা যাচ্ছেন, দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছেন। আপনাদের এই মানবিক গুণের জন্যই আমরা বলতে পারি, বাংলাদেশ থেকে শান্তিরক্ষী নেওয়ার চাহিদাটা জাতিসংঘের সবসময়ই একটু বেশি।’

এর আগে গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত বাংলাদেশের আট শান্তিরক্ষীসহ বিশ্বের ৪৪ দেশের ১২৯ জনকে সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্য মরণোত্তর ‘দ্যাগ হ্যামারশোল্ড পদক’ দিয়ে সম্মান জানিয়েছে জাতিসংঘ।

জাতিসংঘ সদরদপ্তরে বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে কর্তব্যরত অবস্থায় আত্মোৎসর্গকারী বিশ্বের ৪৪টি দেশের ১২৯ জন শান্তিরক্ষীকে সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্য ‘দ্যাগ হ্যামারশোল্ড মেডেল’ প্রদান করে জাতিসংঘ। এর মধ্যে বাংলাদেশের আটজন শান্তিরক্ষী রয়েছেন, যা একক দেশ হিসেবে সর্বাধিক। জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের ফেসবুক পেজে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশসহ ৪৪ দেশের স্থায়ী প্রতিনিধিদের হাতে স্ব স্ব দেশের মেডেল তুলে দেন। এই পদক বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার মহৎ উদ্দেশ্যে উৎসর্গকৃত জীবনের শক্তি, বিশুদ্ধতা ও নশ্বরতাকেই বার বার স্মরণ করছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।।

কর্তব্যরত অবস্থায় আত্মোৎসর্গকারী বাংলাদেশের আট শান্তিরক্ষী হলেন—মালিতে নিয়োজিত মিনুস্মা মিশনের ওয়ারেন্ট অফিসার আবদুল মো. হালিম; কঙ্গোতে নিয়োজিত মনুস্কো মিশনের ওয়ারেন্ট অফিসার মো. সাইফুল ইমাম ভূঁইয়া, সার্জেন্ট মো. জিয়াউর রহমান, সার্জেন্ট এমডি মোবারক হোসেন ও ল্যান্স করপোরাল মো. সাইফুল ইসলাম; সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে নিয়োজিত মিনুস্কা মিশনের ল্যান্স করপোরাল মো. আবদুল্লাহ আল মামুন ও সার্জেন্ট মো. ইব্রাহীম এবং দক্ষিণ সুদানে নিয়োজিত আনমিস্ মিশনের ওয়াসারম্যান নুরুল আমিন।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পদকগুলো গ্রহণ করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। ভার্চুয়াল এই অনুষ্ঠানে আরও অংশগ্রহণ করেন মিশনের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. ছাদেকুজ্জামান। জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন এ সব মেডেল কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের পরিবারের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

পদক প্রদান অনুষ্ঠান উপলক্ষে দেওয়া এক শোক বার্তায় রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, ‘আমি জাতিসংঘের পতাকাতলে কর্তব্যরত অবস্থায় জীবনদানকারী নীল হেলমেটের সব সাহসী পুরুষ ও নারীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করছি এবং তাদের পরিবার ও স্বজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছি।’

আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য হলো ‘স্থায়ী শান্তির পথে : শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য যুব-শক্তিকে বৃদ্ধি করা’।

দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতিসংঘের মহাসচিব সাত দশক ধরে জাতিসংঘের পতাকাতলে কর্তব্যরত অবস্থায় জীবনদানকারী সামরিক ও বেসামরিক শান্তিরক্ষীদের বিদেহী আত্মার স্মরণে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের উত্তর লনে অবস্থিত ‘শান্তিরক্ষী মেমোরিয়াল সাইট’-এ পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ বর্তমানে সর্বাধিক শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ। জাতিসংঘের নয়টি শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের প্রায় সাত হাজার শান্তিরক্ষী কর্মরত রয়েছেন। এ পর্যন্ত শান্তিরক্ষা মিশনে কর্তব্যরত অবস্থায় বাংলাদেশের ১৫৯ জন শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন।

প্রতিবছরই যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতিসংঘ সদরদপ্তরে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা দিবস উদযাপন করা হয়। কোভিড-১৯ মহামারিজনিত কারণে এবারের অনুষ্ঠানটি ভার্চুয়ালভাবে আয়োজন করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ট্যাগস :

শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশিরা সুনাম বয়ে আনছেন: প্রধানমন্ত্রী

প্রকাশকাল ০২:৪৬:৩৮ এএম, রবিবার, ৩০ মে ২০২১

শান্তিরক্ষা মিশনে কর্মরত বাংলাদেশিরা দেশের জন্য সুনাম বয়ে নিয়ে আসছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গণভবন থেকে আন্তর্জাতিক জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা দিবস-২০২১ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আজ শনিবার সকালে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে এ কথা বলেন তিনি।

বিশ্বে বাংলাদেশের এক লাখ ৭৬ হাজার ৬৬৯ জন শান্তিরক্ষী কাজ করছেন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কয়েকটি দেশে কর্মরত শান্তিরক্ষী সদস্যদের সঙ্গে এ সময় কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। দেশের শান্তিরক্ষী সদস্যদের কাজের ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি।

শান্তিরক্ষী মিশনে কর্মরত বাংলাদেশিদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যেখানে আপনারা যাচ্ছেন, দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করছেন। আপনাদের এই মানবিক গুণের জন্যই আমরা বলতে পারি, বাংলাদেশ থেকে শান্তিরক্ষী নেওয়ার চাহিদাটা জাতিসংঘের সবসময়ই একটু বেশি।’

এর আগে গত বৃহস্পতিবার জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত বাংলাদেশের আট শান্তিরক্ষীসহ বিশ্বের ৪৪ দেশের ১২৯ জনকে সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্য মরণোত্তর ‘দ্যাগ হ্যামারশোল্ড পদক’ দিয়ে সম্মান জানিয়েছে জাতিসংঘ।

জাতিসংঘ সদরদপ্তরে বৃহস্পতিবার আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে কর্তব্যরত অবস্থায় আত্মোৎসর্গকারী বিশ্বের ৪৪টি দেশের ১২৯ জন শান্তিরক্ষীকে সর্বোচ্চ ত্যাগের জন্য ‘দ্যাগ হ্যামারশোল্ড মেডেল’ প্রদান করে জাতিসংঘ। এর মধ্যে বাংলাদেশের আটজন শান্তিরক্ষী রয়েছেন, যা একক দেশ হিসেবে সর্বাধিক। জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের ফেসবুক পেজে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।

ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বাংলাদেশসহ ৪৪ দেশের স্থায়ী প্রতিনিধিদের হাতে স্ব স্ব দেশের মেডেল তুলে দেন। এই পদক বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার মহৎ উদ্দেশ্যে উৎসর্গকৃত জীবনের শক্তি, বিশুদ্ধতা ও নশ্বরতাকেই বার বার স্মরণ করছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়।।

কর্তব্যরত অবস্থায় আত্মোৎসর্গকারী বাংলাদেশের আট শান্তিরক্ষী হলেন—মালিতে নিয়োজিত মিনুস্মা মিশনের ওয়ারেন্ট অফিসার আবদুল মো. হালিম; কঙ্গোতে নিয়োজিত মনুস্কো মিশনের ওয়ারেন্ট অফিসার মো. সাইফুল ইমাম ভূঁইয়া, সার্জেন্ট মো. জিয়াউর রহমান, সার্জেন্ট এমডি মোবারক হোসেন ও ল্যান্স করপোরাল মো. সাইফুল ইসলাম; সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে নিয়োজিত মিনুস্কা মিশনের ল্যান্স করপোরাল মো. আবদুল্লাহ আল মামুন ও সার্জেন্ট মো. ইব্রাহীম এবং দক্ষিণ সুদানে নিয়োজিত আনমিস্ মিশনের ওয়াসারম্যান নুরুল আমিন।

বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পদকগুলো গ্রহণ করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। ভার্চুয়াল এই অনুষ্ঠানে আরও অংশগ্রহণ করেন মিশনের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. ছাদেকুজ্জামান। জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন এ সব মেডেল কর্তব্যরত অবস্থায় নিহত বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের পরিবারের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

পদক প্রদান অনুষ্ঠান উপলক্ষে দেওয়া এক শোক বার্তায় রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, ‘আমি জাতিসংঘের পতাকাতলে কর্তব্যরত অবস্থায় জীবনদানকারী নীল হেলমেটের সব সাহসী পুরুষ ও নারীর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রদর্শন করছি এবং তাদের পরিবার ও স্বজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছি।’

আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য হলো ‘স্থায়ী শান্তির পথে : শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য যুব-শক্তিকে বৃদ্ধি করা’।

দিবসটি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুরুতে জাতিসংঘের মহাসচিব সাত দশক ধরে জাতিসংঘের পতাকাতলে কর্তব্যরত অবস্থায় জীবনদানকারী সামরিক ও বেসামরিক শান্তিরক্ষীদের বিদেহী আত্মার স্মরণে জাতিসংঘ সদর দপ্তরের উত্তর লনে অবস্থিত ‘শান্তিরক্ষী মেমোরিয়াল সাইট’-এ পুস্পস্তবক অর্পণ করেন।

জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ বর্তমানে সর্বাধিক শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ। জাতিসংঘের নয়টি শান্তিরক্ষা মিশনে বাংলাদেশের প্রায় সাত হাজার শান্তিরক্ষী কর্মরত রয়েছেন। এ পর্যন্ত শান্তিরক্ষা মিশনে কর্তব্যরত অবস্থায় বাংলাদেশের ১৫৯ জন শান্তিরক্ষী নিহত হয়েছেন।

প্রতিবছরই যথাযোগ্য মর্যাদায় জাতিসংঘ সদরদপ্তরে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা দিবস উদযাপন করা হয়। কোভিড-১৯ মহামারিজনিত কারণে এবারের অনুষ্ঠানটি ভার্চুয়ালভাবে আয়োজন করা হয়েছে।