করোনাভাইরাসের সংকটকালীন সময়ে কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে শুরু হচ্ছে জাতীয় সংসদের বাজেট অধিবেশন। জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে বুধবার (২ জুন) বিকেল ৫টায় শুরু হওয়া অধিবেশন করোনা পরিস্থিতির কারণে সংক্ষিপ্ত হবে।
বাজেট অধিবেশনে চলতি সংসদের সদস্য আবদুল মতিন খসরু ও আসলামুল হকের মৃত্যুতে শোক প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার পর ওইদিনের অধিবেশন মুলতবি করা হবে। পরের দিন বৃহস্পতিবার (৩ জুন) বিকেল ৩টায় বাজেট প্রস্তাব ও অর্থ বিল উত্থাপন করা হবে। একাধিক দফা বিরতি দিয়ে ১২ কার্যদিবসের মতো অধিবেশন চলতে পারে বলে সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে।
জানা গেছে, বাজেট প্রস্তাব উত্থাপনের পর দুই দিন বিরতি দিয়ে ৬ জুন থেকে বাজেট আলোচনা শুরু হবে। ওইদিন থেকে বেলা ১১টায় অধিবেশন শুরু হবে। সোমবার (৭ জুন) সম্পূরক বাজেট পাসের পর অধিবেশন আবারও মুলতবি করা হবে।
এরপর টানা ছয় দিন বিরতি দিয়ে আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর সাধারণ আলোচনা ১৪ জুন শুরু হবে। এ আলোচনা চলবে ১৫, ১৬, ১৭ ও ২৮ জুন। সাধারণ আলোচনা শেষে ২৯ জুন অর্থবিল এবং ৩০ জুন মূল বাজেট ও নির্দিষ্টকরণ বিল পাস হবে। পরদিন পহেলা জুলাই বাজেট অধিবেশন শেষ হবে।
নতুন বছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর মাত্র পাঁচ দিন আলোচনা হবে। আলোচনায় নির্ধারিত সংখ্যক সরকার ও বিরোধী দলের সদস্য অংশ নেবেন। পুরো বাজেট পাসের প্রক্রিয়া ব্যয় হবে ১০ দিন। সেক্ষেত্রে ২০ থেকে ২৫ ঘণ্টা বাজেট আলোচনা হতে পারে। প্রতিদিন বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত এ আলোচনা চলবে। অধিবেশনে বাজেট ছাড়াও কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিল পাসের সম্ভাবনা রয়েছে।
জানা গেছে, স্বাস্থ্য সুরক্ষায় যাবতীয় প্রস্তুতিসহ সার্বিক পরিকল্পনা ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। গতবারের মতো এবারও রোস্টার করে সংসদ সদস্যরা অধিবেশনে অংশ নেবেন। প্রতি কার্যদিবসে উপস্থিতি সংখ্যা ১০০ থেকে ১২০ জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা হবে।
এক্ষেত্রে একজন সংসদ সদস্য তিন থেকে চার কার্যদিবস অধিবেশনে যোগ দেবেন। যোগদানের জন্য তাদের করোনা নেগেটিভ সনদ থাকা বাধ্যতামূলক। একদিন করোনার টেস্টের নেগেটিভ ফলাফলের ভিত্তিতে পরপর দুদিন অধিবেশনে যোগ দেওয়া যাবে। ফলে সংসদে যোগদানের জন্য সংসদ সদস্যদের একাধিকবার নমুনা পরীক্ষার প্রয়োজন পড়বে।
এ অধিবেশনে গণমাধ্যমকর্মীদের প্রবেশও সীমিত করা হচ্ছে। সংসদ সচিবালয় সূত্রে জানা গেছে, সংসদে বাজেট পেশের দিনসহ দুই-তিন দিন সীমিত সংখ্যক গণমাধ্যমকর্মীদের সংসদে প্রবেশের সুযোগ দেওয়া হতে পারে। এক্ষেত্রে তাদেরও প্রয়োজন হবে করোনা নেগেটিভ সনদ। গণমাধ্যমকর্মীদের সংসদ ভবনে প্রবেশের সুযোগ দিলেও অধিবেশন চলাকালে তারা গ্যালারিতে বসতে পারবেন না।
অন্যান্যবার বাজেট পেশের দিনে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতসহ আন্তর্জাতিক সংস্থার বাংলাদেশ প্রতিনিধি এবং দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের অধিবেশনে আমন্ত্রণ জানানো হলেও এবার তা হচ্ছে না। অবশ্য করোনার কারণে গত বছরও বাজেট অধিবেশনে তাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।