দৃষ্টি ভিন্ন খাতে সরিয়ে নিতে পরীমণিকে সামনে আনা: ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মানুষের দৃষ্টি ভিন্ন খাতে সরিয়ে নিতে সরকার চিত্রনায়িকা পরীমণির ঘটনাটি সামনে নিয়ে এসেছে।
আজ বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘সংবাদপত্রের কালো দিবস’ উপলক্ষে এক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদ্যাপন কমিটি এই বৈঠকের আয়োজন করে।
৮ জুন রাতে ঢাকা বোট ক্লাবে পরীমণিকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা করা হয় বলে তিনি অভিযোগ করেছেন। এ ঘটনায় পরীমণি বাদী হয়ে গত সোমবার নাসির ইউ মাহমুদ, অমিসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে সাভার থানায় মামলা করেন।
এ প্রসঙ্গ তুলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন খুব লাফালাফি হচ্ছে। পরীমণি কে? আমরা কি বুঝি না? আবার সেই ডাইভারশন (দৃষ্টি ভিন্ন দিকে নেওয়া)। আবার সেই অন্যদিকে নিয়ে যাওয়া। যখন খালেদা জিয়ার স্বাস্থ্য, মুক্তি, দেশের গণতন্ত্র, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি নিয়ে কথা হচ্ছে, করোনা যখন বাড়ছে, তখন আবার এ ধরনের একটা নিয়ে হাজির করা হচ্ছে। মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা আওয়ামী লীগের পক্ষেই সম্ভব।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই ঘটনা কতটুকু সত্য বা মিথ্যা জানি না। এটা দেখে মনে হয়েছে সবকিছুই এ দেশে সম্ভব। মামলা করল একটা, কিন্তু আরেক অপরাধের দায় দিয়ে গ্রেপ্তার করে তাকে রিমান্ডে নেওয়া হলো। এটা আমি বুঝতে পারিনি। মামলা করল ধর্ষণ-হত্যাচেষ্টা কিন্তু রিমান্ডে নেওয়া হলো মাদকের জন্য। যেখান থেকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে সেই বাড়িটাও তার না। এগুলো বোধগম্য না। তাহলে কি ক্ষমতাসীনরা যা চাইবে তা-ই হবে? প্রশাসন কি এভাবে তুলে নিয়ে সম্মান, পরিবারের কাছে সম্মান সবকিছু ধূলিসাৎ করে দেবে?
‘বিএনপির সঙ্গে একসঙ্গে বাস করা যায় না’, ওবায়দুল কাদেরের এ বক্তব্যের জবাবে বিএনপির মহাসচিব বলেন, এ বক্তব্যের মাধ্যমে তাদের আসল চরিত্র বেরিয়ে গেল। তারা কোনো বিরোধী দল চায় না।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি কারও দয়ার দল না। কারও দয়ায় বিএনপি টেকে না। বিএনপি জনগণের সমর্থন নিয়ে টিকে আছে। বর্তমানে যে অবস্থা তৈরি হয়েছে, তার জন্য আওয়ামী লীগের একদিন বিচার হবে।
১৬ জুনকে বাংলাদেশের কলঙ্কময় দিন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, কয়েকটি পত্রিকা রেখে সব পত্রিকা বন্ধ করে দিয়ে সেদিন প্রথমবারের মতো গণতন্ত্রকে স্তব্ধ করে দেওয়া হয় এবং দ্বিতীয়বার এখন চলছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, সাংবাদিকদের বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা হচ্ছে, মেরে ফেলা হচ্ছে। দেশে যারা আছেন তারা লিখতে পারেন না। কারণ জীবন ও জীবিকার ভয় আছে সবার।
তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়া অসুস্থ এবং সুচিকিৎসা পাচ্ছে না। তিনি খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসা দাবি করেন।
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালামের সভাপতিত্বে ও দলের সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদের সঞ্চালনায় গোলটেবিলে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল হাই শিকদার, প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ইনকিলাব সম্পাদক রেজোয়ান সিদ্দিকী প্রমুখ।