জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী ফেরদৌসী রহমানের ৮০তম জন্মদিন আজ। ১৯৪১ সালের ২৮ জুন পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহারে জন্ম হয়েছিল এই তারকার। এই শুভদিনটি কাছের মানুষজন, শ্রোতা ও অনুরাগীদের শুভেচ্ছা আর ভালোবাসায় মধ্য দিয়ে কাটিয়ে দিতে চান তিনি। করোনার জন্য এর বাইরে জন্মদিনকে ঘিরে তেমন কোনো আয়োজন থাকছে না বলে জানিয়েছেন ফেরদৌসী রহমান।
প্রায় ছয় দশকের গানের ক্যারিয়ারে জনপ্রিয় এই গায়িকা ফোক, আধুনিক, উচ্চাঙ্গসংগীত, নজরুলগীতি, রবীন্দ্রসংগীত, প্লেব্যাক সব ধরনের গানেই কণ্ঠ দিয়েছেন।
ফেরদৌসী রহমানের পিতা পল্লীগীতি সম্রাট আব্বাস উদ্দিন। তার কাছেই গানের হাতেখড়ি এই তারকার। বাবা ছাড়াও ওস্তাদ মোহাম্মদ হোসেন খসরু, ইউসুফ খান কোরেইশী, কাদের জামেরী, গুল মোহাম্মদ খান প্রমূখ সঙ্গীতজ্ঞের কাছে তালিম নিয়েছেন তিনি।
খুব অল্প বয়স থেকে তার মঞ্চে গাওয়া শুরু হয়। মাত্র ৮ বছর বয়সে রেডিওতে ‘খেলাঘর’ নামের অনুষ্ঠানে অংশ নেন। তাছাড়া ১৯৬৪ সালের ২৫শে ডিসেম্বর তিনি বাংলাদেশ টেলিভিশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গান করেন। আর বিটিভির জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘এসো গান শিখি’ দিয়ে সবার কাছে ‘খালামনি’ হিসেবে পরিচিত হয়ে ওঠেন ফেরদৌসী রহমান।
১৯৬০ সালে ফেরদৌসী রহমান ইউনেস্কো ফেলোশীপ পেয়ে লন্ডনের ট্রিনিটি কলেজ অব মিউজিক থেকে ৬ মাসের সঙ্গীতের ওপর স্টাফ নোটেশন কোর্স সম্পন্ন করেন। ৩টি লং প্লেসহ প্রায় ৫০০টি ডিস্ক রেকর্ড এবং দেড় ডজনের বেশি গানের ক্যাসেট বের হয়েছে তার।
গানের জগতে সফল এই গায়িকা ১৯৬৬ সালের ২৬শে অক্টোবর মেক্যানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার রেজাউর রহমানের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাদের রুবাইয়াত ও রাজিন নামে দুই ছেলে আছে।
ফেরদৌসী রহমান নজরুল ইন্সটিটিউটের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ছিলেন। সঙ্গীত ভুবনে অবদান রাখার জন্য তিনি জাতীয় পর্যায়ে নানাভাবে সন্মানিত হয়েছেন। তার অর্জিত উল্লেখযোগ্য পুরস্কারের মধ্যে আছে লাহোর চলচ্চিত্র সাংবাদিক পুরস্কার (১৯৬৩ সাল), প্রেসিডেন্ট প্রাইড অব পারফরম্যান্স পুরস্কার (১৯৬৫ সাল), টেলিভিশন পুরস্কার (১৯৭৫), জাতীয় পুরস্কার শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক (১৯৭৭), বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি পুরস্কার (১৯৭৬), একুশে পদক (১৯৭৭ সাল)। এছাড়াও তিনি নাসিরউদ্দিন গোল্ড মেডেল পুরস্কার, মাহবুবুল্লাহ গোল্ড মেডেল পুরস্কার লাভ করেন।