আহত দুজন হলেন, কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের হিসাববিজ্ঞান বিভাগের স্নাতক তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মোহাম্মদ হৃদয় (২৩) ও পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ষষ্ঠ সেমিস্টারের ছাত্র সামিউল হক ওরফে সম্রাট (২২)। হৃদয়ের শরীরে শক্ত কিছু দিয়ে পেটানো হয়েছে। অন্য দিকে ছুরি দিয়ে সামিউলের মাথা, গাল, হাত ও পিঠ কেটে দেওয়া হয়েছে। মাথা ও গালে সেলাই দেওয়া হয়েছে। তাদের কুষ্টিয়া ২৫০ শয্যা করোনা ডেডিকেডেট হাসপাতালের অর্থোপেডিক ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) তাপস কুমার সরকার জানিয়েছেন, দুজনেরই আঘাত গুরুতর। তবে তারা শঙ্কামুক্ত। তাদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
হাসপাতাল ও জেলা ছাত্রলীগ সূত্র জানা গেছে, করোনাকালে ২৫০ শয্যা কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ ওরফে চ্যালেঞ্জের নেতৃত্বে ৬৫ জন কর্মী রোগীদের সেবায় ২৪ ঘণ্টা সহযোগিতা করে আসছেন। তাদের প্রত্যেকের শরীরে নির্ধারিত গেঞ্জি ও আইডি কার্ড থাকে। গত এক মাসে এই হাসপাতালে রোগীর ব্যাপক চাপ বাড়তে থাকে। বর্তমানে সেখানে ৩০০ করোনা পজিটিভ রোগী ভর্তি আছেন। যদি কোনো রোগীর ঔষুধ আনার প্রয়োজন হয়, তবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্বেচ্ছাসেবকেরা কিনে এনে দেন।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মোহাম্মদ হৃদয় জানিয়েছেন, গতকাল রাত সাড়ে ৯টার দিকে এক রোগীর প্রয়োজনীয় জরুরি ঔষুধ কেনার জন্য হাসপাতালের পুরাতন গেটের সামনে যান তিনি। সেখানে এক যুবক তাকে ওষুধের দোকানের পাশে ডেকে নিয়ে মারতে থাকেন। এ সময় আরও চার/পাঁচজন যুবক মারধরে যুক্ত হন। একই সময়ে সামিউল হাসপাতালের দিকে আসছিলেন। তাকে হাসপাতালের পাশে জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের সামনে মারধর করা হয়। মারধরের সময় সেখানে ১০ থেকে ১৫ জন তরুণ ও যুবক অংশ নেন।
কারা হামলা করেছে, এ ব্যাপারে জানতে চাইলে হৃদয় ও সামিউল কাউকে চিনতে পারেননি বলে জানান। তবে তাদের ধারণা, গত রোববার হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে ঢোকা নিয়ে এক রোগীর স্বজনের সাথে কিছু স্বেচ্ছাসেবকের তর্কাতর্কি হয়। তারা বাইরে বের হলে দেখে নেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছিলো।
এদিকে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ জানিয়েছেন, ঘটনাটি পুলিশ সুপারকে জানানো হয়েছে। মানুষকে মাসের পর মাস সেবা দিতে গিয়ে এই প্রথম বিনিময়ে আঘাত পেলাম। এ ঘটনায় যারা জড়িত, তাদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানাই।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাব্বিরুল আলম জানিয়েছেন, কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে। রাতে তাদের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে। তারা পলাতক। তবে শিগগিরই তাদের আটক করা হবে। থানায় মামলা দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।