তিনি বলেন,এই মর্মে পত্র-পত্রিকায় প্রতিবেদন আসছে।এভাবে ব্যক্তি প্রচারণায় জনগণের অর্থ অপচয়ের অধিকার কারও নেই।উপহারের এসব ঘর নির্মাণে কোটি কোটি টাকা হরিলুট চলছে। এ ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের শাস্তি দাবি করেছে বিএনপি।

এর আগে,গতকাল শনিবার বিকেলে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্তের বিষয়গুলোই রোববার সংবাদ সম্মেলনে তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

মির্জা ফখরুল বলেন,  ‘বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠান, ব্যাংকারদের কাছ থেকে চাঁদা, জনগণের অর্থ, সরকারি কোষাগারের অর্থ ব্যয় করে শুধুমাত্র ব্যক্তি প্রচারণার নামে যে নির্মাণ কাজ হচ্ছে তা কিছুদিন যেতে না যেতেই ভেঙে পড়ছে।কোটি কোটি টাকা এভাবে লোপাট হচ্ছে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘সম্প্রতি যুক্তরাজ্য পার্লামেন্টে বার্ষিক মানবাধিকার প্রতিবেদনে বাংলাদেশের এবং চলমান নিয়ন্ত্রিত রাজনৈতিক অবস্থা ও চরম অমানবিক আচরণসহ, খালেদা জিয়াকে বেআইনিভাবে আটক ও তার প্রতি অমানবিক আচরনের বিষয় প্রকাশ করা হয়েছে।

ইতোমধ্যে কয়েকটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা এবং জাতীয় মানবাধিকার সংগঠন বাংলাদেশের কতৃত্ববাদী সরকারের জনগণের মৌলিক অধিকার হরণ, সাংবাদিকদের ওপর নানাধরণের নির্যাতন, মিথ্যা মামলা, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুমের ঘটনা ক্রমশই বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মতামত প্রকাশ করেছে’।

বিএনপি মনে করে, যুক্তরাজ্যের মানবাধিকার বিষয়ক প্রতিবেদন এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনে এটাই প্রতীয়মান হয় যে, দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে সাজা দিয়ে তাকে আটক রাখা হয়েছে। এমনকি সুচিকিৎসার জন্য তাকে বিদেশে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না। এটা গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন।

মির্জা ফখরুল বলেন, সম্প্রতি ঢাকা জেলার সিভিল সার্জন ঢাকার সব হাসপাতালে সার্কুলার জারি করেছেন যে, কোনো চিকিৎসক করোনা সংক্রান্ত কোনো তথ্য কোনো সাংবাদিক, কোনো ব্যক্তি কিংবা সংস্থাকে অনুমতি ব্যতিরেকে প্রদান করতে পারবে না। অর্থাৎ তারা যা প্রকাশ করতে চান তা-ই গণমাধ্যম বা ব্যক্তি জানতে পারবেন। এ সিদ্ধান্ত মুক্ত তথ্য নীতির বিরোধী। এই নির্দেশ প্রমাণ করে সরকার প্রকৃত তথ্য গোপন করতে চায়।

সংবাদ সম্মেলন থেকে এই নির্দেশ প্রত্যাহার করার আহ্বান জানান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।তিনি বলেন, অবিলম্বে এই সব নির্দেশ এবং তথ্য গোপন করার অপচেষ্টা বন্ধ করে, জনগণের সামনে সত্য ও সঠিক চিত্র তুলে ধরলেই জনগণের সচেতনা বৃদ্ধিপাবে এবং সমস্যা সমাধান সহজ হবে।

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, সভায় গত ৮ জুলাই নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকার ‘হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজ’ শিল্প প্রতিষ্ঠানে অগ্নিকাণ্ডে ৫২ জন শিশু-কিশোর-মহিলা শ্রমিকের মৃত্যু ও প্রায় শতাধিক ব্যক্তি আহত হওয়ায় গভীর শোক প্রকাশ করা হয় এবং নিহত ব্যক্তিদের আত্মার মাগফেরাত কামনা ও আহতদের আশু রোগ মুক্তি কামনা করা হয়।

একই সঙ্গে এই দুর্ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত, দায়ী ব্যক্তিদের অবিলম্বে আইনের আওতায় আনা এবং নিহত ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের যথাযথ ক্ষতিপূরণের আহ্বান জানানো হয়।

বিএনপির মহাসচিব আরও বলেন, ‘করোনার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন’ চলমান স্থানীয় সরকার নির্বাচন অব্যাহত রাখার পক্ষে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এ মন্তব্যে  স্থায়ী কমিটির সভায় গভীর ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানানো হয়।

বিএনপি মনে করে এই নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকে আজ পর্যন্ত একটি নির্বাচনও অবাধ ও সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে পারেনি।