বুধবার বগুড়ার ঐতিহাসিক মহাস্থান পশুর হাটে বগুড়ার বিভিন্ন এলাকার কৃষক,গরু ব্যবসায়ী ও খামার মালিকদের সাথে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।
মহামারী করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাব কমাতে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলা জরুরী। শিবগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে কুলসুম শম্পার নিদের্শনায় হাটে আগত ব্যক্তিদের তাপমাত্রা পরীক্ষা ও হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
ক্রেতা ও বিক্রেতারা কিছুই মানছে না। অনেকেই মাস্ক ছাড়াই হাটে ঘোরা ফেরা করছে। হাটে ঢুকতে ও চালান পরিশোধের সময় ক্রেতাদের মাঝে কমপক্ষে এক মিটার দূরত্ব নিশ্চিত করার করার কথা থাকলেও কেউ মানছেনা।
এমনকি একটি পশু থেকে আরেকটিকে রাখতে অন্তত ৫ ফুট দূরে সহ ১৬ টি স্বাস্থ্য বিধি নিদের্শনা মেনে কোরবানীর পশু হাটে পশু ক্রয় বিক্রয় করার ব্যবস্থা করা হলেও ক্রেতা বিক্রেতারা মানছেনা।
মহাস্থান হাট কমিটির ইজারাদার রাগেবুল আহসান রিপু বলেন, হাটে ৪০ জন স্বেচ্ছাসেবী কাজ করছে ১৫ টি’র ও বেশি হাত ধোয়ার জায়গা করা হয়েছে এবং হাটে আগাত ব্যক্তিদের স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার জন্য ৪টি পয়েন্টে মাইকে জন সচেতনতা বৃদ্ধি করা হচ্ছে।
তারপরেও অনেক ক্রেতা,বিক্রেতারা স্বাস্থ্যবিধি মানছেন না। তবে গতবারের তুলনায় ক্রয় বিক্রয় এই বার অনেক বেশি। হাটে কোরবানীর পশুর স্বাস্থ্য পরিক্ষার জন্য ২জন ডাক্তার রাখা হয়েছে এবং সিসি ক্যমেরা দ্বারা হাট নিয়ন্ত্রন করা হচ্ছে। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং হাট কমিটির সদস্যদের সঙ্গে নিয়ে সার্বক্ষনিক পর্যাবেক্ষণ করা হচ্ছে।
বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ মুসলিম ধর্মালম্বী। আর মাত্র ৮ দিন পর মুসলিমদের খুশির দিন ঈদুল আযহা। ঈদ-উল আযহা উপলক্ষে মুসলিম ধর্মালম্বীরা তাদের স্বাধ্যমত কুরবানীর পশু গরু, ছাগল, ভেড়া, মহিষ মহান আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে কোরবানী করবেন। এ সব কোরবানীর পশু বিভিন্ন হাট বাজার থেকে কেনা হবে।
বগুড়া জেলার ১২টি উপজেলায় প্রায় ৩২ হাজার খামারে কোরবানি যোগ্য পশু প্রস্তত রয়েছে পৌনে ৪ লাখ। আর জেলায় চাহিদা রয়েছে সোয়া তিন লাখ।
খামারী বগুড়া সদর উপজেলার বাঘোপাড়া গ্রামের আশরাফুল বলেন, ৪০টি ষাড়ের মধ্যে বর্তমানে তার বিক্রির মতো ১০টি ষাড় রয়েছে। আর সবগুলি বিক্রয় হয়েছে।
গরু ব্যবসায়ী রতন, জলিল, আব্দুল আজিজ ও শ্রী ভরত জানান, করোনার কারণে ঢাকার বড় বড় কোরবানির হাট না বসানোর সম্ভাবনা থাকায় তারা গরু কম কিনেছে।
শিবগঞ্জ উপজেলার চন্ডিহারা বাজারের শামিম হোসেন জানান, তার খামারে একশটি গরুর মধ্যে ইতিমধ্যেই ৩০টি গরু অনলাইনের মাধ্যমে বিক্রি করেছেন। তিনি বলেন, যে মূল্যে গরুগুলি বিক্রি করা হয়েছে স্বাভাবিক পরিস্থিতি থাকলে তার চেয়ে অনেক বেশি দামে বিক্রি করা যেত।
এদিকে করোনার কারণে বগুড়ার হাটগুলোতে মৌসুমী গরু ব্যাপারীদের আনাগোনা তেমন দেখা যাচ্ছে না।
উত্তরাঞ্চলের অন্যতম মহাস্থান গরুর হাট, এই হাটের সঙ্গে ঘোড়াধাপ, সুলতানগঞ্জ হাট, শেরপুর হাট, সাবগ্রাম হাট, পেরী হাট, নামুজাসহ প্রায় শতাধিক স্থানে হাট বসে।এই সব হাটে স্থানীয়ভাবে যেমন কোরবানির পশু কেনাবেচা হয় ঠিক তেমনি অন্য জেলার জন্যও পশু কেনাবেচা হয়।